TrumpNobelNomination Netanyahu
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এক নতুন চমক। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়ার সুপারিশ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্রাম্পের ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার অবদানের’ স্বীকৃতি হিসেবে এই সুপারিশ (TrumpNobelNomination Netanyahu) করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।
ঘটনাটি ঘটেছে ৭ জুলাই (সোমবার) রাতে, ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক নৈশভোজে। সেই সময় নেতানিয়াহু তার লেখা নোবেল শান্তি পুরস্কার মনোনয়ন পত্রের একটি কপি স্বয়ং ট্রাম্পের হাতে তুলে দেন।
মনোনয়নপত্র হস্তান্তরের সময় নেতানিয়াহু বলেন –
“তিনি (ট্রাম্প) আমাদের কথায়, একের পর এক দেশে ও অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার কাজের জন্য তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি এই চিঠির মাধ্যমে তাঁকে শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছি, কারণ তিনি সেটা প্রাপ্য।”
মনোনয়নপত্র হাতে পেয়ে চমকে যান ট্রাম্প। তিনি বলেন –
“আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি এটা জানতাম না – বাহ! আপনার কাছ থেকে এসেছে… এটি খুবই অর্থবহ।”
তিনি নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের স্বীকৃতি সবসময়ই সম্মানজনক।
নেতানিয়াহুর এই সুপারিশের পেছনে রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের নেতৃত্বে স্বাক্ষরিত “আব্রাহাম চুক্তি” (Abraham Accords) – যা ২০২০ সালে ইজরায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী , বাহরিন এবং পরে মরক্কো ও সুদানসহ একাধিক আরব দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
এই চুক্তিগুলিকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়, যেখানে কয়েক দশক ধরে আরব রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ইজরায়েলের সম্পর্ক ছিল সংঘাতপূর্ণ।
“যদি নোবেল দিলে উনি চুপ থাকেন, তবে তা দেওয়া হোক”— ট্রাম্পকে ব্যঙ্গ করে টুইট চলচ্চিত্র পরিচালকের!
ইরান-মার্কিন সংঘাতের মধ্যে ট্রাম্পের ‘শান্তির নোবেল’ নিয়ে বিতর্ক, পাকিস্তানকে কটাক্ষ ওয়াইসির
ট্রাম্পকে শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের খবর নতুন কিছু নয়। এর আগেও নরওয়ের সংসদ সদস্য ও দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি তাঁকে এই পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছিলেন। তবে প্রতিবারই বিতর্ক তৈরি হয়, বিশেষ করে তাঁর প্রশাসনের ইরান নীতি, সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার ও অভিবাসন সংক্রান্ত কঠোর অবস্থান নিয়ে।
নেতানিয়াহুর সুপারিশ একদিকে যেমন ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস তৈরি করেছে, অন্যদিকে সমালোচকরাও বলছেন, “শান্তির সংজ্ঞা যদি একপাক্ষিক হয়, তাহলে সেটা স্থায়ী নয়।”
নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে পারেন বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্ট সদস্য, অধ্যাপক, বিচারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, রাষ্ট্রপ্রধানসহ নির্ধারিত কতিপয় ব্যক্তি। তবে মনোনয়ন মানেই তা চূড়ান্ত নয়। প্রতি বছর প্রায় ২০০-৩০০ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, যার মধ্যে মাত্র একজন বা একটি সংস্থা এই সম্মান পান।
নোবেল কমিটি সাধারণত মনোনয়ন তালিকা গোপন রাখে ৫০ বছর পর্যন্ত, তবে মনোনয়নদাতারা চাইলে তা প্রকাশ করতে পারেন।
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, নেতানিয়াহুর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চলছে, বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে। নেতানিয়াহুর সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সম্পর্ক বরাবরই আলোচনার বিষয়।
আরও পড়ুন :
ট্রাম্পের ‘ডিপোর্ট’ হুমকি: এলন মাস্কের বিরুদ্ধে রাজনীতির নতুন অস্ত্র?