UkraineDroneStrike
ক্লাউড টিভি ডেস্ক রিপোর্ট : ১ জুন গভীর রাতে, ইউক্রেন এক যুগান্তকারী সমন্বিত ড্রোন হামলার (UkraineDroneStrike) মাধ্যমে রাশিয়ার পাঁচটি কৌশলগত বিমানঘাঁটিকে লক্ষ করে যে আক্রমণ চালায়, তা সামরিক বিশ্লেষকদের মতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের গতিপথ বদলে দিতে পারে। ‘স্পাইডারস ওয়েব’ নামের এই অপারেশনটি ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিস (SBU) এবং প্রতিরক্ষা বাহিনী যৌথভাবে গোপনে পরিচালনা করে।
অপারেশনটি এতটাই নিখুঁত ছিল যে প্রায় ৪১টি সামরিক বিমান সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়, যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার কৌশলগত বোমারু বিমান Tu-95, Tu-22M3, এবং দুর্লভ নজরদারি বিমান A-50 AWACS। এতে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা ও প্রযুক্তিগত দুর্বলতা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা: ‘স্পাইডারস ওয়েব’ পরিকল্পনা নিতে সময় নেয় প্রায় ১৮ মাস। ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থা অত্যন্ত কৌশলে একাধিক উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন চীনের সীমান্ত ঘুরে রাশিয়ায় গোপনে প্রবেশ করায়। ড্রোনগুলো বিশেষ কাঠের চালাঘরের ছাদে লুকিয়ে রাখা হয় এবং ট্রাকের মাধ্যমে লক্ষ্যের আশেপাশে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেসব চালাঘর থেকে, দূর-নিয়ন্ত্রিতভাবে চালু করা হয় একযোগে ড্রোন আক্রমণ, যা রাশিয়ার বিমানঘাঁটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে সরাসরি জ্বালানি ডিপো ও বিমান হ্যাঙ্গারগুলোতে আঘাত হানে।
লক্ষ্যবস্তু বিমানঘাঁটি: রাশিয়ার বেলায়া, ডিয়াগিলেভো, ইভানোভো, ইউক্রাইনকা এবং আর্কটিক ওলেনিয়া বিমানঘাঁটি ছিল মূল লক্ষ্য। এদের প্রত্যেকটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে গড়ে ১২০০-১৫০০ কিমি দূরে অবস্থিত।
প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন: এই অপারেশনে ব্যবহৃত ড্রোনগুলোতে যুক্ত ছিল আধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি, যা নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্য শনাক্ত করে আঘাত হানতে সক্ষম। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানায়, এই ড্রোনগুলো রাতের অন্ধকারে চিহ্নিত টার্গেটে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে হানা দেয়।
বিমানধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে রাশিয়ার গভীরে ঢুকে এমন হামলা চালানো সোভিয়েত যুগের পর এটাই সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক ক্ষতি: ইউক্রেনীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ার সামরিক ক্ষতির পরিমাণ ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। ধ্বংসপ্রাপ্ত বিমানের মধ্যে কিছু ছিল কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্যারিয়ার, যা রাশিয়ার আন্তর্জাতিক প্রতিপত্তির অংশ। এই হামলার ফলে রাশিয়ার বিমান শক্তির অন্তত এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক বিবৃতিতে বলেন, “এই অপারেশন আমাদের প্রযুক্তিগত ও কৌশলগত অগ্রগতির উদাহরণ। এটি আমাদের আত্মরক্ষার অধিকারকে শক্তিশালীভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে।”
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এটিকে “সন্ত্রাসী হামলা” বলে আখ্যা দিলেও স্পষ্টভাবে ক্ষতির পরিমাণ প্রকাশ করেনি। শুধুমাত্র বলা হয়, কিছু হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে উদ্ধারকাজ চলছে।
আরও পড়ুন :
ঘরে এল খুদে রাজপুত্র, মাতৃসুখে পিয়া চক্রবর্তী, বাবা হলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়!
রোহিতের আইপিএল দৌড় থামালেন শ্রেয়স আয়ার, এবার কি তবে বিরাটের পালা