কোন কোন জায়গায় হামলা হয়েছে?
হামলা হয়েছে ইরানের Fordow, Natanz এবং Isfahan নামে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রগুলিকে বাংকার-ধরনের মাটির গভীরে নির্মিত সুরক্ষিত স্থাপনা বলা হয়ে থাকে।
-
Fordow: গভীর পাহাড়ের নিচে অবস্থিত গোপন প্ল্যান্ট যেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ হতো।
-
Natanz: ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যেখানে প্রচুর পরিমাণে সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে।
-
Isfahan: পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম রূপান্তর কেন্দ্র।
কীভাবে হামলা চালানো হয়েছে?
যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযানে তাদের অত্যাধুনিক B-2 স্পিরিট স্টেলথ বোম্বার ব্যবহার করেছে। Fordow-এর ক্ষেত্রে ছয়টি ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের GBU-57 “Massive Ordnance Penetrator” (MOP) বাংকার-বাস্টার বোমা ব্যবহার করা হয়েছে।
Natanz ও Isfahan-এর ওপর সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে প্রায় ৩০টি Tomahawk ক্রুজ মিসাইল।
ইরানের প্রেসিডেন্টের ট্রাম্পকে কঠোর বার্তা: পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে না
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি—“ইরান হামলা করলে পূর্ণ শক্তিতে প্রতিহিংসা”
হামলার সময় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও সক্রিয় ছিল, তবে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ইরান এখনও পুরোপুরি প্রকাশ করেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন,
“Fordow সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। আমরা আর বসে থাকবো না। ইরানকে শিখতে হবে—যদি তারা যুদ্ধ চায়, আমরা প্রস্তুত। যদি শান্তি চায়, দরজা খোলা।”
তিনি এটিকে একটি “সাফল্যময় ও নিখুঁত অভিযান” বলে বর্ণনা করেন।
ইরান এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে এবং জানিয়েছে,
“আমাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ হবে না। আমরা যথাযথভাবে জবাব দেব।”
ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডস জানিয়েছে, ইসরায়েলের কিছু সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে ১৬ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশিরভাগ হামলা প্রতিহত করেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলাকে “অত্যন্ত বিপজ্জনক” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন,
“এই ধরনের হামলা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বাড়াবে। শান্তি ও আলোচনার পথ এখনও খোলা রয়েছে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নও অবিলম্বে উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই এ ধরনের বড় আকারের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া কতটা সাংবিধানিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই হামলা কেবল শুরু—পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে হরমুজ প্রণালী, রেড সি, এবং ইয়েমেন উপকূলে নতুন নতুন সংঘর্ষ দেখা যেতে পারে।
বিশ্বব্যাপী তেল ও স্বর্ণের দাম ইতিমধ্যে লাফিয়ে বেড়েছে, শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন :
হত্যার আশঙ্কায় উত্তরসূরি বাছাই শুরু করলেন খামেনি, মোজতবা নেই সম্ভাব্য তালিকায়
“তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দোরগোড়ায় বিশ্ব”—সেন্ট পিটার্সবার্গে হুঁশিয়ারি পুতিনের