TrumpDynasty
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে আবারও মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে রাজনৈতিক বংশতন্ত্র। ২০শতকের কেনেডি, ২১শতকে বুশ এবং ক্লিনটনের মতো প্রভাবশালী পরিবারগুলোর পর এবার স্পটলাইটে ট্রাম্প পরিবার (TrumpDynasty)। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ না হতেই সামনে আসছে তাঁর দ্বিতীয় পুত্র এরিক ট্রাম্পের নাম। সরাসরি প্রেসিডেন্সি নয়, কিন্তু তাঁর মন্তব্য, আত্মবিশ্বাস ও রাজনৈতিক উচ্চাশা আগামী দিনের মার্কিন রাজনীতিতে ‘ট্রাম্প ২.০’ বর্ণনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সম্প্রতি Financial Times–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরিক ট্রাম্প বলেন,
“আমি যদি সিদ্ধান্ত নিই, হোয়াইট হাউজের পথে এগোতে, সেই রাস্তাটা আমার জন্য কঠিন হবে না। আমি বিশ্বাস করি, আমি এটা করতে পারি। আমাদের পরিবারের আরও অনেকে পারবে।”
তিনি স্পষ্ট করেন, পারিবারিক রাজনৈতিক পরিচয় তাঁর কাছে বাড়তি সুবিধা নয় বরং দায়িত্ব।
“আমি হতাশ হই আজকের অনেক রাজনীতিবিদকে দেখে। আমি জানি আমি অনেক ভালো করতে পারি।”
এই কথায় অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইতিমধ্যেই অনুমান করছেন, ২০২৮ বা তার পরবর্তী কোনও নির্বাচনে এরিক ট্রাম্প হয়তো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন।
ট্রাম্প পরিবারের রাজনৈতিক যাত্রা ২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি দিয়ে শুরু হলেও তা থেমে নেই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র বহু নির্বাচনী প্রচারে সামনে ছিলেন এবং রক্ষণশীল গণমাধ্যমে সরব কণ্ঠস্বর।
ইভাঙ্কা ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং আন্তর্জাতিক স্তরে মার্কিন প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
এরিক ট্রাম্প এতদিন ছিলেন পারিবারিক ব্যবসা ‘Trump Organization’-এর সহ-সভাপতি হিসেবে। তবে সম্প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, তিনি রাজনীতিতে সরাসরি প্রবেশে আগ্রহী।
জার্মানিতে বড় পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে: অভিবাসী পরিবারই প্রধান চালক
মার্কিন ইতিহাসে বংশগত রাজনৈতিক প্রভাব নতুন নয়:
কেনেডি পরিবার: জন এফ. কেনেডি ৩৫তম প্রেসিডেন্ট, তাঁর ভাই রবার্ট কেনেডি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনেটর। পরবর্তী প্রজন্মের সদস্যরাও রাজনীতিতে সক্রিয়।
বুশ পরিবার: জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ (৪১তম প্রেসিডেন্ট) এবং তাঁর পুত্র জর্জ ডব্লিউ. বুশ (৪৩তম প্রেসিডেন্ট) – দুই প্রজন্মেই হোয়াইট হাউজ দখলে রেখেছিল।
ক্লিনটন পরিবার: বিল ক্লিনটন ছিলেন ৪২তম প্রেসিডেন্ট এবং স্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সেনেটর এবং প্রেসিডেন্ট প্রার্থীও।
এই ধারায় এবার যুক্ত হতে চলেছে ট্রাম্প পরিবার (TrumpDynasty), যারা রাজনীতির বাইরের ব্যবসায়ী পরিচয় থেকে উঠে এসেও আমেরিকার ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প পরিবারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ গঠিত হতে পারে কয়েকটি স্তরে:
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্তরাধিকার:
তাঁর জনপ্রিয়তা এখনও শক্তিশালী। এরিক বা ডোন জুনিয়রের প্রার্থিতার ক্ষেত্রে তা বড় সহায়।
ট্রাম্প ব্র্যান্ড এবং মিডিয়া সাম্রাজ্য:
রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং মিডিয়া পরিসরে ট্রাম্প পরিবার বিশাল প্রভাব রাখছে, যা নতুন প্রজন্মের জন্য পুঁজি হতে পারে।
জনপ্রিয় রক্ষণশীল অ্যাজেন্ডা:
সীমান্ত নিরাপত্তা, কর সংস্কার, মধ্যবিত্তের প্রতীক হিসেবে ট্রাম্প পরিবারের ভাবমূর্তি এখনও অনেক ভোটারকে প্রভাবিত করে।
এরিক ট্রাম্পের মন্তব্যে স্পষ্ট—ট্রাম্প পরিবারের রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই। বরং, তাঁরা এখন রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের বার্তাটি জনসমক্ষে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ২০২৮ সালের পরে হোয়াইট হাউজ থেকে বিদায়ও নেন, তাঁর পরিবার হয়তো রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থেকে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বুশ, ক্লিনটন, ওবামার পরে এখন প্রশ্ন উঠছে—‘ট্রাম্প যুগ কি এখন এক বংশগত রাজনৈতিক অধ্যায়ে পরিণত হচ্ছে?’
আরও পড়ুন :
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি নিয়ে সন্দেহে তেহরান, সৌদিকে জানানো হল প্রস্তুতির বার্তা
“জন্মভূমিতেও জায়গা নয়?” — মার্কিন সেনেটরের বিতর্কিত প্রস্তাবে উত্তাল নাগরিকত্ব বিতর্ক