Breaking News

E20 পেট্রোল মাইলেজ সমস্যা

মোদী সরকারের E20 সিদ্ধান্তে কমছে বাইক-গাড়ির মাইলেজ? জেনে নিন সত্যিটা

মোদী সরকারের ইথানল মিশ্রিত পেট্রোল নীতি নিয়ে দেশে বাড়ছে বিতর্ক। মাইলেজ কমা ও ইঞ্জিন ক্ষতি নিয়ে শঙ্কায় গাড়িমালিকরা।

E20 পেট্রোল চালু, মাইলেজ ও ইঞ্জিন ক্ষতি নিয়ে আতঙ্কে গাড়িমালিকরা

E20 পেট্রোল মাইলেজ সমস্যা

শান্তনু কর্মকার: সারা দেশে পরিশোধিত পেট্রোলে ২০ শতাংশ ইথানল (ইথাইল অ্যালকোহল) মিশিয়েছে মোদী সরকার। উদ্দেশ্য বাতাসে কার্বনের পরিমান কমিয়ে পরিবেশ রক্ষা করা। তবে মোদী সরকারের এহেন সিদ্ধান্তে পরিবেশবিদরা খুশি হলেও আতঙ্কিত দেশের সাধারণ বাইক-গাড়িমালিকরা। বিভিন্ন রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এই e20 পেট্রোল ব্যবহারের ফলে কমছে গাড়ির মাইলেজ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইঞ্জিনও। কিন্তু সত্যিটা কী?

সত্যি বনাম মিথ্যা

এ কথা সত্যি যে, ভারতের রাস্তায় চলা প্রতিটি গাড়ির ইঞ্জিন প্রাথমিকভাবে E20 পেট্রলের কথা ভেবে তৈরি করা হয়নি। প্রচুর গাড়ির ইঞ্জিন ০ শতাংশ ইথানল তথা E0 কিংবা ১০ শতাংশ ইথানল তথা E10 পেট্রোলে চলে। সেই সমস্ত দু’চাকা অথবা চার চাকার গাড়িতে মাইলেজ কমার কথা শুরুতেই স্বীকার করে নিয়েছিল নীতি আয়োগ। ২০২১ সালেই নীতি আয়োগ একটি রিপোর্টে জানায়, E0 অথবা E10 পেট্রোলে চলার জন্য তৈরি গাড়িগুলিতে E20 পেট্রোল ব্যবহার করলে ৩-৬ শতাংশ কম মাইলেজ পেতে পারেন ব্যবহারকারীরা। তবে বাস্তবে ৬ শতাংশ নয়, গাড়িমালিকরা জানাচ্ছেন নতুন পেট্রোলের ব্যবহারের পর তাঁদের মাইলেজ কমে গিয়েছে ১০-২০ শতাংশ। বিজ্ঞান বলছে, ইথানল পেট্রোলের চেয়ে প্রায় তিন গুন কম শক্তি সরবরাহ করে। মূলত সেই কারনেই একই দুরত্ব অতিক্রম করতে বেশি জ্বালানি পোড়ে, কমে যায় মাইলেজ।

মাইলেজের পাশাপাশি ইঞ্জিনের স্বাস্থ্যও ভাবাচ্ছে গাড়িমালিকদের। ইথানল একটি হাইড্রোস্কোপিক তরল, অর্থাৎ জল আকর্ষণ করা, বাতাস থেকে জল শুষে নেওয়া এর রাসায়নিক ধর্ম। এই কারণেই বিগড়ে যেতে পারে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ। গাড়ির ধাতব জ্বালানি ট্যাঙ্ক, রবারের তৈরি হোস পাইপ, ক্লগ ইঞ্জেক্টর সহ নানা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের আগে তৈরি অধিকাংশ গাড়িতেই এই সমস্যাগুলি দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ওয়ারেন্টি জনিত সমস্যাতেও ভুগতে পারেন বাইক-গাড়িমালিকরা। একাধিক গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার ম্যানুয়ালেই উল্লেখ করা থাকে আদর্শ জ্বালানির কথা। অর্থাৎ, E0 অথবা E10 গাড়ির মালিকরা E20 পেট্রোল ব্যবহার করায় কিছু যন্ত্রাংশে ওয়ারেন্টির সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হতে পারেন। ভারতে এই মুহূর্তে প্রতিটি পেট্রোল বিক্রয়কারী সংস্থাই ২০ শতাংশ ইথানল মিশিয়েছে, এমতাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই ওয়ারেন্টি নিয়েও চিন্তা বাড়ার কথা গাড়ি মালিকদের।

ট্রাম্প চান টোকিও ও লন্ডনের রাস্তায় মার্কিন পিক-আপ গাড়ি, কিন্তু চাহিদা কোথায়?

বিশ্বের ৪৩টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন

অথচ চলতি বছরের মধ্যে এমনটা হওয়ার কথাই ছিল না। মোদী সরকারের পরিকল্পনা ছিল ২০৩০-র মধ্যে পেট্রোলে ২০ শতাংশ ইথানল মেশানো। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছিল দেশের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। তবে জুলাই মাসের শেষেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী জানান, ভারত ৫ বছর আগেই পেট্রোলে ২০ শতাংশ ইথানল মেশানোর লক্ষ্যপূরণ করে ফেলেছে। পরে এক্স(পূর্বতন ট্যুইটার)-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, এর ফলে পেট্রোল আমদানিতে ১.৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে দেশের। পাশাপাশি স্বাভাবিকের তুলনায় ৬৯৮ লক্ষ টন কার্বন ডাই অক্সাইড কম নির্গত হয়েছে যানবাহন থেকে।

বিরোধীরা অবশ্য এখানেও চক্রান্তের গন্ধ পেয়েছেন। পেট্রোলে ইথানল সংক্রান্ত বিতর্কের মাঝেই দেখা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির পুত্রের সংস্থা বিপুল লাভের মুখ দেখেছে এই ক’দিনে। নিখিল গড়কড়ির মালিকানাধীন ইথানল প্রস্তুতকারী সংস্থা সিয়ান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচারের শেয়ার দর মাত্র এক মাসের মধ্যেই বেড়েছে ৫২২.৫০ টাকা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই সংস্থাটি প্রথমে ভোজ্য তেল, ডিটারজেন্ট পাউডার ইত্যাদি প্রস্তুত করলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই ইথানল প্রস্তুতকরণ শুরু করে। গাড়িমালিকদের কথা না ভেবে তড়িঘড়ি পেট্রোলে ইথানলের পরিমান বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পেছনে স্বার্থের সংঘাতই খুঁজে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহলের একটি বড় অংশ।

আরও পড়ুন :

৫০ বছরে অর্ধেক কমেছে ভারতের জন্ম ও মৃত্যু হার, জনসংখ্যা কাঠামোয় বড় পরিবর্তন

গাজায় ২ হাজার ৭০০ পরিবার নিশ্চিহ্ন, ধ্বংসস্তূপে রূপ নিচ্ছে সমগ্র অঞ্চল

ad

আরও পড়ুন: