WestBengalWeather
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | কলকাতা | ১৪ জুলাই, ২০২৫ : বঙ্গোপসাগরের উত্তরাংশে ফের সক্রিয় হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। ধীরে ধীরে সেটি নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে, যার ফলে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের বহু জেলায় ব্যাপক বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (WestBengalWeather)। ইতিমধ্যেই একাধিক জেলায় হলুদ এবং কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। সেটি ওড়িশা উপকূল বরাবর অবস্থান করছে এবং ধীরে ধীরে তা আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে রূপ নিচ্ছে। এই সিস্টেমের কারণে দক্ষিণবঙ্গের দিকে জোরালো জলীয় বাষ্প ঢুকছে, যার ফলে বর্ষার প্রভাব আরও তীব্র হচ্ছে।
তিন ঘূর্ণাবর্তের জেরে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, দক্ষিণবঙ্গে জারি সতর্কতা
উপকূলের দিকে এগোচ্ছে নিম্নচাপ, বুধেই ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ শুরু দক্ষিণবঙ্গে
দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই বৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কলকাতা ও শহরতলি: শহরজুড়ে মাঝে মাঝেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে। আগামী ১৪ ও ১৫ জুলাই কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ও উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম: এই জেলাগুলিতে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। ৭০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। নদী উপচে পড়ার সম্ভাবনা, নিম্নাঞ্চলে জল জমার আশঙ্কা।
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া: গ্রীষ্মকালীন ঝড় বা কালবৈশাখীর মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। গাছ উপড়ে পড়া, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাপমাত্রা: সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকবে, তবে আর্দ্রতার কারণে অস্বস্তি অব্যাহত থাকবে।
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি জেলাগুলিতেও বৃষ্টির দাপট বাড়বে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার: এই জেলাগুলিতে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারেও নদীর জলস্তর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মালদা ও উত্তর দিনাজপুর: বৃষ্টির পাশাপাশি কিছু এলাকায় দমকা হাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। কৃষিকাজে প্রভাব পড়তে পারে।
আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার আবেদন জানানো হয়েছে।
কেউ যেন নিম্নাঞ্চলে না থাকেন।
অত্যাবশ্যক ছাড়া বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নদীর পাড়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।
কলকাতা পুরসভা ও রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর প্রস্তুত রয়েছে।
স্কুল ও কলেজগুলিতে মঙ্গলবার থেকে ছুটি ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠছে। ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল থেকে গভীর সমুদ্রে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য। মৎস্যজীবীদের স্থলভাগে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রচণ্ড বৃষ্টির ফলে বহু কৃষিজমিতে জল জমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধান ও অন্যান্য খরিফ ফসলের বীজতলিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাঁকুড়া ও বর্ধমানে আগাম চাষের কাজে ক্ষতি হতে পারে।
কলকাতার একাধিক এলাকায় ইতিমধ্যেই জল জমেছে। রবিবার রাতে দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়া, বেহালা, টালিগঞ্জ এলাকায় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।
মেট্রো ও রেল পরিষেবাও কিছুটা প্রভাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন :
যুক্তরাষ্ট্রের অসহনীয় গরমে বিপাকে ফিফা, ইনফান্তিনোর বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় বড় পরিবর্তন
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার জো বার্নসের হাত ধরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ল ইতালি