BrazilQualifies WorldCup2026
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক | ১১ জুন ২০২৫: শেষ বাঁশি বাজার পর ব্রাজিল শিবিরে শুধুই স্বস্তির নিঃশ্বাস। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্যারাগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল ব্রাজিল (BrazilQualifies WorldCup2026)। আর এই জয় এল সেই ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের একমাত্র গোলে, যিনি ছিলেন কোচ কার্লো আনচেলত্তির ‘বিশ্বাসের সৈনিক’।
এই জয়ের মাধ্যমে আনচেলত্তি পেলেন কোচ হিসেবে তাঁর প্রথম প্রতিযোগিতামূলক জয় ব্রাজিলের হয়ে। আরও বড় কথা, এই জয় এনে দিল ভবিষ্যতের নিরাপত্তা। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এবার নিশ্চিতভাবেই যাচ্ছে ২০২৬-এর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে।
সাও পাওলোর নিও কিমিকা অ্যারেনায় ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাজিল ছিল দাপুটে। তবে প্যারাগুয়ে রক্ষণদেয়াল ভাঙা সহজ ছিল না। এমন সময়ই ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে মাতেউস কুনিয়ার দারুণ একটি কাট-ব্যাক পাস ডান দিক থেকে ভিনিসিয়ুসের পায়ে আসে। পেনাল্টি বক্সে থাকা ভিনি ঠাণ্ডা মাথায় বলটিকে জালে ঠেলেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেন।
গোলের পর ব্রাজিল কিছুটা রক্ষণাত্মক হলেও প্যারাগুয়ে গোলের সামনে কোনও প্রকৃত হুমকি তৈরি করতে পারেনি। ব্রাজিলের রক্ষণভাগও নজরকাড়া। মারকুইনহোস, ব্রেনার এবং গোলরক্ষক আলিসন যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রতিপক্ষকে ঠেকিয়ে দেন।
ব্রাজিলের এই জয়ে কৌশলগত দিক থেকে আনচেলত্তির ছোঁয়া স্পষ্ট। তাঁর পছন্দের ‘4-3-3’ ছকে কুনিয়াকে ফালস নাইন হিসেবে ব্যবহার করে মাঝমাঠ থেকে আক্রমণে গতি আনা হয়েছে। রাফিনিয়া ও ভিনিসিয়ুস দুই উইং থেকে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ চাপে রাখেন।
রাফিনিয়া এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেই নিজের পুরনো ছন্দে ফিরে যান। তাঁর রানের কারণে বারবার প্যারাগুয়ের রক্ষণ টেনে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়, যার ফলে ভিনির জন্য জায়গা তৈরি হয়।
“আনচেলত্তির ব্রাজিল অভিযান: বিশ্বকাপে ফিরবে কি সাম্বার জাদু?”
আনচেলত্তিকে পেতে ‘ছাড়েনি কিছুই’ ব্রাজিল, স্কালোনির তুলনায় ৪ গুণ বেতন
ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নিঃসন্দেহে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। গোলে অবদান তো আছেই, পাশাপাশি পুরো ম্যাচজুড়ে প্যারাগুয়ের রক্ষণকে নাজেহাল করেছেন তাঁর ড্রিবল ও পজিশনিং দিয়ে। রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ডের ওপর আনচেলত্তির নির্ভরতা আবার প্রমাণিত হল।ম্যাচের পর ভিনি বলেন, “এই গোল আমার নয়, গোটা দলের। আমরা জানি বিশ্বকাপ ব্রাজিলের কাছে কী মানে রাখে। আমি গর্বিত যে আমি এই যাত্রার অংশ। আর কোচ আনচেলত্তির অধীনে প্রথম এই জয় আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে।”
এই জয়ের ফলে ব্রাজিলের সংগ্রহ ২৫ পয়েন্ট। সপ্তম স্থানে থাকা ভেনেজুয়েলার পয়েন্ট ১৮। এমনকি তারা পরের দুই ম্যাচ জিতলেও পয়েন্ট দাঁড়াবে ২৪। অর্থাৎ ব্রাজিলকে টপকানোর আর কোনও উপায় নেই। ফলে, আগাম দুই ম্যাচ হাতে রেখেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে সেলেসাওরা।
এই মুহূর্তে ব্রাজিল রয়েছে বাছাইপর্বের পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে, আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের ঠিক পিছনে। তবে তাদের পারফরম্যান্স বলছে, আসন্ন বিশ্বকাপে তারা শক্তিশালী দাবিদার হিসেবেই নামছে।
কার্লো আনচেলত্তির নেতৃত্বে ব্রাজিল এক নতুন পথচলায় নেমেছে। যেখানে তারকা ভিত্তিক ফুটবল নয়, বরং পরিকল্পিত কৌশল ও দলগত সংহতির ওপর ভরসা রাখা হচ্ছে। ভিনিসিয়ুস, কুনিয়া, রাফিনিয়ার মতো তরুণেরা সেই পরিকল্পনায় প্রাণ দিচ্ছেন।
এখন প্রশ্ন একটাই — ২০২৬ সালে আনচেলত্তির ব্রাজিল কি ফেরাতে পারবে সেলেসাওদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ ট্রফি?
আরও পড়ুন :
অভিষেক সিং টেকচামকে ঘিরে দলবদলের দড়ি টানাটানি — ইস্টবেঙ্গল না মোহনবাগান?