AvoidMilkAtNight
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: রাতে এক গ্লাস গরম দুধ—অনেকের কাছে এটি ঘুমের আগে আরামদায়ক একটি অভ্যাস। দুধে থাকা ট্রিপটোফ্যান ও ক্যালসিয়াম ঘুমে সহায়তা করে, এমনটাই প্রচলিত ধারণা। তবে চিকিৎসকদের মতে, সবার জন্য রাতে দুধ খাওয়া (AvoidMilkAtNight) উপকারী নয়। কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটি শরীরের জন্য মারাত্মক প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে।
ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে শরীরে দুধের প্রাকৃতিক চিনি ‘ল্যাকটোজ’ হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম (ল্যাকটেজ) কম বা অনুপস্থিত থাকে। এই অবস্থায় দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণ করলে গ্যাস, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া ও পেটব্যথা হতে পারে। রাতে দুধ খেলে এই উপসর্গগুলো আরও প্রকট হয়ে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
যাঁদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে, তাঁরা রাতে দুধ খেলে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে ঘুমানোর ঠিক আগে ভারী বা চর্বিযুক্ত দুধ খাওয়া অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়াতে পারে। এতে পেটে জ্বালা, বুক জ্বালা বা ঢেকুর ওঠার মতো উপসর্গ দেখা দেয়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
অনেকেই রাতে চিনি মিশিয়ে দুধ খান। কিন্তু এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে রক্তে ইনসুলিন হঠাৎ করে বাড়তে পারে। এই ইনসুলিন স্পাইক ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ ব্যাহত করতে পারে। নিদ্রাহীনতায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য তাই রাতে মিষ্টি দুধ খাওয়া পরামর্শযোগ্য নয়।
রাতে লেবু খাচ্ছেন? জানুন এর উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক—বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন
“অসমে আমুল ডেইরি প্ল্যান্ট স্থাপনের ঘোষণা: দুধ উৎপাদনে বিপ্লবের সূচনা”
অনেকের শরীরে দুধের প্রোটিন—বিশেষ করে কেসিন ও ওয়েহের প্রতি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এতে ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি, চোখ ও মুখ ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, এমনকি মারাত্মক প্রতিক্রিয়ায় অ্যানাফাইল্যাক্সিস হতে পারে। দুধে অ্যালার্জি যাঁদের আছে, তাঁদের জন্য রাতে দুধ খাওয়া শুধু ঝুঁকিপূর্ণ নয়, বরং প্রাণঘাতীও হতে পারে।
দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও প্রোটিন—যা সুস্থ মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় হলেও কিডনি রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে রাতে দুধ খেলে শরীরে এই উপাদানগুলোর মাত্রা বেড়ে গিয়ে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলতে পারে। পাচনতন্ত্র দুর্বল থাকলে বা ডায়রিয়ার সময় দুধ খাওয়া আরও সমস্যা তৈরি করে। দুধ হজমে তুলনামূলক কঠিন, ফলে এটি এই অবস্থায় অতিরিক্ত পেট ব্যথা, বমি বা ডায়রিয়ার লক্ষণ বাড়াতে পারে।
রাতে দুধ খাওয়ার অভ্যাস অনেকের জন্য স্বাস্থ্যকর হলেও এটি সবার জন্য উপযোগী নয়। যাঁদের শরীরে ল্যাকটোজ সহ্য হয় না, অ্যালার্জি বা হজমজনিত সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এটি হতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। তাই রাতের খাবারের তালিকায় দুধ রাখার আগে নিজ শরীর ও স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনায় নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
আরও পড়ুন :
ভারতে ৮ হাজার এক্স অ্যাকাউন্ট ও সংবাদমাধ্যম বন্ধ: মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নজিরবিহীন আঘাতের অভিযোগ
রাখাইনে ‘করিডর’ : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করলেন