ChenabBridge
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের রেইসি জেলায় উদ্বোধন করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলসেতু – চেনাব রেলব্রিজ (ChenabBridge)। ৩৫৯ মিটার উচ্চতার এই সেতু আইফেল টাওয়ারের চেয়ে ৩৫ মিটার বেশি উঁচু। এ যেন প্রকৌশল দক্ষতা, আধুনিক ভারতের উন্নয়নের প্রতীক। কিন্তু এই ‘অর্জন’ই এখন পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে।
অবস্থান: চেনাব নদীর ওপর, কাশ্মীর উপত্যকা সংযোগকারী অংশে
উচ্চতা: ৩৫৯ মিটার (আইফেল টাওয়ারের তুলনায় বেশি)
দৈর্ঘ্য: ১,৩১৫ মিটার
ব্যয়: ₹১৪০০ কোটি
নির্মাণকাল: প্রায় ২০ বছর ধরে ধাপে ধাপে কাজ সম্পন্ন
উপকার: জম্মু-বারামুলা রেললাইন সংযোগ, সেনা সরবরাহ সহজ, পর্যটন বৃদ্ধি
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
“আজকের দিন ভারতের প্রযুক্তি ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। এতদিন কাশ্মীর বঞ্চিত ছিল, আজ তাকে আধুনিক রেল যোগাযোগের সঙ্গে যুক্ত করছি।”
তিনি আরও দাবি করেন, এই সেতু কেবল ভৌগোলিক সংযোগ নয়, এটি কাশ্মীরকে ভারতের মূলস্রোতে আনার একটি পদক্ষেপ।
মাদাম তুসোতে প্রিন্সেস কেট মিডলটনের নতুন মূর্তি: ভবিষ্যৎ রানির সম্মানার্থে এক রাজকীয় শ্রদ্ধা
“‘অনেকের ঘুম উড়ে যাবে’: বিরোধী INDIA জোটকে কটাক্ষ মোদির, জবাব দিলেন শশী থারুর”
বিরোধীদের দাবি, এই উদ্বোধন একপ্রকার “ভোট বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা”।
রাহুল গান্ধী বলেছেন:
“একটি ব্রিজ তৈরি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কাশ্মীরের ছাত্র-যুবকদের চাকরি নেই, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আসল উন্নয়নের অভাব আছে।”
তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন:
“মোদি সরকার বিজ্ঞাপনবাজি করছে। কাশ্মীরের মানুষের প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গে এই ব্রিজের কতটা সম্পর্ক?”
চেনাব সেতু ((ChenabBridge)) নির্মাণে বহু গ্রাম উচ্ছেদ হয়েছে। বহু পরিবার এখনও ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে অভিযোগ।
স্থানীয় এক কৃষক বলেন:
“আমাদের ঘর গেছে, জমি গেছে। কিন্তু এখনো রেললাইনে উঠতে পারি না।”
পরিবেশবিদ মীনাক্ষী মেনন বলেন:
“চেনাব নদীর জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে। প্রকল্প অনুমোদনের সময় কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত মূল্যায়ন হয়নি।”
চেনাব ব্রিজ শুধু যাত্রী নয়, কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সেনাবাহিনী এখন দ্রুত লাদাখ সীমান্তে রসদ ও জওয়ান পাঠাতে পারবে। এ ছাড়াও পর্যটনের সম্ভাবনা বাড়বে কাশ্মীরে।
তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে – এই সেতু সাধারণ কাশ্মীরিদের জন্য নাকি শুধু সেনা ও পর্যটক কেন্দ্রীক এক অবকাঠামো?
নির্বাচনের আগে মোদির এই বড় ঘোষণা অনেকের চোখে “পলিটিক্যাল মাস্টারস্ট্রোক”। কাশ্মীর নিয়ে জাতীয়তাবাদের আবেগ উসকে দিয়ে ভোট বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করছেন কিনা, তা নিয়েও জোর জল্পনা। তবে উন্নয়নের নামে কাশ্মীরিদের যদি বাস্তব সুবিধা না মেলে, তাহলে এই সেতুও হতে পারে “পোস্টার বয়”-এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
আরও পড়ুন :
দারিদ্র দূরীকরণে বিশ্বব্যাঙ্কের স্বীকৃতি: ভারতের দশকে বড় সাফল্য
পাকিস্তানে ৪৪% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে, চরম দারিদ্র্যে ভুগছে ৪ কোটির বেশি