Breaking News

Bangladesh deploys warships hilsa

ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশের কড়া নজরদারি: যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার ও ড্রোন মোতায়েন

ইলিশের প্রজনন মরসুমে অবৈধ মাছ ধরা রোধে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ১৭টি যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার ও ড্রোন মোতায়েন করেছে। নিষেধাজ্ঞা জারি ও নদীপথে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে ইলিশ রক্ষায়।

ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশে যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার ও ড্রোন মোতায়েন

Bangladesh deploys warships hilsa

ক্লাউড টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশ সরকার ইলিশ মাছের প্রজনন মরসুমে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।অবৈধ মাছ ধরা বন্ধ করতে এবার মোতায়েন করা হয়েছে যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার এবং ড্রোন।সরকারের নির্দেশে ১৭টি যুদ্ধজাহাজ, নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের যৌথ দল নদী ও সমুদ্র উপকূল জুড়ে টহল দিচ্ছে।

ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। তবে বছরের নির্দিষ্ট সময় এদের প্রজনন হয় পদ্মা, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে।এই সময়ে অতিরিক্ত আহরণ ইলিশ প্রজাতিকে বিপদের মুখে ফেলছে। তাই সরকার ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

নৌবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, টহলরত ১৭টি যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।এই ড্রোনগুলো বিশেষভাবে রাতের বেলায় নদীর উপর নজরদারি চালাচ্ছে। অবৈধ ট্রলার বা মাছ ধরার জাল দেখা গেলেই দ্রুত অভিযান হচ্ছে।

অন্যদিকে, উপকূল এলাকায় মোতায়েন রয়েছে কোস্টগার্ড ও মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তারা। তারা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন যাতে কোনোভাবেই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন না হয়। তাছাড়া নদী তীরবর্তী জেলেদের উপরও সচেতনতা প্রচার চলছে।সরকার জানিয়েছে, ইলিশ বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ইলিশ রক্ষা করা শুধু একটি প্রজাতি বাঁচানো নয়, বরং এটি দেশের অর্থনীতিকেও সুরক্ষা দেওয়া।বাংলাদেশের মৎস্য মন্ত্রণালয় বলছে, এই ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ইলিশের ডিম পাড়ার সুযোগ বাড়বে। এর ফলে আগামী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদনও অনেক বৃদ্ধি পাবে। গত বছর এই উদ্যোগের ফলে দেশের ইলিশ উৎপাদন প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছিল।

তবে, নিষেধাজ্ঞার কারণে হাজার হাজার জেলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।সরকার তাদের জন্য প্রতি পরিবারে ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ ঘোষণা করেছে। তবু অনেক জেলে বলছেন, এই সহায়তা খুবই অপ্রতুল।

কিছু মৎস্যজীবী অভিযোগ করেছেন, তাদের এলাকায় চাল বিতরণে অনিয়ম হচ্ছে।ফলে অনেকে পরিবার এখন উপার্জনহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তবুও বেশিরভাগ জেলে জানিয়েছেন, “ইলিশ বাঁচলে আমরা বাঁচব, তাই এই উদ্যোগকে সমর্থন করি।”

যদিও সরকার এই অভিযানকে “পরিবেশ রক্ষা ও সম্পদ সংরক্ষণের মাইলফলক” বলছে, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধজাহাজ ও হেলিকপ্টার ব্যবহার কিছুটা প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে। ইলিশের প্রজননের জন্য শান্ত জল অত্যন্ত জরুরি।

১০ মিনিটের যাত্রা, কিন্তু মৃত্যু ফাঁদ! কেদারনাথ থেকে ফেরার পথে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৭

বাংলাদেশের ইলিশ নিয়ে কলকাতায় কাড়াকাড়ি, দাম চড়া তবুও লুফে নিচ্ছেন ক্রেতারা

পরিবেশবিদরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রযুক্তি ব্যবহারে ভারসাম্য রক্ষা করা দরকার। অতিরিক্ত টহল ইলিশের প্রজননে ভয় সৃষ্টি করতে পারে বলেও তারা মনে করছেন। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, অভিযানটি অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং পরিবেশবান্ধবভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

ইলিশ শুধু একটি মাছ নয়, এটি বাংলাদেশের জাতীয় গর্বের প্রতীক। দেশের দক্ষিণ উপকূলে লক্ষাধিক পরিবার ইলিশের উপর নির্ভরশীল। তাই এই অভিযান মূলত ইলিশ সংরক্ষণ ও দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য নিরাপত্তার অংশ।

এছাড়া, বাংলাদেশ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গেও তথ্য বিনিময় করছে। গঙ্গা, পদ্মা ও তেঁতুলিয়া নদী সীমান্ত অতিক্রম করায় দুই দেশের সমন্বয় জরুরি। দুই দেশের বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে ইলিশের প্রজনন সময়সীমা ও নদীপথের গতি নিয়ে যৌথ গবেষণায় যুক্ত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, “ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ, এটি রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই অভিযান চলবে যতক্ষণ না নদীগুলো নিরাপদ হয়।”

আরও পড়ুন :

নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০২৫: আলোচনায় ট্রাম্প, ইমরান খান ও পোপ ফ্রান্সিসসহ ৫ সম্ভাব্য প্রার্থী

সল্টলেকে গ্রহরত্ন ব্যবসায়ীর এজেন্টের বাড়িতে ইডির তল্লাশি, অভিযোগ ৩৫০ কোটির আর্থিক তছরুপ

ad

আরও পড়ুন: