Breaking News

নরেন্দ্র কাপ বিজেপি

‘নরেন্দ্র কাপ’ ফুটবল টুর্নামেন্ট রাজ্যে—২১ দিনব্যাপী প্রতিভা সন্ধান রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে

বঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রামের ফুটবলপ্রেমীদের সামনে সুযোগ “নরেন্দ্র কাপ” দিয়ে—১১ সেপ্টেম্বর শুরু, ১৭ সেপ্টেম্বর শেষ। পুরস্কার নয়, প্রতিভা চাইছে বিজেপি।

নরেন্দ্র কাপ ফুটবল: ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি সামলাতে বিজেপির নতুন কৌশল

নরেন্দ্র কাপ বিজেপি কৌশল

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ভোট মানেই উত্তেজনা, সংঘর্ষ এবং পরবর্তী অশান্ত পরিস্থিতির আশঙ্কা। বিশেষত বিজেপি গত কয়েক বছরে বহুবার অভিযোগ করেছে যে, ভোটের ফল ঘোষণার পর তাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। সেই প্রেক্ষাপটে এবার ভিন্ন কৌশল নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। শুধু প্রচারে সীমাবদ্ধ না থেকে তারা এবার নামছে মাঠে—খেলার মাঠে। রাজ্যজুড়ে আয়োজন করা হচ্ছে ‘নরেন্দ্র কাপ’ ফুটবল প্রতিযোগিতা।

কেন এই উদ্যোগ?

দলীয় নেতৃত্বের দাবি, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। সংগঠনের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হলে খেলাধুলার মতো সামাজিক উদ্যোগ কার্যকর হতে পারে। বিজেপি সূত্রে খবর, মণ্ডল ও ব্লক স্তর থেকে ১৫–২০ জন যুবককে নিয়ে দল তৈরি করা হচ্ছে। খেলার মাধ্যমে তাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়বে এবং মাঠের কাজেও সেই ঐক্য প্রতিফলিত হবে।

“আমি চাই দল ঐক্যবদ্ধ থাকুক। তাই ব্যক্তিগত স্বার্থ বাদ দিয়ে আমি দায়িত্ব ছাড়ছি।”

মোদি–পুতিন–শি জিনপিং বৈঠক: এসসিও শীর্ষ সম্মেলনের আগে বৈশ্বিক কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২১ সালের অভিজ্ঞতা বিজেপিকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করেছে। তখন ভোটের পর দলীয় কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল। এবার দল আগে থেকেই যুবসমাজকে একত্রিত করে সম্ভাব্য উত্তেজনা সামলাতে চাইছে।

কোথায়, কবে, কত দল?

প্রতিযোগিতা শুরু হবে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং চলবে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। রাজ্যের ৪৩টি সাংগঠনিক জেলায় একযোগে ম্যাচ হবে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১,৩০০’র বেশি দল ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়েছে। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, প্রত্যেক জেলায় খেলা হবে। ফুটবলপ্রেমী বাংলার আবেগকেও কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি।

নামকরণ: কেন ‘নরেন্দ্র কাপ’?

এই নামের মধ্যেই রয়েছে দ্বৈত বার্তা। স্বামী বিবেকানন্দ যিনি জন্মেছিলেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত হিসেবে—তার স্মৃতি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা—দুটিকেই যুক্ত করে প্রতিযোগিতার নাম দেওয়া হয়েছে ‘নরেন্দ্র কাপ’।

দলীয় নেতৃত্বের যুক্তি, “মোদি কাপ” বলা যেত, কিন্তু বিবেকানন্দের ভাবধারাকে সামনে রেখে নাম রাখা হয়েছে। এর ফলে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতীক একসঙ্গে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে।

পুরস্কার ও আকর্ষণ

প্রতিটি জেলা পর্যায়ে বিজয়ী দলকে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা, রানার-আপ পাবে ২৫ হাজার টাকা এবং সেমিফাইনালে ওঠা দল পাবে ১৫ হাজার টাকা। ফলে শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করাও হচ্ছে।

তবে বিজেপির বক্তব্য—এটি কেবল প্রতিযোগিতা নয়, বরং ‘প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতা’। দলীয় ঐক্য ও যুবশক্তিকে কাজে লাগানোর এক অভিনব পদ্ধতি।

রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই আলোড়ন তৈরি করেছে এই পদক্ষেপ। বিরোধীরা বলছে, বিজেপি আসলে খেলাধুলার নামে রাজনীতিকে মাঠে নামাচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপির বক্তব্য, “এটি একেবারেই অরাজনৈতিক। রাজনীতির বাইরে থেকে ক্রীড়ার মাধ্যমে আমরা যুবকদের একত্রিত করতে চাই।”

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটের আগে এমন উদ্যোগ আসলে একটি ‘সফট পাওয়ার’ কৌশল। সরাসরি রাজনৈতিক প্রচার নয়, বরং সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করা।

বাংলার মাটিতে ফুটবল শুধুই খেলা নয়, আবেগ। সেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে এবার বিজেপি ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চাইছে। ‘নরেন্দ্র কাপ’ কেবল একটি টুর্নামেন্ট নয়, এটি দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনারই প্রতিফলন।

আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ফাইনাল ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই আয়োজন। দিনটি আবার নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন। তাই প্রতিযোগিতার নাম ও শেষ দিনের প্রতীকী তাৎপর্য—সব মিলিয়ে একে ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক উত্তাপ।

আরও পড়ুন :

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড ছুঁয়েছেন রোনাল্ডো, এক ধাপ দূরে একক মালিকানা

বার্সেলোনা ক্লাব নির্বাচনে নামতে পারেন মেসি, বিপাকে বর্তমান সভাপতি লাপোর্তা

ad

আরও পড়ুন: