Breaking News

ChhangurBaba ReligiousConversion

ধর্মান্তর র‍্যাকেটের চক্রে কোটি টাকার সাম্রাজ্য! ‘চাঙুর বাবা’ কে, কীভাবে গড়লেন এই নেটওয়ার্ক?

এক সময়ের রত্ন ব্যবসায়ী জামালউদ্দিন ওরফে ‘চাঙুর বাবা’ এখন কোটি টাকার ধর্মান্তর সিন্ডিকেটের মূল হোতা। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বিপুল পরিমাণ অর্থ, বিশাল সম্পত্তি, সরকারি জমিতে বিলাসবহুল বাড়ি এবং সংখ্যালঘুদের ধর্মান্তরের জন্য নির্ধারিত ‘রেট লিস্ট’—এই সবের পেছনে রয়েছে বিস্ময়কর এক চক্রের জাল।

ChhangurBaba ReligiousConversion and Its Impact %%page%% %%sep%% %%sitename%%

ChhangurBaba ReligiousConversion

ক্লাউড টিভি ডেস্ক :   উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলার এক নিরীহ পল্লি গ্রাম থেকে উঠে আসা জামালউদ্দিন ওরফে চাঙুর বাবা এখন দেশজুড়ে বিতর্কের (ChhangurBaba ReligiousConversion) কেন্দ্রে। তাকে ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে একটি সুসংগঠিত ধর্মান্তর র‌্যাকেট, যার মূলধারায় রয়েছে বিদেশি অর্থ, জাল সম্পত্তি, এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ধর্মান্তর। এনডিটিভির তদন্তে উঠে এসেছে এই চক্রের বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য।

তদন্তকারী সংস্থা ATS (Anti-Terrorism Squad) এবং ED (Enforcement Directorate) অনুসারে, চাঙুর বাবার ৪০টিরও বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটিতে মধ্যপ্রাচ্য (বিশেষ করে দুবাই, কাতার ও কুয়েত) থেকে এসেছে ১০৬ কোটির বেশি টাকা। এই অর্থ তিনি বিভিন্ন সংস্থা, মাদ্রাসা, এনজিও এবং ব্যক্তিগত খরচে ব্যবহার করতেন বলে সন্দেহ।

Arakan Army: আরাকান আর্মি কারা? কেন এত ভয় বাংলাদেশের?

Adopted Daughter জন্মের পরিচয় খুঁজে দেখেন—ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টেই ছিলেন বাবা

এই অর্থের কোনো বৈধ উৎস নেই। ED ইতিমধ্যেই ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (FEMA) এবং মানি লন্ডারিং আইনে তদন্ত শুরু করেছে।

চাঙুর বাবার বলরামপুরের মাধপুরে অবস্থিত ৩ বিঘা জমির ‘আশ্রম’ আসলে একটি বিলাসবহুল প্রাসাদ। সেটি ছিল সরকারি জমিতে তৈরি অবৈধ নির্মাণ। প্রশাসনের তরফে মঙ্গলবার সেটিকে  বুলডোজার চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই বাড়িতে ছিল—

  • ৫০ জনের থাকার ব্যবস্থা

  • আধুনিক CCTV

  • আলাদা কনফারেন্স রুম

  • বৈদ্যুতিক বেড়াজাল

  • একটি ‘সিক্রেট চেম্বার’, যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও বিদেশি কারেন্সি

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এখানে ‘আধ্যাত্মিক শিবির’ ও ‘বিশেষ উপদেশমূলক ক্লাস’ করানো হত, যেখানে মূলত দরিদ্র ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের ধর্মান্তরে প্রলুব্ধ করা হতো।

তদন্তে উঠে এসেছে সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্য—চাঙুর বাবার কাছে ছিল এক ‘রেট লিস্ট’, যেখানে ধর্মান্তরের জন্য নির্দিষ্ট অর্থের পরিমাণ ধার্য ছিল:

শ্রেণি রেট (আনুমানিক)
ব্রাহ্মণ নারী বা উচ্চবর্ণ হিন্দু ₹১৫–১৬ লক্ষ
ওবিসি নারী ₹১০–১২ লক্ষ
অন্যান্য সম্প্রদায় ₹৮–১০ লক্ষ

এছাড়া, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে বাড়তি ‘সহায়তা’ হিসেবে দেওয়া হতো নগদ অর্থ বা ঘর-বাড়ি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। অনেক সময় ধর্মান্তরের জন্য প্রলোভন দেওয়া হত বিয়ে বা চাকরির অফার দিয়ে

চাঙুর বাবা ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী নীতু ওরফে নাসরিন–কে ATS গত ৫ জুলাই গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে—

  • ধর্মান্তর আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ

  • অবৈধ সম্পত্তি গড়ার অভিযোগ

  • বিদেশি অর্থ লেনদেনের অভিযোগ

তাদের লখনউয়ের গোমতীনগর থানায় কেস রুজু হয়েছে, এবং লখনউ জেলে পাঠানো হয়েছে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে।

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়ে দিয়েছেন, এই চক্রের মূল পর্যন্ত পৌঁছানো হবে। সমস্ত জড়িত ব্যক্তির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে কড়া শাস্তির সুপারিশ করা হবে।

স্থানীয় রাজনীতি, পঞ্চায়েত ও কিছু মাদ্রাসা-ভিত্তিক সংস্থার সঙ্গে চাঙুর বাবার যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি একসময় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। ফলে তার রাজনৈতিক প্রভাব ও পৃষ্ঠপোষকতা ছিল বলেই এই সিন্ডিকেট এত দীর্ঘদিন নির্বিঘ্নে চলেছে বলে অনুমান।

চাঙুর বাবার র‌্যাকেট কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি প্রমাণ করে, ধর্ম, অর্থ ও রাজনীতির মিলিত অপব্যবহার কতটা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। প্রশাসন এখন তার সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক খুঁজে বার করতে তৎপর। তদন্তে আরও বড় নাম সামনে আসার আশঙ্কা রয়েছে।

আরও পড়ুন :

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এন চন্দ্রশেখরনের বৈঠক: বাংলায় টাটার বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত

ইন্দোরে ভারতের প্রথম ক্রিকেট জাদুঘরের উদ্বোধন: ব্র্যাডম্যানের ব্যাট থেকে সিকে নাইডুর স্মৃতিচিহ্ন

ad

আরও পড়ুন: