MohammedSiraj Comeback
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক: লর্ডস টেস্টে যখন সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন মোহাম্মদ সিরাজ, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন হয়তো সিরিজ থেকে ছিটকে পড়বেন তিনি। কিন্তু না—ওভালে সিরিজের শেষ টেস্টে তিনি (MohammedSiraj Comeback)ফিরলেন দুর্দান্তভাবে। তুলে নিলেন ৫টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট, আর সেইসঙ্গে ইংল্যান্ডের টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন চুরমার করে দিলেন।
সিরাজের গল্পটা শুধু একজন বোলারের নয়। এটা একজন মানুষের নিজের সীমা ভেঙে নতুনভাবে নিজেকে গড়ার কাহিনি। সিরাজ প্রমাণ করেছেন, আত্মবিশ্বাস আর অধ্যবসায়ের কাছে সমালোচকরা খুবই নগণ্য।
তিনি বলেন:
“আমি শুধু বিশ্বাস করি—আমি যে কোনো পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ জেতাতে পারি। এটা আমার বিশ্বাস, আমার অস্ত্র।”
সিরিজের তৃতীয় টেস্ট, লন্ডনের ঐতিহাসিক লর্ডস মাঠ। সেখানে ভারতীয় বোলিং আক্রমণ কার্যত ভেঙে পড়ে। মোহাম্মদ সিরাজ তখন যেন নিজের ছায়া। ওভারপিছু ৫ রান খরচ করে মাত্র ১টি উইকেট নিতে পেরেছিলেন। মাঠে ক্যাপ ঝাঁকানো, হাত তুলে নিজের ওপর রাগ দেখানো—সবই ইঙ্গিত দিচ্ছিল, তিনি নিজেও জানেন কীভাবে সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
রোহিত শর্মার উত্তরসূরি হিসেবে শুবমান গিলের উত্থান: ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন যুগের সূচনা
ভারতের দ্বিমুখী আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ আজহারউদ্দিন, এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলায় উঠল প্রশ্ন
সিরাজের স্বীকারোক্তি ছিল স্পষ্ট:
“আমি জানতাম লর্ডসে আমি ফেল করেছি। নিজের ওপরই রেগে গেছিলাম। এত বছর ধরে খেলছি—এমন হতেই পারে, কিন্তু ফিরতে হবে আরও জোরে।”
লর্ডসের পর বিশ্রাম বা আত্মগোপন নয়—তিনি আরও বেশি সময় কাটান বোলিং কোচ পরস মাম্ব্রের সঙ্গে। ব্যাক-স্পিন, রিস্ট পজিশন, রিলিজ পয়েন্ট—সব কিছু নিয়ে আবার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অনুশীলন করেন।
সঙ্গে থাকল পরিবার ও সতীর্থদের সমর্থন।
অধিনায়ক শুভমান গিল বলেন,
“সিরাজ জানত কী করতে হবে। ও শুধু চাইছিল একটা সুযোগ, একটা মঞ্চ। ওভাল সেই সুযোগটা দিয়েছিল।”
চতুর্থ তথা সিরিজ নির্ধারণী টেস্ট ম্যাচ। দাপুটে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৩৫০ রান তোলে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ১৮০ রানে আটকে যায় তারা, তখন মূল কৃতিত্ব সিরাজের।
তিনি নেন:
জো রুট (ক্লিন বোল্ড),
বেন ফোকস (স্লিপে কট),
গাস অ্যাটকিনসন (ইয়র্কারে বোল্ড),
উইল জ্যাকস (LBW),
ও জ্যাক ক্রলি (লেংথ বল সোজা গ্লাভে)
ম্যাচে সিরাজের ফিগার: ৫ উইকেট, মাত্র ৫২ রান খরচে।
ম্যাচ নায়ক ও সিরিজ শীর্ষ উইকেটশিকারি
সিরিজ জেতার পাশাপাশি মোহাম্মদ সিরাজ হন ভারতের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি (২৩ উইকেট)। ওভালের ম্যাচ শেষে তাঁকেই দেওয়া হয় ম্যান অব দ্য ম্যাচ সম্মান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনি ছিলেন পুরো টেস্ট সিরিজের সবচেয়ে কার্যকর পেসার।
স্টুয়ার্ট ব্রড বললেন,
“He has venom, rhythm and madness—exactly what a modern Test pacer needs.”
লর্ডসের ভুল থেকে ওভালের জয়—এই পুরো সফরটাই সিরাজের আত্মবিশ্বাস ও মানসিক জেদের কাহিনি।
নিজের কথাতেই শেষ করা যায় এই অধ্যায়:
“আমার কাছে বোলিং মানে শুধু লাইন-লেন্থ নয়, মানে হচ্ছে মানসিকতা। আমি নিজের ওপর বিশ্বাস রাখি। আর সেটাই আমাকে আজকের সিরাজ করেছে।”
আরও পড়ুন :
মাসে দেড় লাখ উপার্জন করা সাজাপ্রাপ্ত প্রাক্তন সাংসদ প্রজ্বল রেভান্ন এখন কারাগারে, রোজগার ৫৪০ টাকা!