Breaking News

Nepal Protests Oli Resign President House Fire

নেপালে জনরোষে দাবানল: প্রেসিডেন্ট ভবনে আগুন, প্রাচণ্ডের বাড়িতে ভাঙচুর, ওলির ইস্তফা দাবি

নেপালে ‘Gen-Z আন্দোলন’ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা, পাশাপাশি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডের বাড়িতেও ভাঙচুর চালিয়েছে। সামাজিক মাধ্যম নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির প্রতিবাদ থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন এখন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা দাবিতে রূপ নিয়েছে।

Nepal Protests Oli Resign President House Fire Explained

Nepal Protests Oli Resign President House Fire

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : নেপালে চলমান ‘Gen-Z আন্দোলন’ ক্রমেই তীব্র আকার নিচ্ছে। মূলত সামাজিক মাধ্যম নিষেধাজ্ঞা ও সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকেই এই প্রতিবাদের সূচনা। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে, আন্দোলন ততই বিস্তার লাভ করছে এবং এখন তা নেপালের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।

সোমবার রাতে রাজধানী কাটমান্ডু ও আশপাশের এলাকায় হঠাৎ করে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। বিক্ষুব্ধ জনতা প্রেসিডেন্ট ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ‘প্রচণ্ড’-এর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিউনিকেশন মিনিস্টারের বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

ভয়াবহ গণআন্দোলন, সেনা মোতায়েন – নিহত অন্তত ১৯ : অবশেষে নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান প্রত্যাহার

নেপালে উত্তাল তরুণ প্রজন্ম: সংসদ চত্বরে পুলিশের গুলি, নিহত অন্তত ১

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাটমান্ডু, লালিতপুর ও ভক্তপুর জেলায় কঠোর কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী রাস্তায় নেমেছে, একাধিক জায়গায় টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ ব্যবহার করা হয়েছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, আন্দোলনে ইতিমধ্যেই অন্তত ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এই মৃত্যুর ঘটনার পর ক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।

আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সামাজিক মাধ্যম নিষেধাজ্ঞা। গত সপ্তাহে ওলি সরকার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ঘোষণা দেয়। সরকার দাবি করেছিল, ভুয়ো খবর ও উস্কানিমূলক প্রচার ঠেকাতেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম ও নাগরিক সমাজের এক বড় অংশ মনে করে, এটি আসলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

বিক্ষোভকারীরা এখন শুধু সামাজিক মাধ্যম উন্মুক্ত করার দাবিতেই সীমাবদ্ধ নেই। তারা বলছে, বর্তমান সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত ও জনবিচ্ছিন্ন। তাই প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলিকে পদত্যাগ করতে হবে।

রাজনৈতিক চাপও দ্রুত বাড়ছে। রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা পার্টি ও আরও কয়েকটি রাজনৈতিক শক্তি প্রকাশ্যে ওলির পদত্যাগ দাবি করেছে। তাদের অভিযোগ, সরকার আন্দোলন দমন করতে গিয়ে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে, যার ফলে প্রাণহানি ঘটেছে।

বিক্ষোভের চাপের মুখে নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রী প্রাদীপ পাউডেলও দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, একের পর এক মন্ত্রীর পদত্যাগ ওলির অবস্থানকে আরও দুর্বল করে দিচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট ভবন ও প্রাচণ্ডের বাড়িতে সরাসরি হামলা এই বার্তা দিচ্ছে যে আন্দোলন এখন আর কেবলমাত্র তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভ নয়, বরং সার্বিক রাজনৈতিক অবিশ্বাসে রূপ নিয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করছে, দুর্নীতি, বেকারত্ব, এবং নাগরিক স্বাধীনতা হরণ—সব কিছুর দায় সরকারের।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এই অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী হলে নেপালের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে, কারণ প্রতিবেশী ভারত ও চীন উভয়েই নেপালের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় কৌশলগতভাবে আগ্রহী।

আরও পড়ুন :

‘যে ঝামেলা পাকাচ্ছে, সে আবার শান্তিতে পুরস্কার চাইছে’—বিগ বস মঞ্চে ভাইজানের তির্যক মন্তব্যে ভাইরাল বিতর্ক

মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন পাকিস্তানের খেলোয়াড় মাখা জাট

ad

আরও পড়ুন: