Breaking News

India Road Accidents

ভারতের সড়ক গুলিতে প্রতি ৩ মিনিটে একজনের প্রাণহানি, কেন?

প্রতিদিন ৪৭৪ জন বা প্রতি তিন মিনিটে প্রায় একজন মারা গেছেন

India Road Accidents: A Growing Crisis %%page%% %%sep%% %%sitename%%

India Road Accidents

ক্লাউড টিভি ডেস্ক: ভারতের সড়ক নিরাপত্তা সংকট খুবই ভয়াবহ। প্রতিদিন বহু নিরীহ মানুষের প্রাণ চলে যাচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে। জানা গেছে, ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ভারতে ১ লাখ ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে (India Road Accidents)। এর অর্থ প্রতিদিন ৪৭৪ জন বা প্রতি তিন মিনিটে প্রায় একজন মারা গেছেন।

ভারতের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নীতিন গাদকারি সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি একে ‘নীরব সংকট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

সড়কে এই প্রাণহানির ঘটনায় মৃতদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজারই শিশু (India Road Accidents)। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১০ হাজার মানুষ। মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের মৃত্যুসংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। অধিকাংশ দুর্ঘটনার পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ‘অতিরিক্ত গতি।’

মৌলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেও বহু মৃত্যু ঘটেছে। প্রায় ৫৪ হাজার মানুষ হেলমেট না পরার কারণে মারা গেছেন। সিটবেল্ট ব্যবহার না করায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ হাজার জন। অতিরিক্ত মাল বহনও একটি বড় কারণ, এতে ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বৈধ লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর কারণে ৩৪ হাজার দুর্ঘটনা ঘটেছে।

পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৫: প্রধান পর্যটন কেন্দ্রে বিভীষিকা, গোটা দেশজুড়ে নিন্দা

BREAKING: ঠাকুরপুকুর গাড়ি দুর্ঘটনার জেরে কাজ খোয়ালেন স্যান্ডি সাহা। ঋ-এর পরিবর্তে আসছে অন্য মুখ।

আর ভুল দিক দিয়ে গাড়ি চালানোও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ শতাংশ দুর্ঘটনায় চালকের কাছে লার্নার্স লাইসেন্স ছিল বা কোনো লাইসেন্সই ছিল না (India Road Accidents)। পুরোনো যানবাহনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম, যেমন—সিটবেল্ট ও এয়ারব্যাগ না থাকাও ঝুঁকির কারণ।

এদিকে ভারতের বিশৃঙ্খল ট্র্যাফিক পরিস্থিতি সমস্যাটিকে আরও জটিল করেছে। এখানকার রাস্তাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলে। এর মধ্যে আছে—মোটরগাড়ি, বাইসাইকেল, রিকশার মতো অ-মোটর চালিত যান, গরুর গাড়ি, পথচারী এবং রাস্তার পশু। হকারদের রাস্তা ও ফুটপাথ দখল করার কারণে পথচারীরা বাধ্য হয়ে মূল সড়কে নেমে আসেন। এটি যান চলাচলে বাধা দেয় এবং বিপদ ডেকে আনে।

রাস্তা গুলোর উন্নতির প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতের রাস্তাগুলো বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক হিসেবে রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট শুধু রাস্তার অবকাঠামোগত ঘাটতির কারণে নয়। এর জন্য দায়ী মানুষের সমস্যাযুক্ত আচরণ, আইনের অপর্যাপ্ত প্রয়োগ এবং সার্বিক অব্যবস্থাপনাও। এই দুর্ঘটনার অর্থনৈতিক প্রভাবও ব্যাপক। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে ভারতের বার্ষিক জিডিপির প্রায় ৩ শতাংশ ক্ষতি হয়।

ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সড়ক নেটওয়ার্কের দেশ। ভারতের সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৬৬ লাখ কিলোমিটার। জাতীয় ও রাজ্য সড়কগুলো এই নেটওয়ার্কের প্রায় ৫ শতাংশ। দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ৩৫ কোটি। মন্ত্রী গাদকারি দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হিসেবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভয়ের অভাবকে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দুর্ঘটনার অনেক কারণ আছে, তবে সবচেয়ে বড় কারণ হলো মানুষের আচরণ।’ তবে তিনি অবকাঠামোগত ত্রুটির কথাও স্বীকার করেছেন।

কেন্দীয় মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে জাতীয় সড়কগুলোতে ৫৯টি বড় ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৩,৭৯৫টি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা বা ‘ব্ল্যাক স্পট’ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে, মাত্র ৫০৩৬ টিতে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার করা হয়েছে।

ভারতের সড়ক নকশার মান কাগজে-কলমে ভালো হলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ খুবই দুর্বল। আইআইটি দিল্লির অধ্যাপক গীতম তিওয়ারি উল্লেখ করেছেন, ‘একটি প্রধান সমস্যা হলো নিরাপত্তা মান না মানলে শাস্তি খুবই সামান্য হয়।’ এ ছাড়া, ঠিকাদারদের চুক্তিতে প্রায়শই এই প্রয়োজনীয়তাগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় না। পেমেন্ট সাধারণত কত কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছে তার ভিত্তিতে দেওয়া হয়, নিরাপত্তা নিয়ম মেনে চলার ভিত্তিতে নয়।

মন্ত্রী গাদকারি ২৫ হাজার কিলোমিটার দুই লেনের মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এটি দুর্ঘটনা কমাতে সাহায্য করবে। তবে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর শিক্ষক কাভি ভাল্লার মতো বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে সন্দিহান।

ভাল্লার যুক্তি, ‘রাস্তা চওড়া করলে মৃত্যুর সংখ্যা কমবে এমন কোনো কারণ নেই।’ তিনি বলেন, ‘প্রমাণ আছে যে, রাস্তার মানোন্নয়ন করলে গাড়ির গতি বাড়ে, যা পথচারী, বাইসাইকেল চালক এবং মোটরসাইকেল আরোহীদের জন্য মারাত্মক। তিনি আরও বলেন, নতুন রাস্তা তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নকশা অনুকরণ করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানকার ট্র্যাফিক পরিস্থিতি ভারতের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের মতো হাইওয়ে অবকাঠামো তৈরির চেষ্টা করছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মতো হাইওয়ে নিরাপত্তা প্রকৌশল গবেষণা এবং দুর্ঘটনা ডেটা সিস্টেমে বিনিয়োগ করছে না।

তবে অর্থনীতিবিদরা একমত যে, ভারতের উন্নয়নের জন্য আরও সড়ক তৈরি করা জরুরি। তবে তারা টেকসই উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ব্যবহারকারীদের জীবনের সুরক্ষাকে (India Road Accidents) অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

#india #roadaccidents #highways #nitingadkari #2023data

আরও পড়ুন :

IPL Match Fixing : আইপিএলে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ, আলোচনা তুঙ্গে

বুমরাহ ও মান্ধানার যুগলবন্দি: উইজডেনের বর্ষসেরা ক্রিকেটার ভারতীয় দুই তারকা

ad

আরও পড়ুন: