Pakistan Bans Indian Singers
৩ মে ২০২৫ (ক্লাউড টিভি): ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েন নতুন কিছু নয়। তবে এবারের উত্তেজনা পৌঁছেছে এমন এক পর্যায়ে, যেখানে শুধু কূটনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক সম্পর্কও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক কাশ্মীর হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই, পাকিস্তান সরকার বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে—দেশের সব এফএম রেডিও স্টেশনে ভারতীয় গান বাজানো (Pakistan Bans Indian Singers) এখন থেকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই সিদ্ধান্ত গত ১ মে পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জারি হওয়া এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং সাথে সাথেই কার্যকর করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।” যদিও স্পষ্ট করে কোনো হামলার কথা বলা হয়নি, বিশ্লেষকরা বলছেন—কাশ্মীরের সাম্প্রতিক হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতিই এই পদক্ষেপের মূল কারণ।
পাকিস্তান সম্প্রচার সংঘের (PBA) মহাসচিব শাকিল মাসুদ (Pakistan Bans Indian Singers) বলেন, “লতা মঙ্গেশকর, মোহাম্মদ রফি, কিশোর কুমার, মুকেশ—এই নামগুলো শুধু ভারত নয়, পাকিস্তানের হাজারো মানুষের নস্টালজিয়ার অংশ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের ভেতর রাষ্ট্রীয় ঐক্য অগ্রাধিকার।”
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ এই সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, “এটা দেশপ্রেমের প্রতীক, দেশের সংস্কৃতির ওপর বিদেশি প্রভাব রোধ করাও জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “পিবিএ-এর এই পদক্ষেপ কঠিন সময়ে দেশের রাষ্ট্রীয় চেতনা দৃঢ় করার একটি প্রতীক।”
তবে এই সিদ্ধান্তে (Pakistan Bans Indian Singers) শুধু সরকার নয়, সাধারণ শ্রোতারাও মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, সংস্কৃতি ও সংগীত কখনোই কূটনৈতিক উত্তেজনার বলি হওয়া উচিত নয়। একজন নেটিজেন টুইটারে লিখেছেন, “রাজনীতি তাদের কাজ করুক, আমরা অন্তত সংগীতের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারি না?”
এর আগেও নানা সময়ে ভারতীয় টিভি সিরিয়াল, বলিউড সিনেমা কিংবা গান পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ও ইউটিউবের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সেইসব উপকরণ গ্রহণ করে এসেছে। এমনকি ভারতেও পাকিস্তানি গজল শিল্পী গুলাম আলি কিংবা পপ তারকা আলি জাফরের জনপ্রিয়তা কম নয়।
৬৩,০০০ কোটি টাকার রাফালে মেরিন চুক্তি: ভারতের নৌসেনার আধুনিকীকরণে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ
কাশ্মীর হামলা: পিএসএল দেখানো বন্ধ করল ভারতীয় প্লাটফর্ম, ক্রিকবাজও তথ্য মুছে দিল
এই ঘটনার এক সপ্তাহ আগেই পাকিস্তানের জনপ্রিয় তারকা হানিয়া আমির, মাহিরা খান ও আলি জাফরের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ভারতে দেখা যাচ্ছিল না। ফলে একে একে ভেঙে পড়ছে দুই দেশের ‘সাংস্কৃতিক সংযোগের ব্রিজ’।
বহু বছর ধরেই সঙ্গীত, সিনেমা ও নাটকের মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ, নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া সেই সেতুবন্ধকে ভেঙে ফেলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক সম্পর্ক যতই খারাপ হোক, সংস্কৃতির জায়গাটা যেন আলাদা রাখা হয়। কারণ, কূটনীতি যেটা পারছে না, সঙ্গীত বা সিনেমা সেটাই করেছে—দুই দেশের মানুষকে এক সুতোয় বাঁধা।
#IndiaPakistan #CulturalBan #IndianMusicBan #PBA #TeesriJung #KashmirTensions #LataMangeshkar #MusicHasNoBorders #SouthAsianPolitics #SanskritikSambandho
আরও পড়ুন :
বালুচ বিদ্রোহ: পাকিস্তানের মঙ্গোচের শহর দখলে, গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা
জাতিগত জনগণনা নিয়ে তেজস্বীর প্রশ্ন—‘এই তথ্য কি শুধু আর্কাইভেই বন্দী থাকবে?’