MonicaSeles MyastheniaGravis
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক : নয়বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী টেনিস কিংবদন্তি মনিকা সেলেস জানিয়েছেন, তিনি মায়াস্থেনিয়া গ্রাভিস (এমজি) নামের এক বিরল স্নায়ু-পেশি সম্পর্কিত অটোইমিউন রোগে ভুগছেন। আসন্ন ইউএস ওপেন শুরুর আগে, ২৪ আগস্ট প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে রোগটির কথা প্রকাশ করে সেলেস মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান (MonicaSeles MyastheniaGravis) জানান। এই ঘোষণা ক্রীড়াজগত ও ভক্তদের মধ্যে গভীর আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
৫১ বছর বয়সী সেলেস অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, খেলোয়াড়ি জীবনে এবং অবসরের পর র্যাকেট ঘোরানোর সময়ই প্রথম লক্ষণগুলি ধরা পড়ে। পরিবারের সদস্য ও শিশুদের সঙ্গে খেলতে গিয়েও তিনি হঠাৎ করে বল মিস করতেন। নিজের ভাষায়,
“ভাবতাম, আমি তো দুইটা বল দেখছি! এই লক্ষণগুলো উপেক্ষা করা যায় না।”
সেলেস বলেন, এই রোগ তার দৈনন্দিন জীবনে বড় প্রভাব ফেলছে এবং খোলাখুলি এ নিয়ে কথা বলতে ও মানিয়ে নিতে তার অনেক সময় লেগেছে।
মার্কিন আধিপত্য নিয়ে শি’র কড়া বার্তা: ‘যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্ব চলবে’
মায়াস্থেনিয়া গ্রাভিস কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারস অ্যান্ড স্ট্রোক (NINDS) এমজিকে “একটি দীর্ঘমেয়াদি স্নায়ু-পেশি রোগ, যা স্বেচ্ছাচালিত পেশিতে দুর্বলতা সৃষ্টি করে” বলে উল্লেখ করেছে। এটি সাধারণত ৪০ বছরের নিচে নারীদের এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে যেকোনো বয়সে এমনকি শিশুদেরও হতে পারে।
লক্ষণগুলির মধ্যে থাকে ডাবল ভিশন, হাত-পায়ের দুর্বলতা, এমনকি চুল শুকানোর মতো সহজ কাজও কঠিন হয়ে যাওয়া। এই লক্ষণগুলো দেখার পর সেলেস প্রথমে একজন চিকিৎসকের কাছে যান, পরে তাকে নিউরোলজিস্টের কাছে রেফার করা হয়। সেখানেই রোগের সঠিক নির্ণয় হয়।
সেলেস বলেন,
“ডায়াগনোসিস হওয়ার পর আমার প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘কি?!’ — আমি তো আগে এই রোগের নামও শুনিনি।”
বর্তমানে সেলেস নেদারল্যান্ডসভিত্তিক ইমিউনোলজি কোম্পানি আর্জেনক্স-এর ‘Go for Greater’ প্রচারণায় যুক্ত হয়েছেন। এই প্রচারণার লক্ষ্য হলো মায়াস্থেনিয়া গ্রাভিস এবং অন্যান্য বিরল অটোইমিউন রোগ সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বাড়ানো এবং রোগীদের উৎসাহিত করা যাতে তারা চিকিৎসা ও সহায়তার জন্য দ্রুত এগিয়ে আসেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, তার এই প্রকাশ্য বক্তব্য অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে,
“আমি চাইতাম, আমার মতো কেউ আগে এসে এ নিয়ে কথা বলুক। তাহলে হয়তো আমি আরও আগে সচেতন হতাম।”
খেলোয়াড়ি জীবন ও ব্যক্তিগত লড়াই
মনিকা সেলেস ১৯৯০-এর দশকে নারীদের টেনিসে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে শিরোপা যাত্রা শুরু করেন তিনি। তবে ১৯৯৩ সালে হামলার শিকার হওয়ার পর তার ক্যারিয়ারে বড় ধাক্কা আসে। তবুও তিনি দৃঢ় মনোবলে কোর্টে ফিরে এসে আরও কয়েকটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতেন।
এখন, জীবনের আরেকটি কঠিন প্রতিপক্ষ—মায়াস্থেনিয়া গ্রাভিস—এর সঙ্গে লড়াই করছেন তিনি। ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে এটি এক নতুন প্রমাণ যে, খেলার বাইরের লড়াইও কখনও কখনও সমান কঠিন হতে পারে।
আরও পড়ুন :
সুপার কাপে উয়েফার মানবিক বার্তা: ‘শিশু হত্যা বন্ধ কর, বেসামরিক হত্যা বন্ধ কর’
দুই বছরের চুক্তিতে জাতীয় দলের দায়িত্ব নিলেন খালিদ জামিল