China PregnancyRobot
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : চীনে সম্প্রতি এমন এক পরীক্ষা সামনে এসেছে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত খুললেও তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, তাঁরা একটি ‘হিউম্যানয়েড প্রেগন্যান্সি রোবট’ বা রোবটিক সারোগেট প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন, যা মানব গর্ভধারণের প্রক্রিয়াকে অনুকরণ করতে (China PregnancyRobot) সক্ষম।
এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো সারোগেসি বা ভাড়া মাতৃত্বকে প্রযুক্তির সাহায্যে নতুন পথে নিয়ে যাওয়া। চীনে বর্তমানে সারোগেসি আইনত নিষিদ্ধ। তবে অনেক ধনী পরিবার সন্তান লাভের জন্য অবৈধ পথে সারোগেসির সাহায্য নিয়ে থাকেন। ফলে নতুন প্রযুক্তি এই সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে।
চীন বিশ্বে প্রথমবারের মতো চালু করল একটি সম্পূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ভিত্তিক হাসপাতাল
চীনের ওপর ট্রাম্পের ১০৪ শতাংশ শুল্ক, বিশ্বজুড়ে এবার কী ঘটবে?
গবেষকরা জানিয়েছেন, রোবটটি মূলত একটি হিউম্যানয়েড সিস্টেম, যেখানে কৃত্রিমভাবে ভ্রূণ স্থাপন ও বিকাশের পরিবেশ তৈরি করা যায়। গর্ভধারণের প্রতিটি ধাপ— নিষেক থেকে শুরু করে ভ্রূণের বৃদ্ধি পর্যন্ত— রোবটিক গর্ভে সম্ভব হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে থাকবে সেন্সর ও এআই নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম, যা গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে।
এই প্রযুক্তি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই নৈতিকতা ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে। অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, এটি প্রকৃতির নিয়মের সম্পূর্ণ বিরোধী এবং মাতৃত্বের স্বাভাবিক ভূমিকা মুছে দিতে পারে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এই প্রযুক্তি নারীদের জন্য ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে এবং বন্ধ্যাত্ব সমস্যার সমাধান হতে পারে।
চীনের জনসংখ্যা বর্তমানে বড় সংকটের মুখে। জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমছে, যা সরকারকে চিন্তায় ফেলেছে। তাই সন্তান জন্মদানে সহায়ক প্রযুক্তি নিয়ে দেশটি বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে এই রোবট প্রযুক্তি সামাজিক ও নৈতিক বিতর্ককে আরও তীব্র করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
যদি এই গবেষণা সফল হয়, তাহলে সারোগেসি সম্পূর্ণ রূপ বদলে যেতে পারে। বন্ধ্যাত্ব, জটিল গর্ভাবস্থা কিংবা সন্তান জন্মদানে অক্ষম দম্পতিদের জন্য এটি আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু এর নেতিবাচক দিক হলো— প্রযুক্তি হয়তো ‘মায়ের ভূমিকা’কে যান্ত্রিকভাবে প্রতিস্থাপন করবে, যা মানব সমাজের মৌলিক কাঠামোয় আঘাত হানতে পারে।
সব মিলিয়ে, চীনের এই রোবট গর্ভধারণ প্রযুক্তি চিকিৎসা জগতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো গভীর অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি সামগ্রিক রপ্তানি যে হারে বেড়েছে তার ৭ গুণ দ্রুত হারে বেড়েছে