Hunt for the Rajiv Gandhi Assassins
ক্লাউড টিভি । FILM REVIEW: SonyLIV-এর সাম্প্রতিকতম ডকু-সিরিজ “Hunt for the Rajiv Gandhi Assassins” নিয়ে শুরুতেই প্রত্যাশার পারদ ছিল অনেক উঁচু। আজ এই webseries টি review করবো ।১৯৯১ সালের ২১ মে, শ্রীপেরুমবুদুরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী নিহত হন। সেই ঘটনার তদন্তভিত্তিক পুনর্গঠনই এই সিরিজের মূল বিষয়। কিন্তু তথ্য, আবেগ ও প্রেক্ষাপটের ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে নির্মাতারা পিছলে পড়েছেন। যথযত homework এর অভাব চোখে পরে গোটা সিরিজ জুড়েই।
নাগেশ কুকুনুর মূলত স্বাধীন ঘরানার চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলি যেমন Hyderabad Blues, Iqbal, Dor, Dhanak—সবগুলোই বাস্তবধর্মী গল্প ও আবেগঘন উপস্থাপনার জন্য প্রশংসিত।তাঁর পরিচালনার বৈশিষ্ট্য হলঃসংবেদনশীল বিষয় নিয়ে নিরপেক্ষ অথচ মানবিক চিত্রণ,চরিত্রদের মনস্তত্ত্ব ও নৈতিক দ্বন্দ্বকে প্রাধান্য দেওা।বাস্তব-ভিত্তিক সেটিংস ও আঞ্চলিক স্পর্শ বজায় রাখা। আর “Hunt for the Rajiv Gandhi Assassins”-এ তাঁর এই চেনা কৌশল অনেকাংশেই অনুপস্থিত। সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে সিরিজটি অনেকটাই একমুখী ও আবেগহীন, যা কুকুনুরের আগের কাজগুলোর তুলনায় ব্যতিক্রম।এবার বিস্তারিত ভাবে বলি ঠিক কেমন লাগল এই সিরিজ
প্রথমেই বলি সিরিজ টির বড় সীমাবদ্ধতা হল—এটি SIT বা CBI তদন্তকারীদের দৃষ্টিভঙ্গিকেই একমাত্র ফ্রেম হিসেবে ধরে রেখেছে। এতে যেমন তদন্তের ধাপগুলো সুসংগঠিতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, তেমনই অনুপস্থিত ছিল অপর পক্ষের—বিশেষত এলটিটিই (LTTE) কমান্ডারদের দৃষ্টিভঙ্গি। তাঁদের আদর্শ, মানসিক অবস্থা, চরমপন্থী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনের কারণ বা আবেগ—সবই চিত্রনাট্যে অনুপস্থিত আর এটি দর্শকদের মনে সংযোগ তৈরির সুযোগ হারায়।বড় এক পেশে প্রেজেন্টেশান বলে আমার মনে হয়েছে। যেটা কুকুনুরের মত পরিচালকের কাছ থেকে আশা করা যায়না।
দ্বিতীয়ত, সিরিজটির অন্যতম দুর্বল দিক হলো—বহু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঘটনার প্রামাণ্যতা ও বাস্তবতা রক্ষা করা হয়নি। বিশেষ করে কর্ণাটকে ঘটে যাওয়া অভিযানগুলোতে এই ত্রুটি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে।কর্ণাটকের মতো সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় রাজ্যের ক্ষেত্রে ভাষা ও উচ্চারণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু স্থানীয় উপভাষার কোনও ছোঁয়া নেই এখানে; এমনকি পুলিশের কথাবার্তাও খুব কৃত্রিম মনে হয়।
কর্ণাটক পুলিশের পোশাক ও ব্যবহারও যথাযথ হয়নি। এতে করে দৃশ্যগুলি বাস্তব নয় বরং মঞ্চস্থ নাটকের মতো লাগে। মোটামুটি দেখেই বোঝা যাবে যে শুটিং লোকেশন বেঙ্গালুরু নয়। পরিবেশ, স্থানীয় মুখাবয়ব ও ভিড়ের ধরন দেখে স্পষ্ট যে এটি অন্যত্র শুট করা হয়েছে। ফলে দর্শক হিসেবে এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়।
এবার আসি সবচেয়ে সমালোচিত অংশ মানে climax এর শুটআউট সিকোয়েন্স। এলটিটিই কমান্ডাররা যেভাবে ঘরের ভিতরে চুপচাপ লুকিয়ে ছিলেন বা জানালা দিয়ে উঁকি দিচ্ছিলেন—তা একেবারেই বিসশ্বাস যোগ্য বা নাটকীয় মনে হয়নি।
শহরের কোলাহলে সম্পর্কের গান—‘মেট্রো ইন দিনো’ তে বসু-ম্যাজিক!
বাস্তব বর্ণনায় যেমন জানা যায়, শিবরসন নিজের হাতে অন্যদের গুলি করেছিলেন এবং তারপর নিজে আত্মহত্যা করেন। অথচ সিরিজে এই অংশকেও অনেকটা সাধারণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তেমন কোনও মানসিক টানাপোড়েন বা উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারেনি। ইচ্ছে করেই climax বললাম না। রিভিউ র নামে স্পয়লার দিতে ছাইনা।
এই সিরিজের সবই খারাপ এমন নয়। সিরিজের চিত্রগ্রহণ, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ও কিছু সাক্ষাৎকার খুব সুন্ভাদর ভাবে নির্মিত। তবুও আবেগ এবং প্রেক্ষাপটের অভাব এতটাই প্রকট যে পুরো কাজটাই একরকম নির্লিপ্ত আর তথ্যখণ্ডে ভরপুর মনে হয়।
যাঁরা আগে থেকেই রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানেন, যেমন পুরনো পুলিশ রিপোর্ট, সাক্ষাৎকার বা ডকুমেন্টারি দেখেছেন—তাঁদের কাছে এই সিরিজ অনেকটাই ভোঁতা লাগবে। কারণ এখানে না আছে নতুন কোন তথ্য, না আছে আবেগের গভীরতা। যারা প্রথমবার দেখছেন, তাঁদের জন্য এটি নির্ধারিত তথ্য দেয়, কিন্তু ইতিহাসের সঙ্গে আবেগের যে সংযোগ থাকা উচিত, তা ভীষণ ভাবে অনুপস্থিত। সব শেষে বলতেই হয় যে “Hunt for the Rajiv Gandhi Assassins” একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়ের তদন্তভিত্তিক পুনরায় বর্ণনা। তবে এটি যে ‘সম্পূর্ণ সত্যের’ ছবি—তা বলা যায় না। আবেগ, প্রেক্ষাপট, বাস্তবতা আর ভিন্নমত—সবই যেন চাপা পড়ে গেছে একমুখী দৃষ্টিভঙ্গির নীচে।
আরও পড়ুনঃ
নোবেল পেয়েছিলেন যেসব মার্কিন প্রেসিডেন্ট, এবার ট্রাম্প?
CloudTVExclusive : IRCTC-র হালাল বাড়বাড়ন্তে কোপ: RTI-এর শুনানিতে ঐতিহাসিক নির্দেশ কমিশনারের