OperationMahadev SuleimanShah
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ২৮ জুলাই ২০২৫ : ১৪ দিন ধরে পাহাড়ের অন্ধকারে চলে টানা নজরদারি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, শ্বাসরুদ্ধকর চূড়ান্ত অভিযান। শেষপর্যন্ত সোমবার, কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার মহাদেব পিকে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় তিন জঙ্গির। সন্দেহ, তাদের মধ্যেই রয়েছে পহেলগাম হামলার মাস্টারমাইন্ড সুলেমান শাহ (OperationMahadev SuleimanShah)।
এই বিশেষ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন মহাদেব’। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল—২২ জুলাইয়ের পহেলগাম হামলায় জড়িত পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের খুঁজে বের করে নিকেশ করা।
BBC-কে সতর্ক করল ভারত সরকার, নিষিদ্ধ করা হল ১৬টি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল
২২ জুলাই জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ গুলি চালায় তিনজন অস্ত্রধারী জঙ্গি। তাতে বেশ কয়েকজন পর্যটক আহত হন এবং এক পুলিশকর্মী শহিদ হন। এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবা। মূল পরিকল্পক ছিলেন প্রাক্তন পাকিস্তানি সেনা সদস্য হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান শাহ।
সূত্রের খবর, পহেলগাম হামলার ঠিক পরদিন থেকেই জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে NIA, RAW এবং সেনাবাহিনীর যৌথ টিম একটি নির্দিষ্ট অভিযানের পরিকল্পনা শুরু করে। গোয়েন্দা সূত্রে তারা জানতে পারে, জঙ্গিরা পলায়নের পর মহাদেব চূড়া অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে। কঠিন টপোগ্রাফি ও বনভূমির কারণে তাদের খোঁজ পাওয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
অভিযান কিভাবে চালানো হয়?
১. নাইট ভিশন ড্রোন ও স্যাটেলাইট ইমেজারি ব্যবহার করে পাহাড়ের গা-ছমছমে অঞ্চলে গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
১৪ দিন ধরে নীরব নজরদারি চলে, কোনওরকম সংঘর্ষে না গিয়ে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা হয়।
অবশেষে ২৮ জুলাই সকালে, সেনার স্পেশাল ফোর্স ও কাশ্মীর পুলিশের একটি যৌথ দল আক্রমণ শুরু করে।
আধা ঘণ্টার গুলির লড়াইয়ের পর তিন জঙ্গি নিহত হয়। এদের মধ্যে এক জনের গায়ে থাকা ‘স্যাটেলাইট রেডিও সেট’ এবং GPS-চালিত T82 ultra-set কমিউনিকেশন ডিভাইস থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
সুলেমান শাহ কে?
তিনি ছিলেন পাকিস্তানের SSG কমান্ডো ইউনিটের প্রাক্তন সদস্য।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে।
একাধিক ছোট-বড় হামলায় নেতৃত্ব দেয়, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল পহেলগাম পর্যটন হামলা।
তাঁর মাথার দাম ছিল ₹২০ লক্ষ, যা J&K পুলিশ আগেই ঘোষণা করেছিল।
নিহতদের মধ্যে তাঁর উপস্থিতির সম্ভাবনা প্রবল হলেও, চূড়ান্ত নিশ্চিত হতে DNA ও ফরেনসিক পরীক্ষার ফল অপেক্ষায় আছে প্রশাসন।
ফলাফল ও প্রভাব
এই অভিযানে কোনও ভারতীয় সেনা সদস্য হতাহত হননি।
জঙ্গিদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র, স্যাটেলাইট ফোন, আইইডি ও ফেক ভারতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গোয়েন্দারা মনে করছেন, লস্কর-ই-তইবার কাশ্মীর উপত্যকায় স্থাপন করা নতুন টিমের প্রধান ছিল সুলেমান শাহ। তাঁর মৃত্যু কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমনে একটি বড় সাফল্য।
আরও পড়ুন :
হায়দরাবাদে ভয়াবহ সারোগেসি কেলেঙ্কারি: বাচ্চা নেওয়ার পর ডিএনএ পরীক্ষায় ধরা পড়ল জেনেটিক সম্পর্ক নেই!