PakistanEducationCrisis
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: পাকিস্তানে শিক্ষা খাতের হালচিত্র ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দেশটির ৫ থেকে ১৫ বছর বয়সি প্রায় ২ কোটি ৩৭ লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। একে অভিহিত করা হচ্ছে পাকিস্তানের শিক্ষা খাতের ‘গভীর সংকট’ (PakistanEducationCrisis) হিসেবে।
এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পায় পাকিস্তান শিক্ষা সংস্থা (PEA)-র উদ্যোগে পাকিস্তানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (JICA)-র সহযোগিতায় আয়োজিত একটি কর্মশালায়।
স্থান: আল্লামা ইকবাল ওপেন ইউনিভার্সিটি, ইসলামাবাদ।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিপর্যয়
প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্কুলবিমুখ শিশুর সংখ্যা শুধু সংখ্যার দিক থেকেই ভয়াবহ নয়, এর সামাজিক প্রভাবও মারাত্মক।
বিগত কয়েক বছরে শিশু-কিশোরদের শিক্ষা থেকে ছিটকে পড়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
এই শিক্ষাবঞ্চনার প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে:
করোনা মহামারী,
দীর্ঘস্থায়ী ভয়াবহ বন্যা,
অর্থনৈতিক মন্দা ও দারিদ্র্য,
শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগের অভাব,
অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং অনুপযুক্ত শিক্ষানীতি।
এনএফই ও এএলপি কার্যক্রমের গুরুত্ব
বর্তমানে সরকারের পাশাপাশি কিছু বেসরকারি এনজিও এবং সংস্থা অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা (Non-Formal Education – NFE) ও ত্বরিত শিক্ষা কার্যক্রম (Accelerated Learning Program – ALP) পরিচালনার মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া শিশুদের শিক্ষার আলোয় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
এই ত্বরিত শিক্ষা কার্যক্রমগুলিতে শুধু একাডেমিক বিষয়ই নয়, বৃত্তিমূলক শিক্ষাও অন্তর্ভুক্ত থাকায় শিশু-কিশোরদের জীবিকানির্ভর দক্ষতা অর্জনের সুযোগও তৈরি হচ্ছে। তবে, পর্যাপ্ত বাজেট ও নীতিগত সমর্থনের অভাবে এই প্রকল্পগুলির পরিসর এখনও সীমিত।
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ারের হাতছানি—বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত
ইজরায়েলি আগ্রাসনে গাজার শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে: স্কুলছুট প্রায় ৮ লাখ শিক্ষার্থী
প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে,
“সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ, গবেষণা ও পরিকল্পনার ভিত্তিতে শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো এখন সময়ের দাবি।”
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ
এর আগেই চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জানিয়েছেন,
“দেশের ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সি অন্তত ২ কোটি ২৮ লাখ শিশু এখনও স্কুলে যায় না।”
নতুন এই প্রতিবেদনে সেই সংখ্যাই আরও বেড়ে ২ কোটি ৩৭ লাখে পৌঁছেছে, যা দেশটির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সম্ভাবনা এবং উন্নয়নকে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে।
ভবিষ্যতের শঙ্কা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিক্ষা খাতে অব্যাহত এই অবনতি পাকিস্তানের সামাজিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। এই পরিস্থিতি রোধে জরুরি ভিত্তিতে:
সরকারি বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো,
প্রতিটি প্রদেশে স্থানীয় বাস্তবতা অনুযায়ী শিক্ষা নীতি তৈরি,
জরুরি ভিত্তিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পুনর্গঠন—এগুলো এখন অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন :
২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হবে ভারত: পিউ রিসার্চের রিপোর্টে চাঞ্চল্য
গাজায় সাড়ে ৬ লাখ শিশু দুর্ভিক্ষের মুখে, আন্তর্জাতিক মহলের ‘লজ্জাজনক নীরবতা’ নিয়ে ক্ষোভ