robinho
শান্তিপ্রিয় রায়চৌধুরী : ব্রাজিলের প্রখ্যাত ফুটবলার রবিনহো একসময় জাতীয় দল মাতিয়েছেন, খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলান, ম্যানচেস্টার সিটির মতো ক্লাবে। ব্রাজিলের সেই তারকা ফরোয়ার্ড রবিনহো (robinho) এখন একটা বছর কারাগারের চার দেয়ালে বন্দী।
রবিনহো ২০১৩ সালে এসি মিলানে থাকাকালীন আলবেনিয়ান এক নারীকে ইতালির একটি নৈশক্লাবে ধর্ষণ করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় দেশটির আদালত তাঁকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। কিন্তু রায়ের আগেই তিনি ইতালি ছেড়ে যাওয়ায় ব্রাজিল সরকারকে শাস্তি কার্যকরের আহ্বান জানান ইতালির সর্বোচ্চ আদালত।
শাস্তি কার্যকর করতেই গত বছর মার্চে রবিনহোকে (robinho) গ্রেপ্তার করে ব্রাজিলের পুলিশ। তাঁরপর তাকে সাও পাওলোর ত্রেমেম্বে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে প্রাক্তন এই তারকা ফুটবলারের কারাবন্দী জীবনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে।
এই কারাগার বিখ্যাত ও কুখ্যাত উভয় ধরনের ব্যক্তিদের কারাগার হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সেখানে যেমন লুইস এস্তেভাওয়ের মতো রাজনীতিবিদ, পিমেন্তা নেভেসের মতো সাংবাদিক জেল খাটছেন আবার ক্রিস্তিয়ান ক্রাভিনিওস, আলেক্সান্দার নার্দোনির মতো খুনিরাও আছেন।
কারাগারে রবিনহোর (robinho) এক বছর কীভাবে কেটেছে, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা।
ব্রাজিলের কারা আইন অনুযায়ী, কোনো কয়েদি ভালো আচরণ ও ভালো কাজ করলে তাঁর সাজা কমানোর সুযোগ থাকে, এমনকি মুক্তিও পেতে পারেন। রবিনহো এখন সেদিকেই মনোযোগী।
ত্রেমেম্বে কারাগারে আট বর্গমিটারের একটি কক্ষে এক বছর দিন কাটাচ্ছেন রবিনহো। তাঁর সঙ্গে এমন এক যুবক আছে,যাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগে এই কারাগারে রাখা হয়েছে।
ব্রাজিলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কারাগারে বন্দীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব ভালো। কারাগারে রবিনহোনতুন একটা চাকরিও পেয়েছেন।
গত বছর গ্রেপ্তার হওয়ার পর রবিনহোওকে ১০ দিন একটি আইসোলেশন সেলে রাখার পর তাঁকে সাধারণ সেলে স্থানান্তর করা হয়।
রবিনহোর (robinho) আইনজীবী মারিও রোসো বলেছেন, ‘সে কারাগারে মাথা নিচু করে চুপচাপ এগিয়ে গেছে। তাকে আদর্শ বন্দী বলা যেতে পারে। অন্য বন্দীদের সঙ্গে তার কোনো সমস্যা হয়নি। নিজেকে সে নানা কাজে ব্যস্ত রাখে।’
রবিনহো প্রায় দিনই কারাগারের মাঠে খেলাধুলায় অংশ নেন। ফুটবল খেলার সময় অন্যদের কাছ থেকে বুট ধার নেন। কারাগারেই তিনি ৬০০ ঘণ্টার ইলেকট্রনিকস কোর্স করেছেন। এখন তিনি টেলিভিশন ও রেডিও মেরামত করছেন।
আর বই পড়ুয়াদের ক্লাবেও ভর্তি হয়েছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি কারাগারের সবজি বাগানের পরিচর্যা করছেন। সম্প্রতি কাজের বিনিময়ে শিক্ষা ও নাগরিকত্ব কর্মসূচির ১০টি মডিউল সম্পন্ন করেছেন রবিনহো। প্রতি ১২ ঘণ্টা কাজের জন্য তাঁর শাস্তির মেয়াদ একদিন করে কমানো হচ্ছে।
রবিনহোর সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে শুধু যেতে পারেন—বাবা, মা, স্ত্রী ও সন্তান। ১৭ বছর বয়সী তার ছেলে রবসন রবিনিও জুনিয়র মাসে একবার বাবার সঙ্গে দেখা করতে যান। রবসন জুনিয়র সম্প্রতি রবিনহোর শৈশবের ক্লাব সান্তোসের মূল দল খেলছেন।
Adopted Daughter জন্মের পরিচয় খুঁজে দেখেন—ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টেই ছিলেন বাবা
রবিনহোর আত্মীয়রা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তার জন্য মিষ্টি, গোশত, শাকসবজি, কোমল পানীয়, সালাদ, পোশাক,দাবা বা চেকারের মতো খেলার উপকরণ, লেখার উপকরণ, বই বা সাময়িকী দিয়ে আসেন।
আলবেনিয়ান নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ কখনোই অস্বীকার করেননি রবিনহোও। তবে তিনি বারবার দাবি করে এসেছেন, ওই নারীর সঙ্গে তিনি খুব অল্প সময়েই ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন এবং সেই রাতে নৈশক্লাবে সবকিছু সম্মতির ভিত্তিতেই করেছিলেন। যেহেতু তিনি কনডম ব্যবহার করেছিলেন, তাই পুলিশ তাঁর ডিএনএ পরীক্ষায় কোনো নমুনা পায়নি।
এ ব্যাপারে এক সাক্ষাৎকারে রবিনহোও বলেছিলেন, ‘চাইলে আমি অস্বীকার করতে পারতাম। কারণ, আমার ডিএনএ সেখানে নেই। কিন্তু আমি মিথ্যাবাদী নই।’
আরও পড়ুন :
খেলোয়াড়ের মৃত্যুতে নীরবতা পালন প্রকাশ করার পর ক্লাব জানতে পারলো খেলোয়াটি মারা যায়নি!
বিশ্বকাপ জিতে মেসিরা যে অর্থ পেয়েছে, ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ীরা তার তিনগুণ পাবে
Facebook : https://www.facebook.com/cloud.tv24x7
x (twitter) : https://x.com/cloudTV_NEWS