PocketmaarDhoni
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক | ১১ জুন ২০২৫ : বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। ব্যাট হাতে হেলিকপ্টার শট, পিছন থেকে অধিনায়কত্বের মস্তিষ্ক এবং গ্লাভস হাতে এক দুর্ধর্ষ উইকেটকিপার—সব দিক থেকেই ধোনি এক অনন্য কিংবদন্তি। সম্প্রতি ধোনিকে আইসিসির ‘হল অব ফেম’-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সম্মান পাওয়ার পরই ভারতের প্রাক্তন কোচ ও ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য রবি শাস্ত্রী এক ব্যতিক্রমী উপমায় ধোনিকে সম্মান জানিয়েছেন। তিনি ধোনির উইকেটকিপিং দক্ষতা বর্ণনা করতে গিয়ে তুলনা করেছেন একজন পকেটমারের (PocketmaarDhoni) সঙ্গে!
রবি শাস্ত্রী বলেন,
“মহেন্দ্র সিং ধোনির হাত পকেটমারদের থেকেও দ্রুত। যদি তুমি কখনও ভারতে আসো, বিশেষ করে আহমেদাবাদে, তাহলে কখনই তুমি চাইবে না যে ধোনি তোমার পিছনে থাকুক। পিছন ফিরে তাকাতেই দেখবে, তোমার পকেট খালি!”
এটি নিছকই একটি রসিকতা হলেও, এতে ধোনির চোখধাঁধানো উইকেটকিপিং স্কিল নিয়ে শাস্ত্রীর মুগ্ধতাও ধরা পড়ে। ক্রিকেটবিশ্ব বহুবার দেখেছে, ধোনির হাতে স্ট্যাম্পিং-এর সময় বল রাখার জন্য এক সেকেন্ডও সময় নেই। ক্যামেরার স্পিডের সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারেন মাহি।
ধোনি থামছেন না! পরের আইপিএলেও চেন্নাইকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত এমএস
রবি শাস্ত্রীর এই প্রেসক্রিপশনে বদলে যাবে টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা
ধোনির মানসিক দৃঢ়তা নিয়েও প্রশংসা করেছেন রবি শাস্ত্রী। তিনি বলেন,
“ধোনির সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে, সে শুন্য রানে আউট হলেও যেমন থাকে, বিশ্বকাপ জিতলেও তেমনই থাকে। সে তার আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে—এটাই ওর সবচেয়ে বড় শক্তি।”
এই বিষয়টি ধোনিকে একজন কোল্ড-ব্লাডেড ফিনিশার ও ট্যাকটিশিয়ান হিসেবে গড়ে তুলেছে। ভারতের বহু স্মরণীয় ম্যাচে শেষ ওভারে ধোনির কুল হেডিং ক্যাপাসিটি দলকে জিতিয়ে এনেছে।
২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অভিষেকের সময় কেউ কল্পনাও করেনি যে, সেই বাইকপ্রেমী ঝাড়খণ্ডের তরুণ একদিন ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক হয়ে উঠবেন।
মহেন্দ্র সিং ধোনির নামের পাশে এখন যা লেখা থাকে:
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক
২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক
২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী অধিনায়ক
৯০ টেস্ট, ৩৫০ ওয়ানডে, ৯৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দেশের প্রতিনিধিত্ব
উইকেটকিপার হিসেবে অজস্র বিশ্বরেকর্ড
তিনি এমন একজন খেলোয়াড় যিনি মাঠে নিজের কাজ দিয়ে কথা বলতেন। আর মাঠের বাইরে সবসময় নীরব, সংযত ও নম্র থেকেছেন। শাস্ত্রীর বক্তব্যে তাই যে হালকা হাস্যরস আছে, সেটির গভীরে লুকিয়ে রয়েছে অগাধ শ্রদ্ধা।
রবি শাস্ত্রীর মন্তব্য হয়তো কিছুটা ‘পকেটমার’ বলার মতো সাহসী শোনালেও, এটিকে ক্রিকেট ভাষায় এক অসামান্য প্রশংসা হিসেবেই ধরা উচিত। একজন পকেটমারের মতো ধোনির দ্রুততা, নিখুঁত সিদ্ধান্ত আর প্রতিপক্ষের অজান্তে ‘শিকার’ করে ফেলা—এমন দক্ষতা বিশ্ব ক্রিকেটে খুব কমই দেখা গেছে।
মহেন্দ্র সিং ধোনি কেবল একজন ক্রিকেটার নন, তিনি একটা অনুভূতির নাম। আজ তিনি আইসিসির হল অব ফেমে, কাল হয়তো আরও কোনও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে উঠে আসবেন। কিন্তু তাঁর চুপচাপ, কুল-হেডেড উইকেটকিপিংয়ের কথা ক্রিকেটবিশ্ব চিরকাল মনে রাখবে।
আরও পড়ুন :