IsraelIranTensions EconomicImpact
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনার আবহে ইরানের টানা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে গিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে ইসরাইল। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, মারিভ ও অন্যান্য ইসরাইলি এবং পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিপুল খরচের (IsraelIranTensions EconomicImpact) প্রধান অংশ ব্যয় হচ্ছে ডেভিডস স্লিং, প্যাট্রিয়ট এবং আয়রন ডোমের মতো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও মিসাইল প্রতিরোধে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করতে আয়রন ডোম ব্যবস্থার ব্যয় হয় প্রায় ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ডলার পর্যন্ত। আর যদি একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন একসঙ্গে আসছে, সেই সংখ্যা বহুগুণে বাড়ে। আর সেই খরচই এখন রোজকার মাথাব্যথায় পরিণত হয়েছে ইসরাইল সরকারের কাছে।
“এই প্রতিদিনের যুদ্ধ পরিস্থিতি শুধু অর্থনীতিকেই নয়, পুরো জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে,” বলছেন এক ইসরাইলি নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্র না হলেও তেলআবিবের মতো শহরেও স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে এই নিরাপত্তা সংকটের প্রভাব। ইসরাইলি পত্রিকা মারিভ জানিয়েছে, শহরের অর্ধেকের বেশি দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। বাজার অঞ্চলগুলোতে লোকজনের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে।
WorldWarThreat : ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষে উত্তাল মধ্যপ্রাচ্য: আগামী ২৪ ঘণ্টা ভয়াবহ হতে পারে
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ক্ষেপণাস্ত্র ‘ট্রাইডেন্ট II D5’: কার হাতে আছে এই অদম্য অস্ত্র
“ফাঁকা রাস্তা, বন্ধ দোকান, আতঙ্কে মানুষ ঘরে বন্দি—এটাই এখনকার বাস্তব চিত্র,” উল্লেখ করেছে মারিভ পত্রিকার রিপোর্ট।
অর্থনীতিবিদদের মতে, তেলআবিবে ব্যবসা-ব্যবস্থার এই অচলাবস্থা ইসরাইলের জিডিপিতে সরাসরি প্রভাব ফেলছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বড় শিল্পগোষ্ঠী পর্যন্ত সবাই ক্ষতির মুখে।
যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ইসরাইলি সরকারের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সেনা খাতে বাড়তি ব্যয়, নাগরিক পরিকাঠামোয় হঠাৎ ছেদ, ও একটানা হুমকির পরিবেশে সাধারণ মানুষের ভয়-আতঙ্ক—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল।
নিরাপত্তা ব্যয় যেমন আকাশছোঁয়া, তেমনই যুদ্ধের অর্থনৈতিক অভিঘাত পড়ছে সামাজিক পরিষেবা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাত—সব ক্ষেত্রেই। সরকার যেখানে একদিকে প্রতিদিনের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যস্ত, অন্যদিকে জনসাধারণের চাপ সামলানো হয়ে উঠছে কঠিন।
ইসরাইলি সংবাদপত্র হারেৎস জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর সরঞ্জাম পুনরায় পূরণ করতে বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে দেশটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কয়েকটি আলোচনার ভিত্তিতে নতুন প্রতিরক্ষা প্যাকেজের কথাও চলছে।
যতদিন এই সংঘর্ষ চলবে, ততদিনই ইসরাইলের দৈনন্দিন আর্থিক ক্ষতির হার আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা। পরিস্থিতি শান্ত না হলে তা বৃহত্তর আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন :
ইসরায়েল-ইরান সংঘর্ষে বিশ্ববাজারে তেলের দাম লাফিয়ে বাড়ছে
“ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: ‘যুক্তরাষ্ট্র জড়াবে কি না, সিদ্ধান্ত আগামী দুই সপ্তাহে’, জানালেন ট্রাম্প”