Breaking News

TrumpNobelPrize OwaisiSpeech

ইরান-মার্কিন সংঘাতের মধ্যে ট্রাম্পের ‘শান্তির নোবেল’ নিয়ে বিতর্ক, পাকিস্তানকে কটাক্ষ ওয়াইসির

ওয়াইসি নেতানিয়াহুকে “প্যালেস্টাইনের জল্লাদ” বলেও আক্রমণ করেন

TrumpNobelPrize OwaisiSpeech: A Controversial Debate %%page%% %%sep%% %%sitename%%

TrumpNobelPrize OwaisiSpeech

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে ইরানে সামরিক হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চরম বিতর্কে জড়িয়ে পড়ল পাকিস্তান। একদিকে ইসলামাবাদ সরকার ট্রাম্পকে ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে, অন্যদিকে ইরানে মার্কিন বোমা হামলার তীব্র নিন্দাও করেছে একই সরকার। এই দ্বিমুখী অবস্থান নিয়ে দেশ-বিদেশে প্রশ্ন উঠছে, যার অন্যতম কণ্ঠস্বর হয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM)-এর সভাপতি ও হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি (TrumpNobelPrize OwaisiSpeech)।

ওয়াইসি এক সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, “পাকিস্তান কি এই কারণেই ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিতে চায়?” তাঁর মতে, এ এক বিরাট রাজনৈতিক ভণ্ডামি—একদিকে প্রশংসা, অন্যদিকে নিন্দা; আর তার মধ্যে পড়ে গোটা মুসলিম বিশ্ব বিভ্রান্ত। ওয়াইসি বলেন, “যিনি একটি দেশের উপর বোমা ফেলে দেন, যিনি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেন, তাঁকে শান্তির নোবেল! এটা কি কোনও প্রহসন নয়?”

তিনি আরও বলেন, “ইরাক, লিবিয়া, আফগানিস্তান—প্রতিটা জায়গায় মার্কিন হস্তক্ষেপের ফলে ধ্বংস ডেকে আনা হয়েছে। এখন আবার ইরানে। এসব দেখে মনে হয়, মার্কিন নীতির আসল উদ্দেশ্য হলো ইজরায়েলের অপরাধ আড়াল করা।”

ইসরাইলের হামলায় নিহত হলেন আরও দুই ইরানি ক্রীড়াবিদ, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬

ইরানে মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আরও একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

ওয়াইসি আরও একধাপ এগিয়ে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকেও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। বলেন, “নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা করছেন। গাজা উপত্যকায় যা হচ্ছে, তা স্পষ্ট জাতিগত নির্মূল। অথচ বিশ্ব তাতে চুপ করে রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব মুখে মানবাধিকার বললেও, কাজে তার প্রমাণ নেই।”

এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের অবস্থান নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে। মাত্র একদিন আগে ইসলামাবাদ সরকার প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, “ভারতের সঙ্গে মে মাসের সংঘর্ষ এড়াতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে কূটনৈতিক মধ্যস্থতা করেছেন, তা নজিরবিহীন। আমরা তাঁর নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দিচ্ছি।” সেই কারণেই তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়।

কিন্তু ট্রাম্প যখন গতকাল গভীর রাতে ইরানের নাতাঞ্জ, ইসফাহান ও ফোর্দো-র পারমাণবিক স্থাপনার ওপর হঠাৎ বিমান হামলার নির্দেশ দেন, তখন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানায়, “এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থী। মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতায় এর প্রভাব বিপজ্জনক।”

এই দুই বিপরীত অবস্থান দেশটির কূটনৈতিক ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। আন্তর্জাতিক মহলের অনেকেই বলছেন, পাকিস্তান আদতে দ্বিধাবিভক্ত অবস্থানে রয়েছে—একদিকে মার্কিন সমর্থন ধরে রাখতে চায়, অন্যদিকে মুসলিম বিশ্বের কাছে সহানুভূতির বার্তাও দিতে চায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াইসির বক্তব্য আসলে সেই রাজনৈতিক দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে সরব প্রতিবাদ। ভারতীয় মুসলিম সমাজের একাংশও এই অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। তবে বিজেপি ও দক্ষিণপন্থী মহল থেকে ওয়াইসির মন্তব্যের কড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে।

এই মুহূর্তে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। ইরান-ইজরায়েল উত্তেজনার মধ্যে আমেরিকার সরাসরি হস্তক্ষেপ নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। বিশ্বজুড়ে শান্তির ডাক শোনা গেলেও, বাস্তবে যুদ্ধের ঘনঘটা ক্রমশ বাড়ছে।

আরও পড়ুন :

ইরানের সম্ভাব্য হামলার শঙ্কায় ট্রাম্প প্রশাসনের সতর্কতা, কড়া বার্তা দিল তেহরান

ইরানে মার্কিন হামলা ‘বিপজ্জনক উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ’: হুঁশিয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিবের

ad

আরও পড়ুন: