ImranKhanFamilyProtest
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: পাকিস্তানে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানের আন্দোলনে এবার সরাসরি যোগ দিতে চলেছেন তার দুই ছেলে সুলাইমান ও কাসিম। তারা যুক্তরাজ্য থেকে ফিরে এসে এই আন্দোলনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন ইমরান খানের বোন আলিমা খান (ImranKhanFamilyProtest)।
বুধবার (৯ জুলাই) আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আলিমা খান বলেন, “ইমরান খান খুব স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, আলোচনার কোনো পথ আর খোলা নেই। তিনি এখন সম্পূর্ণ প্রতিবাদ আন্দোলনের রাস্তায় হাঁটবেন। তার এই আন্দোলন ৫ আগস্ট চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে।”
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট তার কারাবাসের দুই বছর পূর্ণ হবে।
আলিমা জানান, “ইমরান খানের বার্তা খুবই কঠোর— ‘এই আন্দোলনে যারা পুরোপুরি আস্থা রেখে এগোতে পারবে না, তাদের এখনই সরে যেতে হবে।’ তিনি চান, যারা প্রকৃতভাবেই পাকিস্তানের গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পক্ষে, তারাই আন্দোলনের মূল অংশ হোক।”
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, ইমরান খানের ব্যক্তিগত জীবন বরাবরই রাজনীতি থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। তার দুই ছেলে সুলাইমান ও কাসিম ব্রিটেনে পড়াশোনা ও পেশাগত জীবন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু পিতার সঙ্গে যে অবিচার হচ্ছে বলে পিটিআই নেতারা দাবি করে আসছেন, এবার সেই প্রতিবাদে সক্রিয় ভূমিকা নিতে চলেছেন তার ছেলেরা। এমন সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের রাজনীতিতে বড় এক মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের মত।
আন্দোলনের সম্ভাব্য পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী কয়েক সপ্তাহে পাকিস্তানজুড়ে পিটিআই কর্মীদের মধ্যে ‘জাগরণ’ তৈরি করার লক্ষ্যে র্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করা হবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবেন ইমরানের দুই ছেলে, যারা প্রথমবার প্রকাশ্যে দলের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশ নেবেন।
পিটিআইয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “সুলাইমান এবং কাসিম বর্তমানে যুক্তরাজ্যে থাকলেও, তারা শিগগিরই পাকিস্তানে আসবেন এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন। দলীয় নেতাদের সঙ্গে তারা ইতিমধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন এবং নানা কৌশলগত দিক নিয়ে আলোচনা চলছে।”
আদিয়ালা জেলে ইমরান খানের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ: রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
অন্যদিকে, পাকিস্তান সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সরকারের এক অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট ঘিরে ব্যাপক সতর্কতা জারি রাখা হবে, কারণ ইমরান খানের জনপ্রিয়তা জনসমর্থনের রূপ নিতে পারে যেকোনো মুহূর্তে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে তোশাখানা মামলাসহ একাধিক দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, তার বিরুদ্ধে এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি ইমরান খানের দুই ছেলে সত্যি মাঠে নামেন, তবে সেটি পিটিআই সমর্থকদের জন্য বড় এক অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে। অনেকেই মনে করছেন, এই আন্দোলন শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নয়, এটি হতে চলেছে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই।
আরও পড়ুন :
ধর্মান্তর র্যাকেটের চক্রে কোটি টাকার সাম্রাজ্য! ‘চাঙুর বাবা’ কে, কীভাবে গড়লেন এই নেটওয়ার্ক?