SholayReturns
ক্লাউড টিভি | বিশেষ প্রতিবেদন : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মুক্তি পেয়েছিল ‘শোলে’। প্রথমদিকে খুব একটা সাফল্য পায়নি রমেশ সিপ্পি পরিচালিত এই ছবি (SholayReturns)। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি হয়ে ওঠে ভারতীয় সিনেমার কালজয়ী মহাকাব্য। “কিতনে আদমি থে?”, “বসন্তি, ইন কুকুরো কে সামনে মাত নাচনা”—এমন সংলাপ আজও ঘোরাফেরা করে দর্শকের মুখে মুখে।
বছর পেরিয়ে গেছে অনেক। প্রযুক্তি বদলেছে, সিনেমা হল বদলেছে, কিন্তু ‘শোলে’র আবেদন অটুট থেকেছে। আর এবার সেই আবেদনকে আরও উজ্জ্বল করে তুলতেই রিস্টোর করে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এই ছবি (SholayReturns) —তার আসল রূপে, আসল শেষ দৃশ্য নিয়ে।
২০১৯ সালে শুরু হয় ‘শোলে’ রিস্টোরেশন প্রজেক্ট। ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ও সিপ্পি ফিল্মস-এর উদ্যোগে দীর্ঘ ৪ বছর ধরে painstakingভাবে ডিজিটালি রিস্টোর করা হয় এই কালজয়ী সিনেমাকে। পুরনো রিল সংগৃহীত হয় লন্ডন থেকে। তারপর সেই রিলকে 4K রেজোলিউশনে ডিজিটালি সংরক্ষণ ও পুনর্গঠন করা হয়। প্রতিটি ফ্রেম, শব্দ, দৃশ্য যত্ন সহকারে পরিশীলিত করা হয়েছে—যেন ২০২৫ সালের দর্শক ১৯৭৫-এর ঐতিহাসিক অনুভূতি টের পান আরও নিবিড়ভাবে।
রিস্টোর করা এই নতুন সংস্করণে থাকছে ছবির মূল সমাপ্তি (Original Ending), যা সেন্সর বোর্ডের কারণে মূল মুক্তির সময় কেটে দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়াও ছবিতে রাখা হয়েছে কিছু অতিরিক্ত বা ডিলিটেড দৃশ্য যেমনঃ
ঠাকুরের প্রতিশোধের সম্পূর্ণ দৃশ্য
মসজিদ-মন্দিরের শান্তির বার্তা
ছোট ইমামের আবেগঘন দৃশ্য
এই দৃশ্যগুলো আগে কখনও দেখা যায়নি। ফলে একদিকে যেমন পুরনো দর্শকদের জন্য এটি নতুন অভিজ্ঞতা, তেমনি নতুন প্রজন্মের জন্য এটি সময়ের পর্দা তুলে দেওয়া ইতিহাস।
কারাবাসেও ‘প্রেমের অধিকার’: ইতালির জেলে তৈরি হল ‘মিলন কক্ষ’, ইতিহাসে প্রথম আইনি অনুমোদন
২৫ বছর পর পর্দায় ফিরছে ‘কিউঁকি সাস ভি কভি বহু থি’ – তুলসী ও মিহির জাদু আবার স্টার প্লাসে
রিস্টোর করা ‘শোলে’র ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হবে ইতালির বিখ্যাত চলচ্চিত্র উৎসব “ইল সিনেমা রিট্রোভাটো”-তে। ২৪ জুন ২০২৫, খোলা আকাশের নিচে, বিশাল স্ক্রিনে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হবে বিশ্ব। এটাই ‘শোলে’র প্রথম আন্তর্জাতিক আত্মপ্রকাশ—প্রায় ৫০ বছর পর।
অমিতাভ বচ্চন বলেন,
“শোলে আমার জীবনের স্পেশাল অধ্যায়। ছবিটি আবার বড়পর্দায় দেখতে পেয়ে গর্বিত।”
ধর্মেন্দ্র বলেন,
“শোলে আমার কাছে বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য। নতুন প্রজন্ম ছবিটি দেখুক, এই আমার প্রার্থনা।”
শেহজাদ সিপ্পি, সিপ্পি ফিল্মস-এর তরফে জানান,
“শোলে আমাদের পরিবারের ইতিহাস। তাই ছবির সম্পূর্ণ সংস্করণ ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব ছিল আমাদের।”
শিবেন্দ্র সিং ধুংগারপুর, ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রধান বলেন,
“এই রিস্টোরেশন আমার স্বপ্ন ছিল। ছোটবেলায় ‘শোলে’ দেখতে পারিনি। এবার সবাইকে নিয়ে দেখব।”
‘শোলে’ শুধুই একটি সিনেমা নয়—এটি ভারতীয় চলচ্চিত্রের DNA। বন্ধুত্ব, প্রতিশোধ, ভালোবাসা, সাহসের প্রতীক হয়ে উঠেছে ছবির প্রতিটি চরিত্র—জয়-ভীরু, গব্বর, বসন্তি, ঠাকুর। রিস্টোরেশনের ফলে এই অসাধারণ শিল্পকর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে আরও উজ্জ্বলভাবে ধরা দেবে। ছবির রঙ, শব্দ, দৃশ্য সবকিছু নতুন করে নির্মিত হলেও, অনুভব থাকবে আগের মতই গভীর।
এটি ভবিষ্যতের চলচ্চিত্র সংরক্ষণের পথ তৈরি করে দিল।
‘শোলে’ আবারও দেখাল—সিনেমা কখনও মরে না, বরং সময়ের সঙ্গে তার রূপ আরও দীপ্ত হয়।
সিনেমা শুধু বিনোদন নয়—এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি আর আবেগ।
‘শোলে’র নতুন রূপে প্রত্যাবর্তন সেই আবেগেরই জয়গান।
এবার দর্শক শুধু ‘শোলে’ দেখবেন না—তাঁরা ফিরে যাবেন সময়ের এক অধ্যায়ে, যেখানে গল্পটাই ছিল জীবনের প্রতিচ্ছবি।
আরও পড়ুন :
“রাজ্যের স্কুলে বাধ্যতামূলক মুখ্যমন্ত্রীর বই! সাহিত্য না প্রচার? শিক্ষা মহলে বিতর্ক তুঙ্গে”
২০২৭ বিশ্বকাপে কোহলি-রোহিত থাকবেন তো? তরুণদের দাপটে ফিকে হচ্ছে দুই কিংবদন্তির সম্ভাবনা