Bengal BJP 2026 Strategy
শান্তনু কর্মকার : ২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে ৩৮.১ শতাংশ, ২৪ এর লোকসভায় ৩৯.১ শতাংশ। বঙ্গে বিজেপির ভোটের হার দেখলে প্রাথমিকভাবে মনে হতেই পারে রাজ্যজয় এমন কোনও অলীক কল্পনা নয়, বরং ভীষণভাবে সম্ভব (Bengal BJP 2026 Strategy)। তবু বারবার আশা জাগিয়েও কেন জয় অধরা থাকছে গেরুয়া শিবিরের? শুধুই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ রাজ্য সরকারের একাধিক জনকল্যানমূলক প্রকল্প? নাকি অন্য কারনও দায়ী এর পেছনে? বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মতে, রাজ্যস্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প মুখ তৈরি না করতে পারা, সংখ্যালঘু ভোট সহ একাধিক ফ্যাক্টরের জেরে প্রধান বিরোধী দল হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বিজেপিকে।
প্রখ্যাত সাংবাদিক রাজদীপ সারদেশাই নিজের বই ‘2024, The Election That Surprised India’তে লিখেছেন, ২০১৯ এর পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করেন মমতা। কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক ধীরে ধীরে পেশাদার পদ্ধতি মেনেই জনসংযোগের কাজে নেমে পড়ে। ‘দিদিকে বলো’ সহ একাধিক উদ্যোগের মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে তাদের মতামত শোনে এবং সরেজমিনে খতিয়ে দেখে কোন নেতার জনপ্রিয়তা তথা গ্রহণযোগ্যতা বাস্তবে ঠিক কতটা। ঠিক এখানেই অর্ধেক লড়াই হেরে গিয়েছিল বিজেপি। আইপ্যাকের রিপোর্ট হাতে পেয়ে মমতা যাঁদের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ছেঁটে ফেলতে চেয়েছিলেন, বেগতিক বুঝে তাঁরাই যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। ফলাফল যা হওয়ার তাই, দলবদলুদের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া কেউই রাজ্য রাজনীতিতে দাগ কাটতে পারেননি সেভাবে। তাছাড়া রাজ্যজয়ের আগেভাগেই একাধিক ক্ষেত্রে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রবল আকার ধারণ করেছিল গেরুয়া শিবিরে। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে একজোট হওয়া তৃণমূল, অন্যদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিজেপি, খুব স্বাভাবিকভাবেই মানুষ প্রথমপক্ষকে বেছে নিয়েছে।
বালুচিস্তানে গুলির লড়াই, শতাধিক পণবন্দির প্রাণসংশয়
আরও দুই ব্রিটিশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে রাশিয়া
এছাড়া বহিরাগত বলে আক্রমণ তো রয়েছেই। মমতা তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘হিন্দূবিরোধী’ হওয়ার অভিযোগ ২০১৯ সালের লোকসভায় বেশ কাজে লেগেছিল (Bengal BJP 2026 Strategy)। তবে ঠিক ২০২১ সালেই মমতা উত্তর দিলেন দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলকে বহিরাগত তথা বাঙালি বিরোধী দাগিয়ে দিয়ে। এই বাঙালি সেন্টিমেন্টে ভর করেই ২১ এবং ২৪ এর নির্বাচনে নিজের দূর্গ অক্ষত রাখতে পেরেছেন মমতা। অন্যদিকে সেরকম কোনও বাঙালি মুখ না থাকায় সেই কাজ আরও সহজ হয়ে গিয়েছে।
এমতাবস্থায় বিজেপির হাতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র বোধহয় হিন্দুত্ব এবং উগ্র মমতা বিরোধিতাই। বাংলাদেশে হিংসার আবহে রাজ্যজুড়ে হিন্দুদের ওপর হওয়া অত্যাচার নিয়ে বিজেপি সরব না হলে হিন্দুদের ভোট ধরে রাখতেও সমস্যা হতে পারে মুরলীধর স্ট্রিটের (Bengal BJP 2026 Strategy)। তাছাড়া ১৫ বছরের তৃণমূল শাসনে এমনিতেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মনে, যেনতেন প্রকারেণ এই ক্ষোভকে কাজে লাগাতে মুখিয়ে থাকবে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে চেষ্টার খামতি রাখবে না তৃণমূলও, এর আগেও বহুবার দলীয় নেতাদের দোষ ঢাকতে ২৯৪টি আসনে নিজেকে প্রতিনিধি বলে দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে এবারও এই এক মন্ত্রেই জনগণের মন জয় করতে চাইলে বিরোধী দলকে উগ্র মমতা বিরোধিতায় নামতেই হবে। সেরকম হলে একজন মহিলা নেত্রীর বিরুদ্ধে সীমা না ছাড়িয়ে কতটা আক্রমণ করতে পারবে বিজেপি, তার ওপরই নির্ভর করছে রাজ্যের নির্বাচনী ভাগ্য।
Facebook : https://www.facebook.com/cloud.tv24x7
x (twitter) : https://x.com/cloudTV_NEWS