KhameneiSuccession
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : ইসরাইল-ইরান সংঘাতের মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এবার সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের নাম চূড়ান্ত করেছেন বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। যদিও নামগুলো প্রকাশ করা হয়নি, তবে এটি এক অতি-অসাধারণ পদক্ষেপ—কারণ এখন পর্যন্ত ইরানে উত্তরসূরি (KhameneiSuccession) নিয়ে কখনও এমন প্রকাশ্য আলোচনা হয়নি।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তিনজন শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয় নেতার নাম তিনি নিজ হাতে লিখিতভাবে বিশেষজ্ঞ পরিষদের (Assembly of Experts) কাছে জমা দিয়েছেন এবং সেই তালিকা থেকেই উত্তরসূরি নির্বাচনের জন্য তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রথম বিস্ময়টি এখানেই—খামেনির পুত্র মোজতবা খামেনি, যিনি বিগত কয়েক বছর ধরে উত্তরসূরি হিসেবে গোপনে প্রস্তুত হচ্ছেন বলে বিভিন্ন গোপন রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছিল, তাঁর নাম এই তালিকায় নেই।
অনেকে এটিকে গণমান্যতা রক্ষার কৌশল বলেও ব্যাখ্যা করছেন। কারণ, ইরানের বর্তমান রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কাঠামোয় পরিবারতন্ত্রে শীর্ষ নেতৃত্ব স্থানান্তর ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়তে পারে।
ইরানের প্রেসিডেন্টের ট্রাম্পকে কঠোর বার্তা: পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে না
‘খামেনিকে আর বেঁচে থাকতে দেওয়া যাবে না’, সোরোকা হাসপাতালে ইরানের হামলার পর ইজরায়েলের সরাসরি হুমকি
খামেনির এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন সময়ে, যখন ইসরাইলি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি এবং গুরুত্বপূর্ণ কমান্ডাররা নিহত হয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমস আরও জানিয়েছে, ইরান ইতিমধ্যেই নিহত কমান্ডারদের জায়গায় নতুন মুখ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যার দায়িত্বও সরাসরি খামেনি নিজে নিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি প্রমাণ করে যে খামেনি এখন যুদ্ধকালীন ‘Survival Mode’-এ প্রবেশ করেছেন। তিনি নিশ্চিত করতে চাইছেন, তাঁর অনুপস্থিতিতেও দেশটির ধর্মীয় ও সামরিক কমান্ড কাঠামো অক্ষুণ্ন থাকে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ, ৮৬ বছর বয়সী খামেনি নিজেও বিশ্বাস করেন তিনি হত্যা প্রচেষ্টার শিকার হতে পারেন, এবং সেই ঘটনা ঘটলে তিনি “শহীদের মর্যাদা” নিয়ে মৃত্যুবরণ করবেন বলে ব্যক্তিগতভাবে ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছেন।
এই মনোভাব তাঁর সিদ্ধান্তে গভীর প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
“এটি শুধু উত্তরসূরি নির্ধারণ নয়, বরং একটি রাজনীতি ও ধর্মীয় কাঠামো রক্ষা করার চেষ্টা,” মন্তব্য করেছেন এক প্রাক্তন কূটনীতিক।
বিশেষজ্ঞ পরিষদ, যার একমাত্র কাজ হচ্ছে নতুন সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করা, তারা সাধারণত শুধু মৃত্যুর পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এবার খামেনি নিজেই জীবিত অবস্থায় সম্ভাব্য উত্তরসূরি বাছাইয়ের আহ্বান জানিয়ে নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিলেন।
এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দিচ্ছে—খামেনি এক চূড়ান্ত সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিকে সামনে রেখে ‘preemptive succession’ চালু করলেন, যা ইরানের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত।
আরও পড়ুন :
“তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দোরগোড়ায় বিশ্ব”—সেন্ট পিটার্সবার্গে হুঁশিয়ারি পুতিনের
যুদ্ধকালীন ক্ষমতা আইআরজিসির হাতে তুলে দিলেন খামেনি, গোপন বাঙ্কারে আশ্রয়ে সুপ্রিম লিডার