Bengal Politics SyamaPrasad Mookerjee
ক্লাউড টিভি এক্সক্লুসিভ : ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের এক বছর আগে রাজ্যের রাজনীতি যেন প্রবল ঢেউয়ের মুখে। শিক্ষক নিয়োগ (SSC) কেলেঙ্কারি, ওয়াকফ সংশোধনী ঘিরে বিক্ষোভ, মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং সবশেষে পহেলগাঁও হামলার প্রতিবাদ দমন—সব মিলিয়ে রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নিজেদের পলিটিক্যাল ন্যারেটিভে নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে, যা আগামী ভোটে তাদের প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে।
বিজেপি এবার নিজেদের ‘বঙ্গের নিজস্ব দল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নাম ও উত্তরাধিকারকে সামনে রেখে বিজেপি এমন এক রাজনৈতিক ন্যারেটিভ গড়ে তুলছে, যাতে কংগ্রেস, সিপিআই(এম) এবং বর্তমান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)-কে একটি ধারাবাহিক রাজনৈতিক ভুল হিসেবে তুলে ধরা যায়। এর মাধ্যমে তারা মমতা ব্যানার্জির বহিরাগত (‘বহিরাগত’) অভিযোগকে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় করতে চাইছে—যা ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল।
বঙ্গজয়ে বিজেপির ভরসা সেই হিন্দুত্ব-মমতা বিরোধিতায়, ২৬ এ চিড়ে ভিজবে?
তিলক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য তামিলনাড়ুর মন্ত্রীর, দলীয় পদ থেকে সরিয়ে কড়া বার্তা স্ট্যালিন সরকারের
শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির ফলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬,০০০ শিক্ষককে বরখাস্ত করার ঘটনা রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এটি শুধু চাকরিপ্রার্থীদের নয়, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যেও গভীর ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। বিজেপি এই ঘটনাকে শাসকদলের প্রশাসনিক দুর্নীতির প্রতীক হিসেবে তুলে ধরছে।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন ঘিরে রাজ্যে যে উত্তেজনা ও সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি হয়েছে, তাতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে করে আসা অভিযোগ—তৃণমূল সংখ্যালঘু তোষণে ব্যস্ত—নতুন করে প্রাসঙ্গিকতা পাচ্ছে। মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক সহিংসতাও এই অভিযোগকে জোরদার করেছে।
কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার পর রাজ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমর্থনে আয়োজিত বিক্ষোভগুলিকে দমন করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য প্রশাসন। এই পদক্ষেপ জনমনে ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দেয়। বিজেপি এই ক্ষোভকে রাজনৈতিক সমর্থনে রূপান্তর করতে তৎপর।২০২৬ সালের ভোটকে ইতিমধ্যেই ‘রাজনৈতিক এল-ক্লাসিকো’ বলা হচ্ছে। একদিকে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি, যারা সারা দেশে নির্বাচন-পরবর্তী একের পর এক সাফল্য অর্জন করেছে। অপরদিকে, মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস, যিনি রাজ্যে এখনো শক্তিশালী অবস্থানে আছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনের ফল শুধু রাজ্যের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে না, বরং ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থিতা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
বিজেপির নতুন বর্ণনাভিত্তিক কৌশল, জনঅসন্তোষের ঢেউ, এবং তৃণমূলের চাপে থাকা অবস্থান—সব মিলিয়ে আগামী বছর বাংলার রাজনীতির ময়দান উত্তেজনায় ঠাসা থাকবে তা বলাই যায়।
#Bengal2026 #BJPvsTMC #MamataVsModi #BengalPolitics #NarrativeBattle
আরও পড়ুন :
মোদীর কড়া বার্তা পাকিস্তানকে: “রক্ত ও জল একসাথে প্রবাহিত হতে পারে না”
বিরাট কোহলির টেস্ট অবসর: হৃদয় ছুঁয়ে গেল কিংবদন্তিদের শ্রদ্ধা ও সমর্থনের বার্তা