CarsonBranstine
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক : উইম্বলডন মানেই ইতিহাস, ঐতিহ্য আর খেলার নিখুঁত শিল্প। যেখানে মূল আলো থাকে শীর্ষ বাছাই তারকাদের উপর, সেখানে এবারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন এক অভিনব নাম—কারসন ব্র্যানস্টিন (CarsonBranstine)।
২৪ বছর বয়সি এই কানাডিয়ান টেনিস খেলোয়াড় একদিকে কোর্টে যেমন লড়াই করছেন গ্র্যান্ড স্লাম সাফল্যের জন্য, অন্যদিকে পেশাদার মডেলিং ক্যারিয়ারেও জায়গা করে নিচ্ছেন ফ্যাশনের মঞ্চে।
ব্র্যানস্টিন যখন পেশাদার মডেলিং এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি করেন, তখন সেটা ছিল মূলত ‘শারীরিক গড়ন ও উপস্থিতি’ বিবেচনায়—not for her game, but her body।
ক্লে টেনিস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন:
“আমি যে চুক্তি করেছিলাম, সেটা ছিল আমার শরীরের জন্য—not for my tennis. কিন্তু আমি দুই দুনিয়ার মধ্যে মিল খুঁজে পেয়েছি। দুই ক্ষেত্রেই মানুষ আপনাকে অবজেক্ট হিসেবে দেখে। ভুলে যায়, আপনি একজন মানুষ।”
এই স্বীকারোক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছে। অনেকেই বিষয়টিকে ‘নারী ক্রীড়াবিদের ওপর প্রচলিত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিচ্ছবি’ হিসেবে দেখছেন।
আলকারাজ বনাম সিনার ফাইনাল: ইতিহাস গড়ল রোলাঁ গারোর কোর্টে, কিংবদন্তিদের মুখেও বিস্ময়
কারসন ব্র্যানস্টিন এই মুহূর্তে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১৯৭তম স্থানে রয়েছেন।
তবে এবারের উইম্বলডনে মূল ড্রতে জায়গা করে নিয়েছেন যোগ্যতা অর্জন পর্ব পেরিয়ে। অভিষেকেই তাঁর প্রতিপক্ষ শীর্ষ বাছাই আরিনা সাবালেঙ্কা—যা এককথায় ভয়ংকর চ্যালেঞ্জ।
তবে ব্র্যানস্টিন ভয় পাচ্ছেন না। তাঁর কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস:
“আমি জানি আমার প্রতিপক্ষ কে। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী—আমি যেকোনো খেলোয়াড়ের বিপক্ষে লড়তে পারি।”
টেনিস কোর্টে প্রতিদিন অনুশীলন, ম্যাচ প্রস্তুতি, কোচিং সেশন। আর এর মধ্যেই রয়েছে ফ্যাশন ফটোশুট, বিজ্ঞাপনচিত্র, ম্যাগাজিন কভার। ব্র্যানস্টিনের সময় ভাগ হয় দুই ভিন্ন জগতের মধ্যে—খেলাধুলার পেশাদারিত্ব এবং ফ্যাশনের চোখধাঁধানো কৌশল।
তিনি বলেন,
“মডেলিং আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। আমার শরীরকে আমি সম্মানের চোখে দেখতে শিখেছি। এই আত্মবিশ্বাসই আমাকে কোর্টে আরও সাহসী করে তুলেছে।”
ব্র্যানস্টিনের ইনস্টাগ্রাম এখন র্যাম্পের ছবি আর উইম্বলডনের প্রস্তুতির ভিডিওতে ভরা। তার ফলোয়ার সংখ্যা গত এক মাসে বেড়েছে কয়েক লাখ। অনেক তরুণ-তরুণী তাকে ‘মাল্টি-হাইফেনেট রোল মডেল’ হিসেবে দেখছেন—যিনি একইসাথে অ্যাথলিট এবং শিল্পী।
কারসন ব্র্যানস্টিন হয়তো এবার খুব বেশি দূর যেতে পারবেন না টুর্নামেন্টে। কিন্তু তিনি ইতিমধ্যেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন—
একজন নারী ক্রীড়াবিদ কি শুধুই তার দক্ষতার মাধ্যমে বিচার হয়?
না কি তার চেহারা ও শরীরের গড়ন আজও বেশি আলোচিত?
উইম্বলডনের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতায় এমন আলোচনার উঠে আসা প্রমাণ করে—খেলাধুলা এখন কেবল স্কোরলাইনের খেলা নয়, বরং সমাজ, দৃষ্টিভঙ্গি ও চ্যালেঞ্জেরও লড়াই।
আরও পড়ুন :
উইম্বলডনে পর্দা উঠল: শেষ বারের মতো ইতিহাসের মুখোমুখি জোকোভিচ
“এটা ফুটবল নয়, এটা তামাশা” — ক্লাব বিশ্বকাপে চেলসি কোচ মারেস্কার ক্ষোভ