Breaking News

জোকোভিচ গ্রিসে স্থায়ী বসবাস ছাত্র আন্দোলন সমর্থন

ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন, সরকারের রোষানলে দেশ ছাড়লেন জোকোভিচ

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ায় সরকারের রোষানলে পড়েন টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচ। অবশেষে পরিবারকে নিয়ে গ্রিসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন তিনি।

ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন, সরকারের রোষানলে দেশ ছাড়লেন জোকোভিচ

জোকোভিচ গ্রিসে স্থায়ী বসবাস ছাত্র আন্দোলন সমর্থন

ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্ব টেনিসের তারকা নোভাক জোকোভিচকে নিয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে নিজ দেশ সার্বিয়ায়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানানোর পর থেকেই তিনি সরকারের বিরাগভাজন হন। অবশেষে পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রতিবেশী দেশ গ্রিসে স্থায়ীভাবে বসতি গড়লেন রেকর্ড ২৪ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী এ তারকা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাশে জোকোভিচ
গত বছরের নভেম্বরে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে এক রেলস্টেশনের ছাদ ধসে নিহত হন ১৬ জন। এ মর্মান্তিক ঘটনায় নতুন নির্বাচনের দাবিতে রাস্তায় নামে দেশটির শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে এই আন্দোলন সার্বিয়া জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে জোকোভিচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “আমি তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাস করি। তাদের কথাই ভবিষ্যতের ভিত্তি।”

উইম্বলডনে পর্দা উঠল: শেষ বারের মতো ইতিহাসের মুখোমুখি জোকোভিচ

ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বিপাকে জকোভিচ; ছাড়তে চান দেশ

শুধু সামাজিক মাধ্যমে নয়, বিভিন্ন সময়ে তিনি সরাসরি আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর সেই শিরোপা উৎসর্গ করেছিলেন আহত শিক্ষার্থীদের। এমনকি বেলগ্রেডে এক বাস্কেটবল ম্যাচে যোগ দিয়েছিলেন ‘শিক্ষার্থীরা চ্যাম্পিয়ন’ লেখা জাম্পার পরে। সেখান থেকেই শুরু হয় বিতর্ক।

সরকারঘেঁষা মিডিয়ার সমালোচনা
শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানানোয় জোকোভিচকে ‘দেশবিরোধী’ তকমা দেয় সরকারঘেঁষা সংবাদমাধ্যম। বলা হয়, তিনি নাকি সার্বিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন। যদিও প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুচিচ প্রকাশ্যে জোকোভিচকে নিয়ে সমালোচনা করেননি। বরং বলেছেন, তিনি কখনো তারকা টেনিস খেলোয়াড়কে নিয়ে খারাপ কিছু বলবেন না। কিন্তু সরকারের অঘোষিত চাপের মধ্যেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন জোকোভিচ ও তার পরিবার।

গ্রিসে নতুন জীবন শুরু
অবশেষে পরিবারকে নিয়ে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন এই টেনিস কিংবদন্তি। বর্তমানে তিনি গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে বসবাস শুরু করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল অনলাইন জানিয়েছে, জোকোভিচ তার দুই সন্তানকে ভর্তি করিয়েছেন এথেন্সের নামকরা সেন্ট লরেন্স কলেজে। ১১ বছর বয়সী ছেলে স্তেফান ও ৮ বছর বয়সী মেয়ে তারা ইতিমধ্যেই নতুন স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেছে।

এথেন্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় গ্লাইফাদা এলাকায় নতুন ঠিকানা বেছে নিয়েছেন জোকোভিচ পরিবার। স্থানীয় ক্লাবে ছেলের সঙ্গে তাকে টেনিস খেলতে দেখা গেছে। সৈকতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর ছবিও প্রকাশ করেছে গ্রিক সংবাদমাধ্যম।

গ্রিসে স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা
জানা গেছে, জোকোভিচ ইতিমধ্যেই গ্রিসে গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। বিনিয়োগের বিপরীতে এ ধরনের ভিসায় স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ মেলে। সূত্র বলছে, এ নিয়ে তিনি দুবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিতসোতাকিসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ফলে তিনি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে গ্রিসেই বসতি গড়তে চান বলে মনে করা হচ্ছে।

সমর্থন বনাম বিতর্ক
জোকোভিচের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে সমর্থকরা তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। তাদের মতে, জনপ্রিয় একজন ক্রীড়াবিদ যদি দেশের তরুণ প্রজন্মের পাশে দাঁড়ান, তাহলে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে। তবে সমালোচকরা মনে করেন, একজন আন্তর্জাতিক তারকা হিসেবে তার নিরপেক্ষ থাকা উচিত ছিল। কারণ রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়ায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

রাজনৈতিক চাপে বিদায়
সবশেষে বলা যায়, জোকোভিচের দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত কেবল একটি ব্যক্তিগত পছন্দ নয়, বরং সার্বিয়ার রাজনৈতিক চাপ ও গণমাধ্যমের সমালোচনার ফল। নতুন দেশে তিনি ও তার পরিবার কতটা স্বস্তিতে থাকতে পারেন, তা সময়ই বলে দেবে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—জোকোভিচ শুধু টেনিস কোর্টেই নন, সমাজ-রাজনীতিতেও নিজের অবস্থান জানাতে পিছপা হন না।

আরও পড়ুন :

নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীর স্বামী করেছিলেন বিমান ছিনতাই : ছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মালা সিনহাও

উত্তর কোরিয়ায় বিদেশি চলচ্চিত্র ও নাটক দেখলে মৃত্যুদণ্ড

ad

আরও পড়ুন: