ShefaliJariwala BabaRamdev
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: বলিউডে ‘কাঁটা লাগা’ গার্ল নামে খ্যাত শেফালী জরিওয়ালার আকস্মিক মৃত্যুতে যখন পরিবার, অনুরাগী ও সহকর্মীরা শোকস্তব্ধ, তখনই বিতর্কে জড়ালেন যোগগুরু বাবা রামদেব। তাঁর এক মন্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাবা রামদেব বলেন,
“Hardware was fine, software was faulty.”
অর্থাৎ শেফালীর শারীরিক দিক (hardware) ঠিক থাকলেও মানসিক বা অভ্যন্তরীণ দিক (software) ছিল সমস্যাযুক্ত, যার ফলে এই আকস্মিক মৃত্যু ঘটেছে বলে তিনি মত দেন।
রামদেবের মতে, মানুষ যেভাবে শরীর নিয়ে যত্ন নেয়, মানসিক স্বাস্থ্য ও অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য সেভাবে বজায় রাখতে পারে না। তার দাবি,
“আজকাল মানুষ শরীরচর্চা করে, কিন্তু স্ট্রেস, উদ্বেগ, উদ্বেল মানসিকতা এবং অস্বাভাবিক জীবনধারা থেকে যায়। এর ফলে অকাল মৃত্যু হচ্ছে।”
তিনি জানান, কেবল বাহ্যিক ফিটনেস নয়, অন্তরের শান্তি, প্রাণশক্তি ও সদ্বিচ্ছা থাকলেই একজন মানুষ সুস্থভাবে দীর্ঘদিন বাঁচতে পারেন।
তাঁর এই মন্তব্য সামনে আসতেই সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে।
অনেকেই বলছেন, “একজন মৃত মানুষকে ঘিরে এভাবে ব্যঙ্গাত্মকভাবে মন্তব্য করা অত্যন্ত অমানবিক।” কেউ কেউ লিখেছেন—
“Let her soul rest in peace… Stop this bullshit.”
“She is gone, please don’t dissect her character like this.”
অনেকেই অভিযোগ করছেন, একজন সদ্য প্রয়াত মানুষের সম্মান রক্ষার বদলে রামদেব যেন সেটিকে আধ্যাত্মিক বক্তৃতার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করলেন।
রামদেবের “hardware/software” তুলনাটি অনেকের কাছেই অপ্রাসঙ্গিক ও অশালীন লেগেছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি আসলে প্রযুক্তি বা যোগবিদ্যার ভাষায় চিন্তা করা হলেও বাস্তবের মৃত্যু-বেদনার সঙ্গে তার কোনো তুলনা চলে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন মন্তব্যগুলি জনমানসে নেতিবাচক বার্তা দেয়, বিশেষ করে যাঁরা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে লড়াই করছেন বা আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছেন।
শেফালীর মৃত্যু হয়েছে মুম্বইয়ের নিজের বাড়িতে। উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু অ্যান্টি-এজিং মেডিসিন ও ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট। প্রাথমিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে, তবে পোস্টমর্টেম রিপোর্টের আগে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, এই মুহূর্তে মৃত্যুকে ‘অপ্রাকৃতিক’ বলে ধরা হচ্ছে এবং তদন্ত চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত আত্মহত্যার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
Adopted Daughter জন্মের পরিচয় খুঁজে দেখেন—ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টেই ছিলেন বাবা
শেফালী জরিওয়ালা ২০০২ সালে ‘কাঁটা লাগা’ মিউজিক ভিডিও দিয়ে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। এরপর বলিউডে কাজ, বিভিন্ন রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ এবং শেষ পর্যন্ত অভিনয় ছেড়ে সামাজিক সচেতনতামূলক কাজের দিকেই মনোযোগ দেন।
তিনি দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে ভিজিটিং থেরাপিস্ট, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের মুখ হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
বাবা রামদেব যেভাবে শেফালীর মৃত্যু ব্যাখ্যা করেছেন, তাতে যদি মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বোঝাতে চান—তা হলে আরও সংবেদনশীল ও সম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করাই শ্রেয় ছিল।
অন্যথায় এমন মন্তব্য শুধু মৃত ব্যক্তিকে অসম্মান করে না, সমাজের মানসিকভাবে ভেঙে পড়া মানুষদের জন্যও ভুল বার্তা দেয়।
আরও পড়ুন :
ট্রাম্প সরকার নতুন করে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য F-1 ছাত্র ভিসার আবেদন গ্রহণ শুরু করল
বিয়ের ১০ দিনের মধ্যে অকাল প্রয়াণে স্তব্ধ লিভারপুল ও পর্তুগাল ফুটবল মহল