সূর্যকুমার যাদব জয় উৎসর্গ সেনা
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক : পাহেলগামে জঙ্গিহানায় শহিদ ভারতীয় সেনাদের স্মরণে এক আবেগঘন মুহূর্ত উপহার দিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। পাকিস্তানের বিপক্ষে উত্তেজনাপূর্ণ t20 ম্যাচে ভারতকে জেতানোর পর তিনি করলেন এক অনন্য ঘোষণা। প্রতিপক্ষের সঙ্গে করমর্দন এড়িয়ে তিনি জানালেন, এই জয় উৎসর্গ শহিদ সেনাদের। তাঁর এই সিদ্ধান্ত মুহূর্তে আলোচনার কেন্দ্রে।
পাহেলগামে জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ভারতীয় সেনার একাধিক সদস্য। দেশজুড়ে শোকের আবহের মধ্যেই সীমান্তপারের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নামে টিম ইন্ডিয়া। প্রত্যাশামতো ম্যাচটি ছিল টানটান উত্তেজনায় ভরা। তবে জয়ের পর উদযাপন যেন অন্য মাত্রা পেল সূর্যকুমারের ঘোষণায়।
খেলার পর মাঠেই দাঁড়িয়ে সূর্যকুমার বলেন, “আমাদের জওয়ানরা দেশের জন্য নিজেদের প্রাণ দিচ্ছেন। তাঁদের আত্মত্যাগের কাছে ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের সব সাফল্য তুচ্ছ। আজকের জয় তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। শহিদদের সাহস আমাদের অনুপ্রেরণা।”
তাঁর কণ্ঠে ছিল আবেগের ছোঁয়া। সহখেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে তাঁকে সমর্থন জানান।
এশিয়া কাপের প্রাইজমানি দ্বিগুণ, চ্যাম্পিয়ন হলে ভারত পাবে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা
এশিয়া কাপে ভারতকে কড়া হুঁশিয়ারি, পাকিস্তান অধিনায়কের বার্তা—“এবার ভারতের কপালে দুঃখ আছে”
সাধারণত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়রা একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করেন। কিন্তু এবার সূর্যকুমার সেই নিয়ম ভাঙলেন। তিনি সরাসরি ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। তাঁর এই আচরণ ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকেই বলেছেন, এটি আবেগের মুহূর্তে নেওয়া ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আবার অনেকের মতে, তিনি প্রতীকী বার্তা দিয়েছেন—দেশের সেনাদের আত্মত্যাগের সামনে খেলাধুলার সৌজন্য গৌণ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সূর্যকুমারের বক্তব্য ঝড় তুলেছে। সমর্থকরা লিখেছেন, “এই জয় শহিদদের প্রাপ্য।” ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকেও প্রকাশ্যে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে সূর্যকুমারকে। সেনা পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, দেশের জনপ্রিয় ক্রিকেট অধিনায়কের কাছ থেকে এমন শ্রদ্ধা তাঁদের কাছে গর্বের।
ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে সেনাদের প্রতি ক্রিকেটারদের সংহতি। মহেন্দ্র সিং ধোনি একসময় টেরিটোরিয়াল আর্মিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। বিরাট কোহলিও একাধিকবার শহিদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল সূর্যকুমারের নাম। বিশেষত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে তাঁর এই বার্তা রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।
সমালোচকদের মতে, খেলাধুলা সবসময়ই সৌহার্দ্যের প্রতীক। তাই করমর্দন না করাটা অখেলোয়াড়সুলভ। তবে সমর্থকরা বলছেন, এটি ছিল এক বিশেষ মুহূর্তে নেওয়া আবেগের সিদ্ধান্ত। সূর্যকুমারের এই পদক্ষেপ অনেক তরুণ ক্রিকেটারের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
এশিয়া কাপে ভারতের যাত্রা এখনো অনেকটা বাকি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের পর মনোবল আরও বেড়েছে। তবে সামনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ। দলের লক্ষ্য ট্রফি জেতা। সূর্যকুমার জানিয়েছেন, “প্রতিটি ম্যাচে দেশের জন্য খেলব। আমাদের উদ্দেশ্য শুধু ট্রফি নয়, গর্ব নিয়ে মাঠ ছাড়া।”
পাহেলগামে শহিদ সেনাদের প্রতি সূর্যকুমারের এই শ্রদ্ধা জানানো নিছক ক্রিকেটীয় মুহূর্ত নয়। এটি এক জাতীয় আবেগের বহিঃপ্রকাশ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের পাশাপাশি তাঁর দেশপ্রেমিক অবস্থান ক্রিকেট ভক্তদের হৃদয়ে আলাদা সম্মান কুড়িয়েছে। হয়তো বিতর্ক চলবে, তবে সেনাদের জন্য এই জয়ের বার্তাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন :
ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন, সরকারের রোষানলে দেশ ছাড়লেন জোকোভিচ