AmirFromGaza ThankYouBeforeDeath
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ৪ আগস্ট, ২০২৫ : এ এক চিরকাল মনে রাখার মতো দৃশ্য। হাড্ডিসার গড়নের এক শিশু, তার নাম আমির। বয়স ৮ থেকে ৯ বছর হবে। গায়ে ছেঁড়া জামা, পায়ে জুতো নেই। কিন্তু মুখে এক টুকরো হাসি, কারণ বহু কাঙ্ক্ষিত ত্রাণ পৌঁছেছে দক্ষিণ গাজার তানকেন্দে। সেই ত্রাণ সংগ্রহ করতেই আমির (AmirFromGaza ThankYouBeforeDeath) হেঁটে এসেছে ১২ কিলোমিটার।
একসময় খাবার হাতে নিয়ে সে এগিয়ে যায় মার্কিন প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা অন্থনি আগুইলার-এর কাছে। শিশুটি আগুইলারের হাত চেপে ধরে, কপালে ঠেকিয়ে বলে,
“Thank you!”
সে মুহূর্তটি যেন মানবতার এক ক্ষণস্থায়ী আলো।
কিন্তু সেই আলো নিভে যায় মুহূর্তেই।
এরপরই শুরু হয় গুলিবর্ষণ
ত্রাণ বিতরণ শেষ হওয়ার আগেই শুরু হয় ইসরায়েলি বাহিনীর আচমকা হামলা। প্রথমে আসে গুলির শব্দ, তারপর মরিচের গুঁড়ো নিক্ষেপ, কাঁদানে গ্যাস, এবং স্টান গ্রেনেড। শিশু, বৃদ্ধ, নারী— কেউ রেহাই পায় না।
চোখের সামনে দেখা যায়— আমির খাবার হাতে দৌড়ে পালাতে চায়, কিন্তু ঠিক তখনই একটি গুলি এসে থামে তার শরীরে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। ত্রাণ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানানো শিশুটির জীবন শেষ হয়ে যায় কেবল এক মুহূর্তেই।
একটি ‘ধন্যবাদ’ বলার জন্য এই শাস্তি?
গোপনে গাজা ছেড়ে পালিয়ে তুরস্কে বিয়ে, হামাস নেতার বিধবা স্ত্রীকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ!
‘ত্রাণ সংগ্রহ এখন মৃত্যু ফাঁদ’
জাতিসংঘ সমর্থিত Integrated Food Security Phase Classification (IPC) বলেছে, গাজার পরিস্থিতি এখন আর শুধু সংকট নয়—এটা “বিপর্যয়”।
একটি আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে—
“ত্রাণ সংগ্রহ এখন একটি ‘স্কুইড গেম’-এর মতো: তুমি যদি দৌড়ে পৌঁছাও, খাবার পাবে; যদি একটু ধীর হও, গুলিতে মরবে।”
ত্রাণ এলেই মানুষের ভিড় জমে, কিন্তু সেই ভিড়েই লুকিয়ে থাকে মৃত্যু। খাদ্যের জন্য লড়াই করা মানুষদের ওপরই চালানো হয় বেপরোয়া গুলি।
জাতিসংঘের তরফে সতর্ক করা হয়েছে যে, গাজা এখন মানবিক বিপর্যয়ের এক জ্বলন্ত উদাহরণ, যেখানে শিশুরাও টার্গেট।
আমির কি ব্যতিক্রম? না। গাজায় এমন হাজার হাজার শিশু আছে যারা প্রতিদিন বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে। তাদের একমাত্র ভরসা ত্রাণ, আর সেই ত্রাণও এখন অস্ত্রের ছায়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে তাদের।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার বেশিরভাগই সংগঠিত হচ্ছে ত্রাণ সংগ্রহের সময় এবং কেন্দ্রে। এ যেন যুদ্ধ নয়, পরিকল্পিত নিধন।
অন্থনি আগুইলার, যিনি নিজে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অবসর নিয়েছেন, বলেন—
“আমি যুদ্ধ দেখেছি, কিন্তু শিশুর মুখে ধন্যবাদ শুনে তাকে গুলি হতে দেখিনি আগে কখনও। এই মুহূর্ত আমার জীবনের সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক।”
আরও পড়ুন :
ফুটবল তারকাদের চুল কাটেন যে তারকা নাপিত
প্রয়োজন পড়লে ইনজুরি নিয়েই ব্যাট করতে নামবেন ক্রিস ওকস