ManoloMarquez
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতীয় ফুটবলের প্রধান কোচ হিসেবে মানোলো মার্কোয়েজের (ManoloMarquez) অধ্যায় শেষ হয়ে গেল। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) এবং স্পেনের এই অভিজ্ঞ কোচ যৌথভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও তাঁর ক্লাব ফুটবলে কোচিং ক্যারিয়ার যথেষ্ট সমৃদ্ধ, জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে গিয়ে তিনি একেবারেই সফল হতে পারেননি।
২০২২ সালে হায়দরাবাদ এফসি-কে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন মানোলো, পরে এফসি গোয়ার দায়িত্বে থেকে সুপার কাপও জেতেন। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই তাঁকে ২০২3-24 মরসুমে ভারতীয় জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় AIFF। কিন্তু জাতীয় দলের কোচ হিসেবে তাঁর কার্যকালটি একরকম হতাশাজনক।
“আনচেলত্তির ব্রাজিল অভিযান: বিশ্বকাপে ফিরবে কি সাম্বার জাদু?”
রাখাইনে ‘করিডর’ : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করলেন
তাঁর অধীনে মোট ৮টি ম্যাচ খেলে ভারতীয় দল জয় পায় মাত্র একটি, সেটিও একটি অপ্রতিযোগিতামূলক প্রীতি ম্যাচ—মালদ্বীপের বিরুদ্ধে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যেমন বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ার বা এশিয়ান কাপ প্রস্তুতিতে ভারতীয় দল মুখ থুবড়ে পড়ে। ১০ জুন হংকংয়ের বিরুদ্ধে ১-০ ব্যবধানে পরাজয়ের পর চাপ আরও বেড়ে যায়। মাঠের পারফরম্যান্স, খেলোয়াড় নির্বাচন, রক্ষণাত্মক পদ্ধতি—সবই সমালোচিত হতে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে AIFF আর সময় নষ্ট করেনি। মানোলো মার্কোয়েজের সঙ্গে একটি ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ চুক্তিতে পৌঁছে তাঁকে বিদায় জানানো হয়—অর্থাৎ সম্মানজনকভাবে চুক্তি শেষ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ফেডারেশনের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, তবে ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর মিলেছে যে উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণ ভাবে আলাদা হয়েছে।
দেশীয় কোচের দিকেই ঝুঁকছে ফেডারেশন
এই ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে AIFF এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভবিষ্যতে আর বিদেশি কোচ নয়—ভারতীয়, দেশীয় কোচরাই হোক দলের দায়িত্বে। ভারতীয় কোচরা খেলোয়াড়দের মনোভাব, ভাষা এবং ঘরোয়া ফুটবলের বাস্তবতা অনেক বেশি ভালো বোঝেন বলেই ফেডারেশনের মত।
সংগঠনের মধ্যে থেকেই উঠে আসা কিছু সম্ভাব্য নামও ঘুরপাক খাচ্ছে। ইগর স্টিমাকের বিদায়ের পর যেভাবে মানোলো এলেন, তেমন হঠাৎ করে আর সিদ্ধান্ত না নিয়ে এবার সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন কোচ নিয়োগের দিকে নজর AIFF-এর।
অনেকেই মনে করছেন, আইএসএলের অভিজ্ঞ ভারতীয় কোচদের মধ্যে থেকে কাউকে জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়া হলে তা খেলোয়াড়দের সঙ্গেও একধরনের মানসিক সংযোগ তৈরি করতে পারবে।
বিশ্লেষণ: কেন ব্যর্থ হলেন মানোলো?
ক্লাব ও জাতীয় দলের পার্থক্য: ক্লাবে হাতে থাকে সময়, খেলোয়াড়দের সঙ্গে নিয়মিত অনুশীলন ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ। জাতীয় দলে সেটা অনেকটাই সীমিত।
রক্ষণাত্মক কৌশল: মানোলো ভারতের ফুটবল দলকে খুব বেশি রক্ষণমুখী করে তুলেছিলেন। এশিয়ার আধুনিক ফুটবলে যেখানে গতিময়তা ও আক্রমণই ভবিষ্যৎ, সেখানে ভারত পিছিয়ে পড়ে।
সৃজনশীলতার অভাব: কোচিংয়ের সময় দলে সৃজনশীলতা ও মাঝমাঠে বল কন্ট্রোল ছিল না বললেই চলে। দলের রক্ষণ একরকম দাঁড়াতে পারলেও আক্রমণভাগ ছিল একেবারে নিষ্প্রভ।
আরও পড়ুন :
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫: কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই জমে উঠেছে, এক নজরে সময়সূচি ও সম্ভাবনা
কারাবন্দিদের তালিকা বিনিময় করল পাকিস্তান ও ভারত: কূটনৈতিক যোগাযোগে বার্ষিক প্রক্রিয়া