Breaking News

ChinaRussiaIndia SCO2025

মার্কিন চাপের মুখে এক হচ্ছে তিন পরমানু শক্তিধর দেশ : শি-পুতিন-মোদির ঐক্য

তিয়েনচিনে অনুষ্ঠিতব্য সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে এক মঞ্চে উঠবেন শি, পুতিন ও মোদি। মার্কিন শুল্কনীতি ও নিষেধাজ্ঞার জবাবে এই সম্মেলন বৈশ্বিক দক্ষিণের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ChinaRussiaIndia SCO2025: A Crucial Security Summit %%page%% %%sep%% %%sitename%%

ChinaRussiaIndia SCO2025

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : চীনের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দরনগরী তিয়েনচিনে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে  একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলন। এই সম্মেলনের বিশেষ আকর্ষণ হলো এক মঞ্চে দাঁড়াতে (ChinaRussiaIndia SCO2025) চলেছেন বিশ্বের তিন প্রভাবশালী নেতা—চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি, একতরফা নিষেধাজ্ঞা এবং বাণিজ্যিক চাপের মুখে এই সম্মেলন গ্লোবাল সাউথ ঐক্যের এক ঐতিহাসিক প্রতিফলন হতে যাচ্ছে।

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে চীন, রাশিয়া এবং ভারতের পাশাপাশি অংশ নেবেন মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরও ২০টিরও বেশি দেশের নেতারা। ফলে এই আয়োজনে শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তা নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, জ্বালানি সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক ভারসাম্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিও আলোচনায় উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে, তার জবাবে এই সম্মেলনে আন্তর্জাতিক দক্ষিণের দেশগুলি শক্তিশালী অবস্থান প্রদর্শন করবে। বিশেষ করে চীন ও রাশিয়ার জন্য এই সম্মেলন এক বড় সুযোগ, কারণ পশ্চিমা দেশগুলির চাপ সত্ত্বেও তারা মোদি সরকারের সাথে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে দৃঢ় করতে পারবে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য এ মঞ্চ নিঃসন্দেহে একটি বড় কূটনৈতিক বিজয়। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমী  বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ব্যাপকভাবে অবনতি হয়েছে এবং দেশটি কঠোর নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে। তবে এই সম্মেলনে শি জিনপিং ও নরেন্দ্র মোদির পাশে দাঁড়িয়ে পুতিন দেখাতে চাইবেন যে রাশিয়া এখনো বৈশ্বিক কূটনৈতিক খেলায় সক্রিয় ও প্রভাবশালী।

ট্রাম্প কি নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে পারেন? নেতানিয়াহুর মনোনয়ন ঘিরে বিতর্ক ও বাস্তবতা

আবারও গাজার দরজায় ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক, ট্রাম্পের নেতৃত্বে হোয়াইট হাউসে বৈঠক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চীন সফর বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রায় সাত বছর পর তিনি চীন সফরে যাচ্ছেন। ২০২০ সালে সীমান্ত সংঘাতের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক ছিল গভীরভাবে উত্তেজনাপূর্ণ। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সীমান্তে উত্তেজনা কমানো এবং সীমিত মাত্রায় সহযোগিতা পুনরুদ্ধারের যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা এই সফরকে নতুনভাবে গুরুত্ব দিয়েছে।

চীন-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হলো সীমান্ত সংকট। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, শি-মোদির বৈঠকে সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার, বাণিজ্যিক ছাড় এবং ভিসা নীতি সহজীকরণের মতো বিষয় নিয়ে অগ্রগতি হতে পারে। যদি এমন কোনও ঘোষণা আসে, তবে তা শুধু দুই দেশের সম্পর্ক নয়, বরং গোটা এশিয়ার ভূরাজনীতিতেই নতুন বার্তা দেবে।

চীন ও ভারতের পাশাপাশি রাশিয়ার উপস্থিতি এ সম্মেলনে একটি ত্রিমুখী জোটের ধারণা তৈরি করছে। যদিও ভারত অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে, তবে মার্কিন শুল্কনীতি ও বাণিজ্যিক চাপ ভারতের জন্যও সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই মোদি সরকারের জন্যও এই সম্মেলন হবে কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার একটি মঞ্চ।

অন্যদিকে, চীন এই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাইছে যে তারা শুধু এশিয়ার নয়, বরং বৈশ্বিক দক্ষিণের এক নেতৃত্বস্থানীয় শক্তি। রাশিয়া, ভারত এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের নেতাদের নিয়ে এক মঞ্চে শি জিনপিংয়ের উপস্থিতি নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের উদ্দেশে এক কৌশলগত বার্তা।

সবশেষে বলা যায়, তিয়েনচিনে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলন শুধু একটি কূটনৈতিক অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিতবাহী। যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা পদক্ষেপের জবাবে বৈশ্বিক দক্ষিণ এক হচ্ছে—এমন বার্তাই এই সম্মেলন থেকে ছড়িয়ে পড়ছে।

আরও পড়ুন :

বেইজিং সামরিক কুচকাওয়াজে উপস্থিত থাকবেন পুতিন-কিম : ইউরোপের একমাত্র প্রতিনিধি স্লোভাকিয়ার রবার্ট ফিকো

আবারও গাজার দরজায় ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক, ট্রাম্পের নেতৃত্বে হোয়াইট হাউসে বৈঠক

ad

আরও পড়ুন: