MagnusMeltdown
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক : ২০২৫ সালের নরওয়ে চেস টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ রাউন্ডে ঘটলো এক নাটকীয় মুহূর্ত—ভারতের কিশোর গ্র্যান্ডমাস্টার এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন গুকেশ ক্লাসিকাল ফর্ম্যাটে প্রথমবারের মতো হারিয়ে দিলেন বিশ্বনম্বর ১ ম্যাগ্নাস কার্লসেনকে। ম্যাচটি শুধু চমকপ্রদ ছিল না, বরং শেষে কার্লসেন-এর প্রতিক্রিয়া (MagnusMeltdown) আরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।
ম্যাচের শুরু থেকেই কার্লসেন ছিলেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায়। তিনি দ্রুত এগিয়ে যান এবং অবস্থানগত সুবিধাও পান। কিন্তু ম্যাচের শেষ দিকে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে চাল চালাতে গিয়ে তিনি একটি মারাত্মক ভুল করেন—৫২…Ne2+ চালটি। এই ভুলটির পরেই গুকেশ দ্রুত পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করে পরাস্ত করেন কিংবদন্তি কার্লসেনকে।
এটি ছিল গুকেশ -এর ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় অর্জন। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এই জয় তার আত্মবিশ্বাস এবং কৌশলগত পরিপক্বতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
তবে এই ম্যাচের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দিক ছিল কার্লসেন এর আচরণ। পরাজয়ের পর, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কার্লসেন রীতিমতো হতাশ হয়ে নিজের হাতে বোর্ডে আঘাত করেন এবং পিসগুলো ছিটকে পড়ে যায়। এরপর তিনি হঠাৎ করে স্থান ত্যাগ করেন, যা অনেকেই খেলাধুলার স্পোর্টসম্যানশিপের পরিপন্থী বলে মনে করছেন। যদিও পরে তিনি গুকেশ -এর সঙ্গে করমর্দন করেন এবং তার জয়ের প্রশংসা করেন, কিন্তু তার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এই জয়ের ফলে গুকেশ নরওয়ে চেসে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন। ম্যাচ শেষে গুকেশ h-এর দাদা সংবাদমাধ্যমে বলেন, “তার লক্ষ্য একটাই—বিশ্বনম্বর ১ হওয়া।” এই জয়ের মাধ্যমে সেই লক্ষ্যের দিকে তিনি এক ধাপ এগিয়ে গেলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ম্যাচটি কার্লসেন-এর ক্যারিয়ারে একটি “wake-up call” হতে পারে, যেখানে অল্প সময়ের মধ্যে ভুল সিদ্ধান্ত কতটা বড় প্রভাব ফেলতে পারে তা দেখা গেছে। অন্যদিকে, গুকেশ প্রমাণ করলেন যে তিনি শুধু ভবিষ্যতের নয়, বরং বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা দাবাড়ু।
গুকেশ -এর এই জয়ে চেসপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসার জোয়ার বইছে। বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি, যেমন Mahindra Group-এর চেয়ারম্যান Anand Mahindra এবং Perplexity AI-এর CEO Aravind Srinivas টুইট করে গুকেশ -এর প্রশংসা করেছেন। Mahindra বলেন, “কার্লসেন এর রাগ আসলে Gukesh-এর অসাধারণ পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি।”
এমন এক মুহূর্তে, যখন ভারতীয় দাবা তার এক নতুন স্বর্ণযুগে প্রবেশ করছে, গুকেশ -এর এই জয় সেই আন্দোলনকে আরও গতি দিচ্ছে। Viswanathan Anand-এর পরে গুকেশ হলেন সেই মুখ, যিনি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছেন।
এই ম্যাচটি দাবা ইতিহাসে শুধু একটি জয় বা হার নয়—এটি প্রতিভা, ধৈর্য এবং মনঃসংযোগের বিজয়গাথা।
আরও পড়ুন :
আইপিএল ফাইনালের আগে বিস্ফোরণে চাঞ্চল্য! গুজরাটে মোদী স্টেডিয়ামের গেটের বাইরে আতঙ্ক
রাজ্যে প্রথম করোনা-মৃত্যুতে চাঞ্চল্য, বাড়ছে সংক্রমণ — সতর্ক রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর