Continue reading "যে ১০ দেশে মোট জনসংখ্যায় মহিলার অনুপাত বেশি!"
countries highest women proportion
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : ২০২৪ সালের জুলাইয়ে জাতিসংঘের ‘পপুলেশন ডিভিশন’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের সেই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের এমন দশটি দেশ রয়েছে যাদের মোট জনসংখ্যায় পুরুষদের চেয়ে মহিলাই বেশি (countries highest women proportion)। দেখে নেওয়া যাক এই তালিকায় কোন কোন দেশ রয়েছে।
লাটভিয়া:
ইউরোপের দেশ লাটভিয়ায় মোট জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ মহিলা। দেশটিতে পুরুষের তুলনায় মহিলার সংখ্যা বেশি হওয়ার একটি বড় কারণ স্বাস্থ্যগত। লাটভিয়ায় ৪৩ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে মহিলাদের তুলনায় পুরুষের সংখ্যা বেশি। কিন্তু ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে পুরুষের চেয়ে মহিলাদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের দুর্বল স্বাস্থ্যকে এ জন্য দায়ী করা হয়েছে। লাটভিয়ায় মহিলাদের তুলনায় পুরুষেরা অধিক অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করেন। সেখানে মহিলাদের তুলনায় তিন গুণ পুরুষ ধূমপান করেন। ওজন নিয়ন্ত্রণেও মহিলাদের চেয়ে পুরুষেরা পিছিয়ে।
মলদোভা:
ইউরোপের দেশ মলদোভার মোট জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ মহিলা। এরপরও দেশটিতে এখনো লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য বেশ তীব্র। মলদোভায় মহিলাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের হার বাড়লেও কর্মক্ষেত্রে মহিলারা পুরুষদের তুলনায় বেশ পিছিয়ে। সেখানে কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ পুরুষের তুলনায় ১০ শতাংশ কম।
মলদোভায় ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী বেকারদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই মহিলা। মহিলারা ঘরে কাজ করবেন, পুরুষেরা বাইরে। মলদোভায় কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ কম হওয়ার মূল কারণও সমাজের প্রথাগত এই ব্যবস্থা। মলদোভায় গৃহস্থালি কাজ ও শিশুদের দেখাশোনার দায়িত্বের বেশির ভাগটা মহিলাদের বহন করতে হয়।
আর্মেনিয়া:
আর্মেনিয়ার মোট জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ৬১ শতাংশ মহিলা (countries highest women proportion)। এর একটি বড় কারণ, ভালো কাজের আশায় দেশটির পুরুষদের বিদেশে যাওয়ার হার অনেক বেশি। তবে দেশে মহিলার সংখ্যা বেশি হলেও কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে তাঁদের নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়। দেশটির রাজনীতিতেও মহিলাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য রকম কম।
রাশিয়া:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক পুরুষ নিহত হয়েছিলেন। যে কারণে ১৯৫০ সাল থেকেই রাশিয়ায় মোট জনসংখ্যায় পুরুষের তুলনায় মহিলা বেশি। রাশিয়ায় মানুষের গড় আয়ু তুলনামূলক বেশি এবং দেশটির বয়স্ক মানুষের মধ্যে সংখ্যায় মহিলারা এগিয়ে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যগত কারণেও রুশ মহিলাদের আয়ুষ্কাল রুশ পুরুষদের তুলনায় বেশি। রুশ পুরুষদের মধ্যে মদ্যপান ও আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের কারণে রোগে আক্রান্ত হয়ে পুরুষদের মৃত্যু বেশি হয়। দেশটিতে জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ মহিলা।
আল নাশরের সঙ্গে নতুন চুক্তি রোনালদোর, বেতন মিনিট প্রতি ৪৮ হাজার টাকা!
ইউক্রেন:
রাশিয়ার মতো ইউক্রেনেও পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের আয়ুষ্কাল বেশি। মূলত এ কারণে দেশটির মোট জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ৫০ শতাংশ মহিলা। ২০২১ সালে ইউক্রেনে একজন মহিলার গড় আয়ুষ্কাল ছিল ৭৫ বছরের বেশি, যেখানে একজন পুরুষের গড় আয়ুষ্কাল ৬৬ বছরের বেশি। অর্থাৎ মহিলা ও পুরুষের মধ্যে গড় আয়ুষ্কালের ব্যবধান প্রায় এক দশক।
জর্জিয়া:
জর্জিয়ায় মোট জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ৪০ শতাংশ মহিলা (countries highest women proportion)। দেশটির জনসংখ্যায় পুরুষের তুলনায় মহিলার সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ প্রধানত দুটি—অভিবাসন ও আয়ুষ্কাল। বিদেশে অভিবাসী হওয়া জর্জিয়ার নাগরিকদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ পুরুষ। এর ফলে দেশটির মোট জনসংখ্যায় পুরুষের তুলনায় মহিলার সংখ্যা খানিকটা বেড়ে গেছে। জর্জিয়াতেও মহিলাদের গড় আয়ুষ্কাল পুরুষদের তুলনায় বেশি। ২০২৩ সালে জর্জিয়ায় পুরুষদের গড় আয়ু ৭০ দশমিক ৬ বছর এবং মহিলাদের গড় আয়ু ছিল ৭৯ দশমিক ৪ বছর।
বেলারুশ:
বেলারুশে মোট জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ৪০ শতাংশ মহিলা, যদিও দেশটি গভীরভাবে পুরুষতান্ত্রিক, লিঙ্গবৈষম্যও তীব্র। যেমন দেশটিতে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মজুরি কম। একই কাজের জন্য পুরুষেরা যে মজুরি পান, মহিলারা পান তার ৮০ শতাংশ। তবে মোট জনসংখ্যায় মহিলার সংখ্যা বেশি, এমন দেশের তুলনা একটি জায়গায় বেলারুশ এগিয়ে, আর সেটি হলো, দেশটির কর্মক্ষেত্রে ৫৪ শতাংশ মহিলা। জনসংখ্যায় মহিলা বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ গড় আয়ুষ্কাল। ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বেলারুশে মহিলাদের গড় আয়ু ৭৮ বছর। পুরুষদের গড় আয়ু ঠিক ১০ বছর কম।
লিথুয়ানিয়া:
লিথুয়ানিয়ায় মোট জনসংখ্যার ৫২ দশমিক ৮৫ শতাংশ মহিলা। এর প্রধান দুই কারণ, আয়ুষ্কাল ও শরণার্থী অভিবাসন। লিথুয়ানিয়ায় গড়ে একজন মহিলা একজন পুরুষের তুলনায় ৯ বছর বেশি বাঁচেন। মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের গড় আয়ু কম হওয়ার কারণ ধূমপান, মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও ব্যায়ামে অনীহা।
লিথুয়ানিয়ায় ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে দুই–তৃতীয়াংশ মহিলা। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে ইউক্রেন থেকে প্রচুর শরণার্থী লিথুয়ানিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। এটিও দেশটির জনসংখ্যায় মহিলার অনুপাত বাড়াতে কাজ করেছে। লিথুয়ানিয়া যে ৫৪ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, তার মধ্যে ৩২ হাজার জন মহিলা।
টোঙ্গা:
টোঙ্গায় মোট জনসংখ্যার ৫২ দশমিক ৫৯ শতাংশ মহিলা। এর একটি বড় কারণ আয়ুষ্কাল। ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, টোঙ্গায় মহিলাদের গড় আয়ু পুরুষের তুলনায় প্রায় পাঁচ বছর বেশি। পুরুষের আয়ুষ্কাল কম হওয়ার জন্য অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অনেকটা দায়ী। টোঙ্গায় শৈশব থেকেই ছেলেদের ধূমপান করা, মারামারি ও কুস্তি করা সমাজে মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু একটি মহিলারা এসব কাজ করবে, তা সমাজ ভাবতে পারে না। সেখানে লিঙ্গবৈষম্যও তীব্র।
সার্বিয়া:
সার্বিয়ায় মোট জনসংখ্যার ৫২ দশমিক ৫১ শতাংশ মহিলা (countries highest women proportion)। তবে জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মহিলা হলেও দেশটির কর্মক্ষেত্রে মহিলার অংশগ্রহণ পুরুষের তুলনায় কম, ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ। সার্বিয়ায় মহিলারা বৈষম্য ও পারিবারিক সহিংসতার শিকার হন। তবে নিপীড়নের শিকার মাত্র অর্ধেক মহিলার ঘরে অভিযোগ করে থাকেন। গড় আয়ুষ্কালও জনসংখ্যায় মহিলার সংখ্যা বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ। ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সার্বিয়ায় একজন মহিলার গড় আয়ু ৭৫ দশমিক ৬ বছর, পুরুষের গড় আয়ু ৭০ বছর।
আরও পড়ুন :
Unknown Gunmen: পাকিস্তানে একাধিক সন্ত্রাসবাদী মৃত্যুতে দায়ী কারা?
মে মাসে শুরু হচ্ছে ‘পুষ্পা ৩’-এর শুটিং: জানালেন আল্লু অর্জুন!
Facebook : https://www.facebook.com/cloud.tv24x7
x (twitter) : https://x.com/cloudTV_NEWS