Breaking News

India birth and death rate decline

৫০ বছরে অর্ধেক কমেছে ভারতের জন্ম ও মৃত্যু হার, জনসংখ্যা কাঠামোয় বড় পরিবর্তন

৫০ বছরে ভারতে জন্ম ও মৃত্যুহার অর্ধেক কমেছে। স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক উন্নতির ফলে আয়ুষ্কাল বেড়েছে, তবে আঞ্চলিক বৈষম্য রয়ে গেছে।

ভারতে ৫০ বছরে অর্ধেক কমেছে জন্ম ও মৃত্যুহার, নতুন জনসংখ্যাগত বাস্তবতা

India birth and death rate decline

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : ভারতের জনসংখ্যাগত চিত্র দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৫০ বছরে দেশটির জন্মহার ও মৃত্যুহার—দুটোই অর্ধেক কমেছে। ১৯৭১ সালে প্রতি হাজারে জন্মহার ছিল ৩৬.৯, আর ২০২৩ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১৮.৪-এ। মৃত্যুহারও একই সময়ে ১৪.৯ থেকে নেমে এসেছে ৬.৪-এ। এই পরিবর্তন স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে ভারত এখন নতুন জনসংখ্যাগত (India birth and death rate decline) বাস্তবতায় প্রবেশ করছে।

১৯৭১ সালের তুলনায় এখন প্রতি হাজারে জন্মহার প্রায় অর্ধেক। ২০১৩ সালে জন্মহার ছিল ২১.৪, এক দশকে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৮.৪-এ। নগরায়ণ, পরিবার পরিকল্পনার বিস্তার, নারীশিক্ষার অগ্রগতি এবং সচেতনতার বৃদ্ধি এই প্রবণতার মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ফলে পরিবার ছোট হচ্ছে, এবং সন্তান সংখ্যা সীমিত রাখার প্রবণতা বাড়ছে।

বিশ্বে নজিরবিহীন জন্মহার হ্রাস: জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে ভারতের ‘কিন্তুর’ উঠে এল কেন? খোমেনির শিকড় খুঁজে পাওয়া গেল উত্তরপ্রদেশে

পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, শহরাঞ্চলে জন্মহার কমেছে দ্রুত। বর্তমানে শহরে জন্মহার প্রতি হাজারে ১৪.৯, আর গ্রামে তা ২০.৩। তবে আঞ্চলিক বৈষম্য বেশ স্পষ্ট। বিহারে জন্মহার সর্বোচ্চ ২৫.৮, আর আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে সর্বনিম্ন ১০.১। অর্থাৎ রাজ্যভেদে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারে বড় পার্থক্য তৈরি হয়েছে।

মৃত্যুহারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ১৯৭১ সালে প্রতি হাজারে মৃত্যুহার ছিল ১৪.৯, বর্তমানে তা ৬.৪। শহরে মৃত্যুহার ৫.৭, গ্রামে ৬.৮। তবে এখানেও বৈষম্য রয়েছে। ছত্তিশগড়ে মৃত্যুহার সর্বোচ্চ ৮.৩, আর চণ্ডীগড়ে সর্বনিম্ন ৪.০। মৃত্যুহার হ্রাস পাওয়ার মানে হলো, দেশে আয়ুষ্কাল বেড়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবা আরও বিস্তৃত হয়েছে।

শিশুমৃত্যু হারেও গত এক দশকে বড় পরিবর্তন এসেছে। ২০১৩ সালে প্রতি হাজারে শিশু মৃত্যুহার ছিল ৪০, আর ২০২৩ সালে তা ২৫। অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি শিশুস্বাস্থ্য ও মাতৃসুরক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রতিফলন। তবে দরিদ্র রাজ্যগুলোতে শিশু মৃত্যুহার এখনও উদ্বেগজনক মাত্রায় রয়ে গেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের জন্মহার দ্রুত কমে আসায় ভবিষ্যতে জনসংখ্যার চাপ হ্রাস পাবে। দক্ষিণী রাজ্যগুলোর অনেকগুলো ইতোমধ্যেই প্রতিস্থাপনযোগ্য প্রজনন স্তরে পৌঁছে গেছে। তবে উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্যে জন্মহার এখনও বেশি। এর ফলে ভবিষ্যতে দেশের ভেতরেই জনসংখ্যার ভারসাম্য বদলে যাবে। উন্নত রাজ্যগুলোতে জনসংখ্যা স্থিতিশীল হবে, আর অনুন্নত রাজ্যগুলোতে চাপ বাড়বে।

মৃত্যুহার হ্রাস পাওয়ার পেছনে চিকিৎসা অবকাঠামোর উন্নতি বড় ভূমিকা রেখেছে। একদিকে আধুনিক হাসপাতাল ও ওষুধের প্রাপ্যতা বেড়েছে। অন্যদিকে টিকা কর্মসূচি এবং জনস্বাস্থ্য প্রকল্পগুলো মৃত্যুহার কমাতে সাহায্য করেছে। পাশাপাশি আয়ুষ্কাল বেড়েছে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।

যদিও জন্মহার কমা ইতিবাচক মনে হচ্ছে, তবে এটি নতুন কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত বয়স্ক জনগোষ্ঠী বেড়ে যাবে। ফলে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাস পেলে অর্থনীতিতে চাপ তৈরি হতে পারে। আবার আঞ্চলিক বৈষম্য বাড়তে থাকলে উন্নয়ন ভারসাম্যহীন হয়ে উঠবে। তাই জন্মহার নিয়ন্ত্রণে রাখা যেমন জরুরি, তেমনি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর জন্য নীতি প্রণয়নও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

আরও পড়ুন :

গাজায় ২ হাজার ৭০০ পরিবার নিশ্চিহ্ন, ধ্বংসস্তূপে রূপ নিচ্ছে সমগ্র অঞ্চল

স্বাস্থ্য ও রাজনৈতিক ঝুঁকির মাঝে ট্রাম্প আবারও রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে সমর্থন করলেন

ad

আরও পড়ুন: