TrumpNobelNomination
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন (TrumpNobelNomination) দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহুর দাবি, “বিশ্বজুড়ে শান্তি, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক স্থিতিশীলতায় ট্রাম্পের ভূমিকা অটল ও ব্যতিক্রমী।”
এই মনোনয়নকে কেন্দ্র করে যেমন আশা-আকাঙ্ক্ষার জোয়ার এসেছে ট্রাম্প-সমর্থকদের মধ্যে, তেমনি বিশ্ব রাজনীতি ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নপ্রক্রিয়া প্রতিবছর জানুয়ারিতে শেষ হয়। ফলে জুলাইয়ে নেতানিয়াহুর এই মনোনয়ন এ বছরের (২০২৫) জন্য বৈধ নয়। এটি কার্যকর হতে পারে ২০২৬ সালের পুরস্কারের বিবেচনায়।
তবে মনোনয়নদাতা যদি সরকারপ্রধান হন, তাহলে সেটি নোবেল কমিটির কাছে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়, যদিও সিদ্ধান্তের ওপর এর সরাসরি প্রভাব পড়ে না।
ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নের সুপারিশ নেতানিয়াহুর, হোয়াইট হাউসে চিঠি হস্তান্তর
নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি পাঁচ সদস্যের একটি স্বাধীন দল, যেটি নরওয়ের পার্লামেন্ট দ্বারা মনোনীত হয়।
মনোনয়ন গোপন থাকে ৫০ বছর, তবে মনোনয়নদাতা চাইলে তা প্রকাশ করতে পারেন।
মনোনয়নযোগ্য ব্যক্তি হতে হবে জীবিত ও সক্রিয়, এবং তাকে হতে হবে এমন কেউ যার কাজ বৈশ্বিক শান্তিতে প্রভাব ফেলেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা পায়, যেমন—
আব্রাহাম অ্যাকর্ডস (Abraham Accords): ইসরায়েলের সঙ্গে বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কোর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন।
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা: কিম জং উনের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক।
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা।
তবে এসব উদ্যোগ কতটা স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করেছে— তা নিয়েও রয়েছে বিশ্লেষকদের দ্বিধা। অনেকেই একে রাজনৈতিক ‘স্টান্ট’ বা একতরফা সমঝোতা হিসেবে দেখেছেন।
নোবেল শান্তি পুরস্কার আগে থেকেই বহুবার বিতর্কে জড়িয়েছে। ২০০৯ সালে যখন বারাক ওবামা ক্ষমতায় আসার কয়েক মাসের মধ্যে পুরস্কার পান, তখন অনেকেই বলেন এটি ছিল রাজনৈতিক পদক্ষেপ।
১৯৭৩ সালে হেনরি কিসিঞ্জার ও লে ডাক থো-কে ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধের জন্য দেওয়া শান্তি পুরস্কার এতটাই বিতর্কিত ছিল যে কমিটির দুজন সদস্য পদত্যাগ করেন।
এবারও সাবেক সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী কার্ল বিল্ডট নেতানিয়াহুর পদক্ষেপকে আখ্যা দিয়েছেন “ট্রাম্পকে তুষ্ট করার রাজনৈতিক কৌশল” হিসেবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদিও ট্রাম্পের কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ তাকে মনোনয়নযোগ্য করে তোলে, তবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া এখনো অনেক দূরের ব্যাপার। বিশেষত, ট্রাম্পের কার্যকালজুড়ে বিতর্কিত বক্তব্য, অভিবাসন নীতি, এবং জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসা— এ সবই শান্তির বার্তা বহন করে না।
তবে রাজনৈতিক প্রভাব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও গ্লোবাল মেসেজিং-এর দিক থেকে এই মনোনয়ন গুরুত্বপূর্ণ। এটি ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি জোরদার করতে পারে, বিশেষত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে।
আরও পড়ুন :
জুলাই গণহত্যা মামলা: শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু, আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী
ইউরোপে দাবদাহে বিপর্যয়: ১০ দিনে মৃত্যু ২,৩০০ মানুষের, জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করলেন গবেষকরা