Chinnaswamy Stampede Investigation
বেঙ্গালুরু, ৫ জুন ২০২৫ | ক্লাউড টিভি : রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আইপিএল জয়ের আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নিল মৃত্যুর মিছিলে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে ট্রফি উদযাপনের সময় ভয়াবহভাবে পদপিষ্ট (Chinnaswamy Stampede Investigation) হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জন দর্শকের। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় আহত আরও অন্তত ৪০ জন এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
৪ জুন রাতে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে হাজার হাজার সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন তাদের প্রিয় দল আরসিবির প্রথম আইপিএল জয়ের আনন্দ ভাগ করে নিতে। বেঙ্গালুরু শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসেছিল, অনেকেই এসেছিলেন পরিবার নিয়ে। স্টেডিয়ামের বাইরে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখানো হয়েছিল, এবং ম্যাচ শেষে শুরু হয় জমকালো আতসবাজি, সেলিব্রেশন মিছিল।
তবে পুলিশ ও নিরাপত্তার পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট জননিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা ছিল না, এমনটাই দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। একটি গেট খোলা হতেই বিপুল ভিড় একসঙ্গে এগিয়ে আসে ভিতরের দিকে, এবং তাতেই ঘটে যায় বিপর্যয়। পদপিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৬ জনের। বাকি ৫ জনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে।
Pushpa 2 Screening Stampede : পুষ্প 2-এর প্রিমিয়ারে বিশৃঙ্খলা, মৃত মা, আহত ছেলে
পাক গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সিআরপিএফ এএসআই গ্রেফতার, জঙ্গি হামলার ছয় দিন আগে পর্যন্ত পহেলগাঁওয়ে
পুলিশ প্রাথমিকভাবে বলেছে, তারা অনুমান করেনি যে এমন বিশাল ভিড় তৈরি হবে, বিশেষ করে ভিকট্রি প্যারেডের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমতি না থাকায়। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় আগেই ভিকট্রি সেলিব্রেশনের বার্তা ছড়িয়ে পড়েছিল।
বেঙ্গালুরু মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বিবেক শাহ জানিয়েছেন, “আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়োজকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”
এই ঘটনায় দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে এখন পর্যন্ত ৫ জন নিরাপত্তা কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ₹১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসার সব খরচ বহন করা হবে রাজ্যের তরফে।
এই ঘটনার পর রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিরোধী দল বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, “পুলিশ কেন আগেভাগে খবর থাকা সত্ত্বেও ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হল?”
কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সুরেশ নায়েক বলেন, “আমরা ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্ত হবে এবং কেউ দায় এড়াতে পারবে না।” তবে বিরোধীদের দাবি, শুধুমাত্র তদন্ত নয়, ঘটনার সময় দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।
দর্শকদের অনেকে জানিয়েছেন, ভয়াবহ সেই মুহূর্তে পুলিশ কোথাও ছিল না। একজন কলেজ পড়ুয়া বলেন, “হঠাৎ সবাই দৌঁড়াতে শুরু করল। কেউ পড়ে গেলে তাকে তুলবার সুযোগ ছিল না। আমি শুধু একটা কিশোরকে দেখি চাপা পড়ে যাচ্ছে, কিছুই করতে পারিনি।”
আরেকজন বলেন, “এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা প্রশাসনিক ব্যর্থতা। এত বড় দলের জয় উদযাপন হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। তাহলে প্রস্তুতি কোথায় ছিল?”
এখন দেখার বিষয়, প্রশাসনিক তদন্ত কতটা স্বচ্ছ হয় এবং এই মর্মান্তিক ঘটনার দায় নিয়ে কে কিভাবে জবাবদিহি করে। জয় তো পেল বেঙ্গালুরু, কিন্তু সেই আনন্দের দাম দিতে হল একাধিক পরিবারের জীবন দিয়ে—এই মূল্য কি খুব বেশি নয়?
আরও পড়ুন :
জেল থেকেই নেতৃত্ব! ইমরান খান হলেন পিটিআই’র ‘প্যাট্রন-ইন-চিফ’