ShuvenduAdhikari WestBengalPolitics
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | শান্তনু কর্মকার : প্রকৃত উন্নয়ন, প্রকৃত পরিবর্তনের কথা বলে শুক্রবার দুর্গাপুর থেকে তৃণমূলকে বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে শুক্রবারের সভায় শুধু মোদী নন, প্রধানমন্ত্রীর আগে বক্তব্য রেখেছিলেন বিজেপির নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। এর মধ্যে শমীকের বক্তব্যে “জয় শ্রী রাম” ধ্বনি স্থান না পেলেও শুভেন্দু বক্তব্য শুরুই করেছিলেন রামনাম করে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মতে, বাঙালি অস্মিতায় শান দিয়ে যে ২৬-র ভোট বৈতরণী পেরোতে চাইছেন মমতা, সম্প্রতি আকারে-ঈঙ্গিতে প্রতিটি কাজের মাধ্যমে সেই ‘ন্যারেটিভ’ ভাঙতে চাইছে গেরুয়া শিবির। দেখা যাচ্ছে, বঙ্গে বিজেপির এই পরিবর্তিত পার্টি লাইনেই যেন মানিয়ে নিতে পারছেন না শুভেন্দু।
রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই দক্ষ সংগঠক এবং সুবক্তা হিসেবে পরিচিত শুভেন্দু অধিকারী। তবে প্রথমে কংগ্রেস এবং পরে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে সেই অর্থে কখনোই রেজিমেন্টেড দলে কাজ করেননি শুভেন্দু। তৃণমূলে মমতার পর তিনিই ছিলেন দলের সর্বেসর্বা, কাজেই সেকেন্ড ইন কম্যান্ডের বক্তব্যও পার্টি লাইন বলে মেনে নিতে বাধ্য ছিলেন কর্মীরা। ২০২১ সালে বিজেপিতে এলেন, এসে রাজ্যে ভরাডুবির মাঝেও নন্দীগ্রামে হারালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দিলীপ-সুকান্ত থাকলেও ২০২১ থেকে এখনও অবধি তিনিই মূলত বিজেপির প্রধান বক্তা। বক্তব্য রাখলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেয়ে যায় সেই ক্লিপিংস, পাঞ্চলাইন হেডলাইনে পরিণত হয়। এহেন এক ব্যক্তিত্বকে যদি রাতারাতি বক্তব্যে কিছু অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে বলা হয়, তাহলে সমস্যা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেই কারনেই দুর্গাপুরেও ‘হীরক রানি বাই বাই’ ‘চোর মমতা হায় হায়’ ধ্বনি তুলে নম্বর বাড়িয়ে নিতে চাইলেন ‘বস’ মোদীর সামনে।
নেতার ছবি নয়, এবার শুধু দলীয় প্রতীক: বিজেপি অফিসে ব্যাকড্রপে বদল ‘ব্যক্তিনির্ভরতা’ কমানোর কথা বলছে
অন্যদিকে শমীক আবার মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকা অবস্থাতেই ‘সংঘর্ষ নয় সমন্বয় চাই’ বলে বাম-কংগ্রেস কর্মীদের কাছে টানার চেষ্টা করলেন। স্পষ্ট বললেন, “ক’দিনের জন্য ঝান্ডার রঙটা ভুলুন। প্রথমে প্রয়োজন তৃণমূলকে সরানো, তারপর নিজেদের দলে ফিরে যাবেন”। জনতার সামনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করলেন, ষাটের দশকের দুর্গাপুর ফিরিয়ে দেওয়ার। একেবারে ছেলেবেলা থেকে আরএসএসে যোগ দেওয়া শমীক জানেন, লোকাল ক্যুইজিন বুঝে বক্তব্যে নুন-মশলার অল্প হেরফের স্বাদে কতটা বদল আনতে পারে।
এমনিতেই শুরু থেকে শ্রীরামচন্দ্রকে বহিরাগত বলে আক্রমণ শানিয়ে এসেছে তৃণমূল। বিধানসভা ভোট কাছে আসতেই তাঁদের অভিযোগ বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের হয়রানি। শুক্রবারের জনসভার পর তৃণমূলের তরফে মোদীর কালীনামে বেড়া দেওয়ার চেষ্টাও শুরু হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় শমীকের সঙ্গে শুভেন্দুর বক্তব্যের এই সূক্ষ্ম পার্থক্য যে তৃণমূল এবং তাদের ভোটকুশলী সংস্থার নজর এড়াবে না,তা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়াই যায়।
আরও পড়ুন :
‘তনু ওয়েডস মনু’র সেই ম্যাজিক আবার? পুজোতেই পর্দায় ফিরছেন কঙ্গনা-মাধবন, আসছে ‘সার্কল’
গান্ধীর একমাত্র স্বেচ্ছায় আঁকানো তৈলচিত্র নিলামে আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি