পশ্চিমবঙ্গে ইডি অভিযান বালি পাচার
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : অবৈধ বালি পাচারের বিরুদ্ধে জোরদার পদক্ষেপে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। সোমবার ভোর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় চলছে ইডির অভিযান। জানা গেছে, অন্তত ২২টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে ঝাড়গ্রাম, বেহালা, বিধাননগর, কালিয়ানি, রিজেন্ট পার্ক ও জাম্বোনি।
অভিযানের অন্যতম বড় কেন্দ্রবিন্দু ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর এলাকা। সেখানে অভিযানে নেমেছে ইডি-র একটি বিশেষ দল। প্রাক্তন গ্রাম পুলিশ ও বর্তমানে পরিচিত বালি ব্যবসায়ী শেখ জহিরুল আলি–এর বাড়ি, অফিস এবং গাড়িতে একযোগে চলছে তল্লাশি। সূত্র অনুযায়ী, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এবং এর মাধ্যমে বিপুল সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন।
একইসঙ্গে অভিযান চলছে কলকাতার বেহালার জেমস লং সরণিতে অবস্থিত “G.D. Mining” অফিসে। ইডি’র ধারণা, সংস্থাটি বালি পাচার চক্রের অন্যতম বড় অংশীদার। বালি পাচারের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ বিভিন্ন ব্যবসায় এবং ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে সন্দেহ।
থাইল্যান্ডে গাঁজা কিনতে লাগবে প্রেসক্রিপশন: বৈধতার পর তিন বছরেই কঠোর নিয়ন্ত্রণে সরকার
মুম্বাই বিমানবন্দরে বিষধর সাপসহ পাচারকারী আটক: থাইল্যান্ড থেকে চোরাচালান চক্রের চাঞ্চল্যকর উদ্ঘাটন
শুধু ঝাড়গ্রাম ও বেহালা নয়, রিজেন্ট পার্ক, বিধাননগর, কালিয়ানি, বেড়োয়ারিয়া, জাম্বোনিসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে ইডি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে চলছে পুরো প্রক্রিয়া, যাতে কোনও অঘটন না ঘটে। একসঙ্গে এতগুলি স্থানে অভিযান চালানো এই প্রথম, যা ইডি-র কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইডি-র কাছে প্রাথমিক তথ্য রয়েছে যে, অবৈধ বালির মাধ্যমে কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এই অর্থ পরে বিভিন্ন বাণিজ্যিক চ্যানেল ও ইনস্যুরেন্স কোম্পানির মাধ্যমে পাচার করা হয়। অর্থাৎ শুধুমাত্র বালি ব্যবসাই নয়, এর সঙ্গে জড়িত মানি লন্ডারিং চক্রকেও ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে ইডি।
অভিযানকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে চাপানউতর শুরু হয়েছে। শাসক দলের একাংশের দাবি, এই অভিযান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে বিরোধীরা বলছে, ইডির হাতে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, তাই অভিযানের ফলাফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় অবৈধ বালি উত্তোলন দীর্ঘদিন ধরেই বড় সমস্যা। এর ফলে রাজ্য সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তদন্তকারীদের মতে, অবৈধ বালিপাচারের সঙ্গে বহু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতার যোগসূত্র রয়েছে। ইডি-র এই অভিযান তাই বহুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে।
অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর এলাকায় বড় সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন, তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ইডি-র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিক অভিযান শেষে প্রয়োজন হলে আরও জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্রেফতারি হতে পারে। আগামী কয়েক দিনে একাধিক ব্যবসায়ীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও লেনদেনের খোঁজখবর নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে পুরো নেটওয়ার্ক ধ্বংস করাই ইডি-র লক্ষ্য।
আরও পড়ুন :
২৮ সেপ্টেম্বর বিসিসিআইয়ের নির্বাচন, যেসব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে
ক্রিকইনফোর সর্বকালের সেরা এশিয়া কাপ একাদশে ভারত থেকে আছেন ৪ ক্রিকেটার