UEFA SuperCup StopKillingChildren Gaza
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক: ফুটবল শুধু খেলার আনন্দই দেয় না, মাঝে মাঝে তা বিশ্ব রাজনীতি ও মানবিক বার্তাও বহন করে। গতকাল ইতালিতে অনুষ্ঠিত সুপার কাপ ম্যাচে এমনই এক আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হলো দর্শকরা। প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি) এবং টটেনহ্যামের মধ্যকার ম্যাচের আগে মাঠে প্রদর্শিত হয় একটি বড় ব্যানার (UEFA SuperCup StopKillingChildren Gaza) , যেখানে স্পষ্ট ভাষায় লেখা ছিল— “শিশু হত্যা বন্ধ করুন, বেসামরিক হত্যা বন্ধ করুন”।
এই বার্তাটি আসে এমন এক সময়ে, যখন প্যালেস্টাইনের ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদ-এর মৃত্যুর পর উয়েফা তাদের নীরব প্রতিক্রিয়ার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছিল। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ উয়েফা ব্যানারের ছবিটি শেয়ার করে জানায়, এটি যুদ্ধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান প্রদর্শন করছে।
৪১ বছর বয়সী প্রাক্তন প্যালেস্টাইনের জাতীয় দলের তারকা সুলেইমান আল-ওবেইদ দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষা করার সময় ইজরায়েলি হামলায় নিহত হন। প্যালেস্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন জানায়, তিনি মাঠে যেমন প্রতিভাবান ছিলেন, মাঠের বাইরে তেমনই ছিলেন অনুপ্রেরণাদায়ক।
উয়েফা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে স্মরণ করে লিখেছিল— “একজন প্রতিভা, যিনি অন্ধকার সময়েও অসংখ্য শিশুকে আশা দিয়েছিলেন।” কিন্তু মিশরের তারকা মোহাম্মদ সালাহ এই পোস্টের সমালোচনা করে প্রশ্ন তুলেছিলেন— “আপনি কি বলতে পারেন তিনি কিভাবে, কোথায় এবং কেন মারা গেলেন?”
গাজায় চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বহু আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থা নীরব থেকেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। “ফুটবল ফিলিস্তিন”-এর প্রতিষ্ঠাতা বাসিল মিকদাদি আল জাজিরাকে বলেন, “উয়েফা কোনো শক্ত অবস্থান নেবে বলে আমি মনে করি না। ইতিমধ্যেই ৪০০-র বেশি ফিলিস্তিনি ফুটবলার নিহত হয়েছেন, সুলেইমান তাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত মুখ।”
ক্যামেরা বিক্রি করে সন্তানদের জন্য রুটি জোগাচ্ছেন গাজার সাংবাদিক
সালাহ দীর্ঘদিন ধরে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এত দেরিতে তিনি এই বিষয়টিতে সরাসরি কথা বললেন।
এই ব্যানার প্রদর্শনের একদিন আগে উয়েফা ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন যুদ্ধক্ষেত্রের শিশুদের সহায়তার জন্য নতুন উদ্যোগের ঘোষণা করে। এই উদ্যোগে যোগ দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা মেডেসিন দ্যু মন্ড, ডাক্তারস উইদাউট বর্ডার্স এবং হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল।
উয়েফা জানিয়েছে, শুধু গাজা নয়, আফগানিস্তান, লেবানন, সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইউক্রেনের মতো সংঘাতপ্রবণ এলাকায়ও শিশুদের জন্য তারা সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছে।
খেলাধুলার মঞ্চে এই ধরনের বার্তা প্রায়ই রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এটি নিছক রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, বরং মানবিক আহ্বান। বিশ্বের কোটি কোটি দর্শকের সামনে শিশু হত্যার বিরুদ্ধে এমন স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে বিরল ঘটনা।
ফুটবলপ্রেমীদের মতে, যদিও এই পদক্ষেপ সমালোচকদের সন্তুষ্ট করতে যথেষ্ট নাও হতে পারে, তবুও এটি এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা যা খেলাধুলার সীমা ছাড়িয়ে মানবতার পক্ষে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন :
মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়ার দায়িত্বে থাকার সময় ট্রাম্পের অধীনে কাজ করেছিলেন সুস্মিতা
স্বাধীনতা দিবসে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধে ভারতের রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক