AirIndiaCrash PilotSuicide
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ১২ জুলাই ২০২৫ : ভারতের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নতুন মোড়—তদন্তে উঠে এসেছে ‘পাইলট সুইসাইড’ বা আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা ঘটানোর সম্ভাবনা। এই তত্ত্ব (AirIndiaCrash PilotSuicide) উত্থাপন করেছেন অভিজ্ঞ বিমানচালক ও বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন মোহন রঙ্গনাথন। NDTV-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, বিমানটিতে জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ হওয়া ছিল “স্পষ্টভাবে ইচ্ছাকৃত মানবিক কাজ, দুর্ঘটনাজনিত নয়”।
গত মাসে ২৬০ জন যাত্রী নিয়ে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমান। উড্ডয়নের মাত্র ৩২ সেকেন্ড পরেই ইঞ্জিনের দুইটি ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ (Fuel Control Switch) একসঙ্গে ‘RUN’ অবস্থা থেকে ‘CUTOFF’ হয়ে যায়।
এর ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, এবং বিমানটি দ্রুত উচ্চতা হারাতে শুরু করে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পাইলটরা পুনরায় সুইচ দুটি চালু করলেও ইঞ্জিন আর চালু হয়নি, কারণ তখন উচ্চতা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, যার ফলে অনেক যাত্রীর মৃত্যু ঘটে।
Cockpit Voice Recorder (CVR)-এ ধরা পড়ে দুই পাইলটের মধ্যে কথোপকথন:
✈️ “Why did you cut off?”
✈️ “I didn’t.”
এই সংলাপ থেকেই দুটি সুইচ ‘CUTOFF’ কে করল, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। কারও পক্ষ থেকে দায়িত্ব স্বীকার করা হয়নি। তদন্তকারীরা এখন যাচাই করছেন, বিষয়টি ইচ্ছাকৃত ছিল নাকি ভুলবশত।
ক্যাপ্টেন রঙ্গনাথন NDTV-তে বলেন:
“এই ধরনের সুইচ ম্যানুয়ালি টেনে আনা ছাড়া বন্ধ করা সম্ভব নয়। এটা স্বয়ংক্রিয় বা ভুল করে সম্ভব নয়। কেউ না কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে দুটি সুইচ ‘CUTOFF’ করেছে। তাই এটা হয় চরম ভুল (gross negligence), নয়তো সুইসাইডাল অ্যাক্ট।”
তিনি আরও বলেন, বিমানের এই অংশগুলো অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং প্রতিটি সুইচ চালানোর জন্য নির্দিষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। দুটি সুইচ একসঙ্গে বন্ধ হওয়া স্বাভাবিক নয়।
তদন্তে নয়া মোড়: এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বিমানে দুর্ঘটনার নেপথ্যে রহস্যজনক ‘জ্বালানি বন্ধ’
স্বপ্নভঙ্গ: লন্ডনে পরিবার নিয়ে নতুন জীবনের পথে পা রাখতেই মাঝ আকাশে নিভে গেল প্রতীক জোশীর পরিবার
‘সুইসাইড বাই পাইলট’—কেন ভাবা হচ্ছে?
বিশ্বজুড়ে বিমানের ইতিহাসে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে যেখানে পাইলট ইচ্ছাকৃতভাবে বিমান বিধ্বস্ত করেছেন:
২০১৫ সালে Germanwings ফ্লাইট 9525, যেখানে সহ-পাইলট আন্দ্রিয়াস লুবিটজ বিমানটি পাহাড়ে আছড়ে দেন, আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে।
২০১৩ সালে মোজাম্বিক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট TM470-তেও পাইলট ইচ্ছাকৃতভাবে বিমান বিধ্বস্ত করেন।
এই নজিরগুলোর ভিত্তিতেই ভারতের এয়ার ইন্ডিয়ার এই ঘটনায়ও ‘সুইসাইড অ্যাঙ্গেল’ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
Airline Pilots’ Association of India (ALPA) প্রথম তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাদের দাবি, পুরো ঘটনার দায় একপাক্ষিকভাবে পাইলটদের উপর চাপানোর চেষ্টা চলছে। ALPA জানিয়েছে:
“সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাইলটদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা, ওয়ার্কলোড, ক্লান্তি এবং ট্রেনিং পরিস্থিতিও যাচাই করা জরুরি।”
আরও কোন প্রশ্ন উঠে আসছে?
বিমানটিতে FAA-র নির্দেশিত ফুয়েল সুইচ লক-সিস্টেম চেক করা হয়েছিল কি না?
পাইলটদের পূর্ব আচরণ, মানসিক অবস্থা বা পারিবারিক চাপ বিষয়েও এখন তদন্ত হচ্ছে।
ইঞ্জিনের ভেতরে কোনও সফটওয়্যার বা মেকানিক্যাল ত্রুটি ছিল কি না?
ভারতের Aircraft Accident Investigation Bureau (AAIB) পুরো রিপোর্ট তৈরির কাজ চালাচ্ছে।
ফাইনাল রিপোর্টে পাওয়া যাবে—
পুরো ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (FDR) বিশ্লেষণ
পাইলটদের ব্যাকগ্রাউন্ড
মেইনটেনেন্স ও টেকনিক্যাল রিপোর্ট
ম্যানুয়াল ত্রুটি নাকি মানসিক অবসাদের প্রমাণ
আরও পড়ুন :
কানাডা তোমার খেলার মাঠ নয়: কপিল শর্মাকে হুমকি দিল ‘সিখস ফর জাস্টিস’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে গণছাঁটাই, ক্ষতিগ্রস্ত কূটনৈতিক ও মানবিক কার্যক্রম