PressFreedom
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: সাম্প্রতিক পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ৮ হাজার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট বন্ধের (PressFreedom India) নির্দেশ দিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনের অ্যাকাউন্ট। সিদ্ধান্তটি ঘিরে দেশে-বিদেশে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
ভারত সরকার বলছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে সমালোচকরা এটিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নজিরবিহীন হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
এক্স-এর গ্লোবাল গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ মে জানানো হয়, ভারত সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলোর প্রবেশাধিকার কেবল ভারতের ব্যবহারকারীদের জন্য সীমিত করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তারা এই নির্দেশের সঙ্গে একমত নয় এবং এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি।
বন্ধ হওয়া অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া ও গ্লোবাল টাইমস, তুরস্কের টিআরটি ওয়ার্ল্ড, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্ল্যাটফর্ম হিন্দুত্ব ওয়াচ, কাশ্মীরভিত্তিক ফ্রি প্রেস কাশ্মীর, ভারতীয় ডিজিটাল মিডিয়া মাক্তুব এবং বিভিন্ন স্বাধীন সাংবাদিকের এক্স অ্যাকাউন্ট।
৯ মে ভারতের সমালোচক সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ার সম্পূর্ণভাবে ব্লক হয়ে যায়। তাদের ওয়েবসাইট এবং এক্স অ্যাকাউন্ট – উভয়ই ভারতের ব্যবহারকারীদের কাছে অপ্রাপ্য (unavailable) হয়ে পড়ে। একদিন পর ব্লক উঠে গেলেও, তার আগে তাদের একটি প্রতিবেদন মুছে ফেলতে হয়, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে পাকিস্তান একটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
দ্য ওয়্যারের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজন বলেন, “সরকার কোনো ব্যাখ্যা না দিয়েই আমাদের ব্লক করে। এটি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।”
ফ্রি প্রেস কাশ্মীরের সম্পাদক কাজি জায়েদ জানান, তারা কোনো কনটেন্ট নীতিমালা ভাঙেননি এবং এক্স থেকেও কোনো আগাম সতর্কবার্তা পাননি। তিনি জানান, তারা আইনি পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছেন।
কংগ্রেসের তুরস্ক অফিস সংক্রান্ত ভুয়ো খবর প্রচার, নিঃশর্ত ক্ষমা চাইল অর্ণব গোস্বামীর রিপাবলিক
সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (CPJ)-এর ভারত প্রতিনিধি কুনাল মজুমদার বলেছেন, “আঞ্চলিক উত্তেজনার সময় স্বাধীন সাংবাদিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরণের ব্লক গণতন্ত্রের মূল চেতনার ওপর সরাসরি আঘাত।”
বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো অবিলম্বে এই ব্লক প্রত্যাহার এবং স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের কাজ করার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।বর্তমান পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং জনগণের তথ্য জানার অধিকার নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা ভারতীয় গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য এক গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন :
রাখাইনে ‘করিডর’ : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করলেন
আন্তর্জাতিক চা দিবসে ‘এক কাপ ভালবাসা’ — চায়ের টানে আজও বাঙালির মন