RCBChampion IPL2025Final
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক : অবশেষে ইতিহাস রচনা করল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আইপিএলের ১৮তম আসরে বারবার চেষ্টা, বহুবার হৃদয়ভাঙা স্বপ্ন— সব কিছুর অবসান ঘটিয়ে কোহলির নেতৃত্বে নয়, তবে তার দৃঢ়তা ও বিশ্বাসের জোরেই প্রথমবারের মতো ট্রফি ঘরে তুলল বেঙ্গালুরু (RCBChampion IPL2025Final )।
মঙ্গলবার রাতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে, উত্তেজনায় ঠাসা ফাইনালে ৬ রানে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো বেঙ্গালুরু। এই জয়ের মধ্য দিয়ে আইপিএলের ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘ ‘শিরোপা খরা’ শেষ করল দলটি, আর বিরাট কোহলি পেলেন স্বপ্নের সেই মুহূর্ত, যা হয়তো তিনি নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
ম্যাচ শেষে বাঁ হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন কোহলি। দুই হাতে মুখ ঢেকে, চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে ছিলেন মাঠেই। যেন তাঁর হৃদয়ের বোঝা হালকা করছিল সেই নীরবতা। এরপর আসেন সতীর্থরা, জড়িয়ে ধরেন একে একে। আর তাঁর প্রিয় বন্ধু ও বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স মাঠে নেমে এসে আলিঙ্গন করেন কোহলিকে— মুহূর্তটি হয়ে ওঠে এই আসরের সবচেয়ে আবেগঘন দৃশ্য।
বেঙ্গালুরু আগে ব্যাট করে তোলে ১৯০ রান। দলটির পক্ষে কেউই ফিফটি পাননি। কোহলির ৩৫ বলে ৪৩ রান সর্বোচ্চ, তাতে ছিল মাত্র ৩টি চার। পুরো ইনিংসেই ছিল সংগ্রামী মনোভাব, রানের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল উইকেট বাঁচানো।
সেটাই শেষ পর্যন্ত পার্থক্য গড়ে দেয়। রান তাড়া করতে নেমে একসময় ম্যাচ নিজেদের দিকেই টেনে নিয়েছিল পাঞ্জাব কিংস। শেষ ৪ বলে শাশাঙ্ক সিং মেরে ফেলেছিলেন ৩টি ছক্কা ও ১টি চার, কিন্তু তাতে জেতা হয়নি। পাঞ্জাব আটকে যায় ১৮৪ রানে।
অভিজ্ঞ স্পিনার ক্রুনাল পান্ডিয়া ছিলেন বেঙ্গালুরুর বোলিংয়ের মূল স্তম্ভ। মাত্র ১৭ রান দিয়ে ৪ ওভারে ২টি উইকেট তুলে নিয়ে তিনি হন ম্যাচ সেরা।
রাহুল দ্রাবিড়, শেন ওয়াটসন, ড্যানিয়েল ভেটোরি, ফাফ দু প্লেসি, বিরাট কোহলি— বড় বড় সব নাম ব্যর্থ হয়েছিলেন বেঙ্গালুরুকে আইপিএল ট্রফি এনে দিতে। অথচ এই বছর প্রথমবার অধিনায়কত্ব পাওয়া রজত পাতিদার, যিনি ভারতীয় ক্রিকেটে এখনো বড় কোনো নাম নন, তিনি নিজের প্রথম আইপিএল নেতৃত্বেই দলকে এনে দিলেন বহু কাঙ্খিত শিরোপা।
এটা নিঃসন্দেহে চমক। আর তার চেয়েও বড় বার্তা— বড় মঞ্চে চাপ না নেওয়া নয়, ধৈর্য ও পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ।
আইপিএলের শুরু থেকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলা একমাত্র ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। প্রায় দুই দশক ধরে বারবার হার, একের পর এক হতাশা— কখনও রানার্স আপ, কখনও লিগ পর্ব থেকে বিদায়। কিন্তু কখনও হাল ছাড়েননি তিনি।
এবার কোহলি হয়তো সবচেয়ে নীরব ছিলেন মাঠে, কিন্তু আত্মবিশ্বাসে ছিলেন অটল। তার সেই লড়াই, দলটার প্রতি আনুগত্য এবং জেদ— সব মিলে আজকের এই জয়।
আরও পড়ুন :
২৫ বছর পর পর্দায় ফিরছে ‘কিউঁকি সাস ভি কভি বহু থি’ – তুলসী ও মিহির জাদু আবার স্টার প্লাসে