PuriVegetarianZone
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ১০ জুন ২০২৫ : পুরী—যেখানে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত জগন্নাথ দেবের দর্শনে আসেন, সেই তীর্থনগরীর পবিত্রতা বজায় রাখতে বড় সিদ্ধান্ত নিল ওড়িশার নবগঠিত বিজেপি সরকার। রাজ্যের আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন রবিবার ঘোষণা করেছেন, পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের দুই কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে মদ ও আমিষ খাবারের বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ (PuriVegetarianZone) করা হচ্ছে।
একেন বাবুর ফেসবুক প্রোফাইল সাময়িকভাবে সাসপেন্ড, উদ্বেগ প্রকাশ অনুরাগীদের মধ্যে
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের অন্যতম পবিত্র ধর্মস্থান হিসেবে পুরী শহরের ধর্মীয় আবহ রক্ষা করা ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে একটি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরাই এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসছে—
সমস্ত বার, রেস্তোরাঁ, পানশালা, হোটেল, ধাবা, পথের ধারে খাবারের দোকান, যেগুলি আমিষ খাবার বা অ্যালকোহল পরিবেশন করে।
জগন্নাথ মন্দির থেকে ২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে অবস্থিত সমস্ত প্রতিষ্ঠান।
‘গ্র্যান্ড রোড’ বা বড় ডান্ডা, যা জগন্নাথ মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত প্রসারিত ২.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পবিত্র পথ—সেখানেও একই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
আইনমন্ত্রী বলেন—
“পুরী শুধু ওড়িশার নয়, গোটা ভারতের গর্ব। শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। তাই এই এলাকাকে সম্পূর্ণ নিরামিষ ও মাদকমুক্ত রাখা হবে।”
এই সিদ্ধান্তে পুরোহিত সমাজ এবং ভক্তদের মধ্যে প্রশংসা ও স্বস্তি দেখা গেছে। বহু পুরনো দাবি ছিল জগন্নাথ মন্দির চত্বরকে ‘ধর্মনির্ভর জোন’ ঘোষণা করার, এবার বিজেপি সরকার সেই উদ্যোগই বাস্তবায়ন করতে চলেছে।
অন্যদিকে, পর্যটন ও হোটেল ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি, এই নিষেধাজ্ঞা হঠাৎ করে কার্যকর হলে ব্যবসায়িক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে সরকার আশ্বস্ত করেছে, বিকল্প ব্যবসা বা রিলোকেশন সংক্রান্ত সহযোগিতা দেওয়া হবে।
নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন পেয়ে ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি ওড়িশায় হিন্দুত্ব ও ধর্মীয় সংস্কারকে অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরছে। এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখছেন হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে আরও দৃঢ় করার একটি সাংস্কৃতিক পদক্ষেপ হিসেবে।
বিজেপির এক সিনিয়র নেতা বলেন—
“আমরা কোনও ধর্মকে ছোট করতে চাই না, বরং জগন্নাথ ধামের মর্যাদা বাড়াতে চাই।”
জগন্নাথ মন্দির চত্বর দীর্ঘদিন ধরেই ভক্তদের কাছে ‘অমিষহীন ও পূণ্যভূমি’ হিসেবে পরিচিত। যদিও শহরের অন্যান্য অঞ্চলে পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে বহু বছর ধরে হোটেল-রেস্তোরাঁতে আমিষ খাদ্য পরিবেশন চালু ছিল।
তবে এবার সেই পুরনো প্রথাকেই আইনগত রূপ দিয়ে পুরী শহরের পবিত্র চরিত্রকে ফিরিয়ে আনতে চায় বর্তমান সরকার।
আরও পড়ুন :
ইমরান খানের মুক্তি আসন্ন? ১১ জুনকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত