Breaking News

নেপাল কার্ফু মোদীর শান্তির আর্জি

নেপালে হিংসার জেরে গোটা দেশজুড়ে কার্ফু, শান্তির আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

নেপালে হিংসার জেরে জারি হলো কার্ফু। উদ্বিগ্ন ভারতও। প্রধানমন্ত্রী মোদী শান্তির আর্জি জানালেন। সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার।

নেপাল কার্ফু: হিংসার মাঝেই শান্তির আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

নেপাল কার্ফু মোদীর শান্তির আর্জি

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনা নতুন মোড় নিল। দেশজুড়ে চরম পরিস্থিতির জেরে গোটা নেপাল জুড়ে কার্ফু জারি করা হয়েছে। প্রশাসন ঘোষণা করেছে, আজ অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু কার্যকর হবে। এই পদক্ষেপ কার্যত দেশের নাগরিক জীবনে বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছেন, নেপালে যে হিংসার ঘটনা ঘটছে, তা হৃদয়বিদারক। একই সঙ্গে তিনি নেপালের জনগণের উদ্দেশে শান্তির বার্তা দিয়েছেন। মোদীর ভাষায়, প্রতিবেশী দেশের স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের হবে।

নেপালে উত্তাল তরুণ প্রজন্ম: সংসদ চত্বরে পুলিশের গুলি, নিহত অন্তত ১

“হামি নেপাল” নামে একটি সিভিক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ৩৬ বছরের সুদন গুরুঙ এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন Gen Z নেপালের রাজনীতিতে নতুন শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে

নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু গত কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষে উত্তপ্ত ছিল। তবে এবার শুধু রাজধানী নয়, পরিস্থিতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দোকানপাট বন্ধ, রাস্তায় নেমেছে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী। মানুষের স্বাভাবিক জীবন কার্যত থমকে গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে ঘরের বাইরে না বেরোনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, নেপালের অস্থিরতা সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্যগুলোকেও প্রভাবিত করছে। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা এখন প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে রয়েছে। ডিজি রাজীব কুমার সরাসরি দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন, এবং সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। পানিট্যাঙ্কি এলাকা ও অন্যান্য সীমান্ত চৌকি গুলিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠছে, নেপালের অশান্ত এলাকা থেকে কিছু উন্মত্ত জনতা ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে। তাই সীমান্তে রীতিমতো সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীও রাজ্যের পুলিশকে সহায়তা করছে। বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের উপর।

পরিস্থিতি ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। ব্যবসায়ী ও পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন। কার্ফু ঘোষণার ফলে সীমান্ত পেরিয়ে বাণিজ্য কার্যত থমকে গেছে। ভারত-নেপাল সড়ক যোগাযোগেও দেখা দিয়েছে বিঘ্ন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত তাদের বড় ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নেপালের এই অস্থিরতা শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ সংকট নয়, বরং এটি আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্যও উদ্বেগজনক। ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশের ওপর এর সরাসরি প্রভাব পড়তে বাধ্য। তাই প্রধানমন্ত্রী মোদীর শান্তির আর্জি শুধু কূটনৈতিক নয়, বরং এটি ভারতের নিরাপত্তা রক্ষারও একটি বড় পদক্ষেপ।

অন্যদিকে, নেপালের সাধারণ মানুষ এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, বাজার অচল, চিকিৎসা পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, দীর্ঘস্থায়ী কার্ফু সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে গভীর সঙ্কট তৈরি করবে।

সবমিলিয়ে, নেপালের উত্তপ্ত পরিস্থিতি গোটা দক্ষিণ এশিয়াকেই উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছে। শান্তিপূর্ণ সমাধান ছাড়া এই সঙ্কট কাটবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগের মধ্যে নেপালের রাজনৈতিক নেতৃত্ব কীভাবে এই সঙ্কট মোকাবিলা করে।

আরও পড়ুন :

মালদহে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা: পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পথে নিহত ২ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

“ঘনিষ্ঠ বন্ধু, স্বাভাবিক অংশীদার”: ট্যারিফ বিরোধের মাঝেই মোদি-ট্রাম্পের বাণিজ্য আলোচনায় আশার সুর

ad

আরও পড়ুন: